বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
সারা বছর যেমন তেমন বর্ষা মৌসুম আসলেই যেন সড়ক মেরামত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাথে ওয়াসা প্রকল্পের কাজের যেন ধুম লেগে যায়। ফলে নগরবাসীর জীবন অন্তহীন দুর্দশার মধ্য দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পথ চলাচল করতে হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিকল্পিত কাজের পরিকল্পনামাফিক কোন অগ্রগতি নাই বলে নগরবাসীর অভিযোগ।
বিশেষভাবে বলা যেতে পারে খুলনা নগরীর ৩১ টি ওয়ার্ডের ৩৬ টি সড়ক এখন সাধারণ জনগণের সীমাহীন চরম দুর্ভোগের বাস্তব চিত্র।
নগর উন্নয়নের নামে কোথাও চলছে ড্রেন মেরামত কোথাও সড়ক আবার কোথাও ওয়াসা প্রকল্পের কাজ উল্লেখিত ওই সকল প্রকল্পের নিয়োজিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানদের পরিকল্পনাহীন কর্মকান্ড এবং সম্পূর্ণ কাজ শেষ না করতেই কৌশলগতভাবে প্রকল্পের নামে বরাদ্দকৃত অর্থ নগর ভবনের দায়িত্ববান কর্তাদের ম্যানেজ করে কোষাগার থেকে প্রকল্পের সম্পূর্ণ বাজেট উত্তোলন করে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, এবং এই অভিযোগের সত্যতায় প্রমাণে উদ্ঘাটন হয়েছে ঠিকাদারী মালিকরা সম্পূর্ণ বাজেট কাজ শেষ করার আগেভাগে হাতিয়া নিয়ে অন্য খাতে খরচ করে লাভবান হচ্ছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মালিকেরা।
পরে চলমান প্রকল্পের ক্ষেত্রে অর্থ সংকটের কারণে সীমিত জনবল নিয়োগ এর মাধ্যমে ধীরগতি কাজের জন্য অন্তহীন যন্ত্রণা ভোগ করছেন নগরীর ৩১ টি ওয়ার্ডের বসবাসরত সাধারন মানুষ, আর এতে কোনো মাথাব্যথা নাই প্রকল্পের সংশ্লিষ্টকর্তাদের উদাস মনোভাব আর তদারকির গাফিলতি যেন থেকেই যাচ্ছে সকল কাজের ক্ষেত্রে।
ফলে নিরুপায় এখন নগরবাসী সহ্য করতে হচ্ছে চলাচলের অসহনীয় দুর্ভোগ, কারণ প্রতিটি মহল্লায় সড়ক ড্রেন ওয়াসার উন্নয়নমূলক কাজের অজুহাত দেখিয়ে রাস্তা বন্ধের নোটিশ লাগিয়ে কোথাও ড্রেনের পচা দুর্গন্ধ কাঁদা তুলে জন চলাচলের রাস্তা জুড়ে ইট বালু খোয়া ময়লা কাঁদার স্তুুপ জমিয়ে রাখার কারণে প্রতিটি মহল্লার সড়ক সংকীর্ণ হচ্ছে ফলে ওই সকল সড়ক দিয়ে যান চলাচল তো দূরের কথা সাধারণ মানুষদের পায়ে হেটে পথ চলাটাই দুষ্কর হয়ে পড়েছে আর এই চিত্র শুধু নগরীর দুই একটি মহল্লায় সীমাবদ্ধ নয় ৩১ টি ওয়ার্ডের ৩৬ টি সড়ক রয়েছে বেহাল অবস্থায় এক্ষেত্রে প্রত্যক্ষভাবে দেখা গেছে কোন এলাকায় চলছে খানাখন্দর ভাঙাচোরা সড়ক মেরামতের কাজ কোন এলাকায় চলছে ড্রেন মেরামতের কাজ আবার কোথাও কোথাও চলছে ওয়াসা প্রকল্পের কাজ। আর উল্লেখিত সকল কাজের ক্ষেত্রে জন চলাচলের সড়ক খুঁড়াখুঁড়ি ছাড়া বিকল্প কোন পন্থাই তাদের জানা নাই। আর এই সকল দুর্ভোগের মধ্য আবার প্রতিদিন হচ্ছে বর্ষা ফলে বর্ষার পানি জমে সাধারণ জনগণের চলাচলের ক্ষেত্রে প্রতিটি সড়ক সামান্য বৃষ্টির অল্প পানিতে