নিত্যানন্দ মহালদার বটিয়াঘাটা উপজেলা খুলনা প্রতিনিধিঃ
সরিষার বাম্পার ফলনে বটিয়াঘাটার কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা যাচ্ছে। সরিষার হলুদ ফুলে সেজেছে বটিয়াঘাটা উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল। যেন গায়ে হলুদের সমারোহ। উপজেলার দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠে এমনই চিত্র দেখা যাচ্ছে অহরহ। সরিষা ফুলের বাতাসে দোলা দিচ্ছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। চারিদিকে শুধু হলুদের সমারোহ আর মৌ মৌ গন্ধ। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে উপজেলায় এবার সরিষার আবাদ হয়েছে ৩৬৫ হেক্টর জমিতে যা গত বছরের চেয়ে ১০৫ হেক্টর বেশি। এর মধ্যে বিনা চাষে হয়েছে প্রায় ৫০ হেক্টর জমিতে। এ উপজেলায় বিনা সরিষা ৯,৭,১১ এবং বারি সরিষা ১৪ জাতের চাষ হয়েছে। তবে এর মধ্যে বেশিরভাগই চাষ হয়েছে বারি সরিষা ১৪ জাতের। উপজেলার অধিকাংশ চাষীরা বলছে এবার সরিষার যে ফলন হয়েছে তাতে আমরা বিঘা প্রতি ১২-১৫ হাজার টাকা লাভ করতে পারবো। কারণ এতে সার ও সেচ খরচ কম লাগে এবং সময় ও ঝুঁকি কম। কৃষি বিভাগ বলছে সরিষা চাষীদের সর্বাত্মক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যার জন্য বটিয়াঘাটার মাটিতে এবার সরিষা চাষের বিপ্লব ঘটেছে। কৃষকেরা এখন সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ছে। পার্শ্বেমারী গ্রামের শেখ রাসেল এবং রামপ্রসাদ রায় জানান, আমরা কৃষি বিভাগ থেকে প্রনোদনার বীজ ও সার পেয়ে এবার প্রথম ঘেরের পাড়ে প্রায় ৩৫ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি এবং আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সরদার আব্দুল মান্নান স্যার সব সময় আমাদের পাশে থেকে পরামর্শ দিয়েছেন বলে ভালো ফলন পেয়েছি। ফুলতলা ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দীপন কুমার হালদার বলেন, আমাদের প্রচেষ্টায় কৃষকেরা আমন ধান সংগ্রহের পর জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষ করছেন এর পর আবার বোরো ধান রোপণ করতে পারছেন। এতে একই জমিতে বছরে তিন ফসল উৎপাদন হচ্ছে। এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ আবুবকর সিদ্দিক দেশ চ্যানেলকে বলেন, ভোজ্য তেলের আমদানিনির্ভরতা কমাতে সরিষাকে বিকল্প হিসেবে দেখছে সরকার। এজন্য ফসলটির উৎপাদন বাড়াতে আমরা এবার কৃষি অফিস থেকে প্রনোদনার মাধ্যমে ১৮০০ বিঘা সরিষার বীজ ও রাসায়নিক সার চাষীদের দিয়েছি। আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে সরিষার উৎপাদন বাড়িয়ে দেশে ভোজ্য তেলের আমদানিনির্ভরতা এক তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, প্রচলিত দেশি সরিষার চেয়ে বারি ও বিনার উদ্ভাবিত সরিষার জাতগুলোর ফলন বেশি। এ কারণে এতে চাষিরাও আগ্রহী হচ্ছেন। আশা করছি আগামীতে আবাদ আরও বৃদ্ধি পাবে।