হাফিজুর রহমান( বাউফল) প্রতিনিধি।
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে স্থানীয় এক জামায়েত নেতার বিরুদ্ধে এক গৃহবধূকে শ্লীলতাহানি ও হত্যাচেষ্টার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। নিজের সম্ভ্রম রক্ষায় পুকুরে ঝাঁপ দিয়েও শেষ পর্যন্ত রক্ষা পাননি ওই নারী। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী মো. আক্কাস মুন্সী অভিযোগ করে জানান, নাজিরপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড জামায়েতের সভাপতি মো. শুভ ও তার সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে তার স্ত্রীকে লাঞ্ছিত করেন।
ভুক্তভোগী নারীর মা মোসা. মাহিনুর বেগম বলেন, অভিযুক্ত মো. শুভর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তাদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। শনিবার সকালে শুভ বিরোধপূর্ণ জমিতে ঘাটলা নির্মাণ করতে গেলে তার মেয়ে বাধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্তরা তাকে জাপটে ধরে শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে জোরপূর্বক স্পর্শ করার চেষ্টা করে। নিজের সম্ভ্রম বাঁচাতে তার মেয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিলে অভিযুক্ত শুভ পুকুরে নেমেও একই আচরণ চালায়। এ সময় তার সালোয়ার ও জামা ছিঁড়ে ফেলা হয় এবং একপর্যায়ে তাকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ঘটনার সময় আরও কয়েকজন জামায়েত কর্মী ঘটনাস্থলে পাহারা দিচ্ছিলেন বলেও দাবি করেন ভুক্তভোগীর মা।
তিনি আরও বলেন, মেয়ের চিৎকার শুনে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে তাকেও বেধড়ক মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় মা ও মেয়েকে উদ্ধার করে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. নুরজাহান বেগম জানান, ভুক্তভোগী গৃহবধূ ও তার মা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন এবং গৃহবধূর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তাদের শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনায় নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে দুজনের অবস্থাই স্থিতিশীল।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত মো. শুভ সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “যদি কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণে আমাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়, আইন যে শাস্তি দেবে তা মাথা পেতে নেব।” তবে তিনি জামায়েতের কোনো দায়িত্বশীল পদে আছেন কি না—এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা জামায়েত ইসলামীর সেক্রেটারি মো. খালিদুর রহমান বলেন, “তিনি কোন পদে আছেন তা আমার জানা নেই। ইউনিয়ন কমিটির কাগজ আমার কাছে আছে, ওয়ার্ড কমিটির নেই। এমন কোনো ঘটনার বিষয়েও আমি অবগত নই।”
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, “ঘটনার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