তলিয়ে সড়ক হচ্ছে তখন মরণ ফাঁদ। জনগণের এত ভোগান্তির মধ্যেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সম্ভুগ গতিতে নগরীর বিভিন্ন মহল্লার বসবাসরত জনগণের অভিযোগে এমনও কথা উঠে এসেছে মাত্র ৩৮০ মিটার ড্রেন সংস্কার করতে সাধারণ জনগণের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে দীর্ঘ তিন থেকে চার মাস। নগরীর এ সকল অসহনীয় কর্মকাণ্ড সহ্য করতে না পেরে অধিকাংশ নগরবাসী জোরালোভাবে অভিযোগের ভাষায় খুলনা সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বরত প্রধান কর্তাকে দায়ী করে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশে নির্বাচিত সরকার না থাকার কারণে যে যেমন খুশি তেমনভাবেই কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে অথচ বর্তমানে নগর ভবনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তা ক্ষমতা বুঝে নেওয়ার সময় বলেছিলেন এখন সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থাকবে না ফ্যাসিস্টদের কোন পদচারণা নাই ফলে সর্বক্ষেত্রে জনগণ থাকবে স্বাচ্ছন্দে আয়েসে আমাদের পক্ষ থেকে সকল সুবিধা পাবে নগরবাসী খুলনা হবে দেশের অন্যতম রোল মডেল তিলোত্তমা নগরী রুপসা ভৈরব নদীর কোল ঘেঁষে বয়ে চলা খুলনাকে সাজান হবে অন্যরকম অপরূপ সাজে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে স্বাচ্ছন্দে বসবাস করবে ৩১ টি ওয়ার্ডের সকল শ্রেণীর মানুষ। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নগরভবনের দায়িত্বরত কর্তাদের ভাষ্য নগরির সড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ২০০ কোটি টাকা গত দুই ছরের নগরের অভ্যন্তরীণ ৮০ টি সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয় ঠিকাদারী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে চলমান বছরের ফেব্রুয়ারি মার্চ মাসে এগুলোর কার্যাদেশ দেওয়া হয় এর মধ্যে ২৯ টি সড়কের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে প্রশাসনিক কিছু জটিলতার কারণে ১১ সড়কের কাজ শুরু করা যায়নি। আর শুরুহয়েও মাঝ পথে এসে থমকে গেছে ৪০ টি সড়কের কাজ। তাছাড়া স্থানীয় সূত্র বলছে নগরের উল্লেখযোগ্য বেশ কিছু সড়কের কাজ শুরু হয়েছিল গত বছরের প্রথম নাগাদ কিন্তু আজ পর্যন্ত প্রায় দেড় বছর অতিবাহিত হলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ধীরগতি কাজের কারণে চলমান কাজ অর্ধেক ও সম্পন্ন হয়নি। উপরন্ত কাজের ক্ষেত্রে সড়ক খুঁড়েও ড্রেনের নোংরা মাটি তুলে এবং সড়ক জুড়ে মিক্সার মেশিন ডাম্পার সহ অসংখ্য মেশিনারিজ রেখে জনচলাচলের ভোগান্তি সৃষ্টি করছে।
তবে সিটি কর্পোরেশনের ভাবপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী নাগরিক ভাবনাকে বলেছেন চলতি বছরের অক্টোবর নভেম্বরের মধ্য যদি সকল প্রকল্পের কাজ শেষ না করে সে ক্ষেত্রে ওই সকল ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।