মশিউর মিলন, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর বাউফলের কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদের উপনির্বাচনে জাল ভোট প্রদানের উদ্যেশ্যে বুথে প্রবেশ করার অপরাধে আটক হওয়া একজন নারী ও একজন কিশোরীকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। শনিবার (৯মার্চ) ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড পশ্চিম কেশবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিকেলে এই ঘটনা ঘটে। এই তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে একজন সাংবাদিককে কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জাল ভোটার শনাক্ত করার অপরাধে ঘোড়া প্রতিকের পোলিং এজেন্ট মো. রাকিব খানকে লাঞ্ছিত করারও অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ও পল্লী উন্নয়ন অফিসের প্রকল্প কর্মকর্তা তুরাল প্রামাণিকের বিরুদ্ধে।
ঘোড়া প্রতিকের পোলিং এজেন্ট মো. রাকিব খান অভিযোগ করেন, ৭/৮ জন ব্যক্তিকে পিতা-মাতার নাম জিজ্ঞেস করলে তারা আতঙ্কিত হয়ে ভোট না দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কয়েকজন পালাতে সক্ষম হলেও দুজনকে আটক করতে সক্ষম হয় দায়িত্বরত অফিসাররা। পরে ভোটার তালিকা যাচাই করলে দেখা যায় একজন নারী আগেই ভোট দিয়েছেন একবার। আরেকজনের নামই নেই ভোটার তালিকায়। পরবর্তীতে আমি তাদেরকে গ্রেফতারের অনুরোধ জানালে দায়িত্বরন প্রিজাইডিং অফিসার ক্ষিপ্ত হয়। আমাকে বলে তুমি পরিবেশ নষ্ট করছো। এতে পরিস্থিতি খারাপ হবে কেন্দ্রের। একপর্যায়ে সে আমাকে ধাক্কা দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী মোসা. মালা বেগম বলেন, কেন্দ্রের ভিতরে তিনজন জাল ভোটারকে ঘোড়ার লোকজন ধরে ফেলে এবং তাদের অফিসারদের হাতে তুলে দেয়। পরবর্তীতে অফিসাররা তাদের গ্রেফতার না করে ছেড়ে দেয়। জাল ভোটারদের কেনো ছেড়ে দেয়া হলো, আমরা জানতে চাই।
এরআগে জাল ভোটার ধরায় পোলিং এজেন্টকে লাঞ্ছিত করা এবং জাল ভোটার আটক করার বিষয় জানতে পেরে মুঠোফোনে প্রিজাইডিং অফিসার তুরাল প্রামাণিকের কাছে মুঠোফোনে প্রশ্ন করলে তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিককে জানান, ‘ওই পোলিং এজেন্টকে মারধর করা হয়নি, আমি সেখানে সার্বক্ষণিক ছিলাম। আর একজনকে নিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি ভোট দিতে পারেনি। অভিযোগ পাওয়ায় তাকে ভোট দিতে দেয়া হয়নি।’ জাল ভোটারকে আটক করার বিষয় বললে তিনি বলেন, আটক করেছি।
পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে গিয়ে একজনকেও আটক না করে বরং তিনজন জাল ভোটারকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগের বিষয় প্রিজাইডিং অফিসারের সাথে সরাসরি কথা বলতে ওই সাংবাদিক ভোট কেন্দ্রের ভিতরে তার রুমে যাওয়ার চেষ্টা করে। পথিমধ্যে তাকে বাধা দেয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বাউফলের সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) প্রতীক কুমার কুন্ডু। সাংবাদিক তাকে ঘটনা বলে ভিতরে যেতে চাইলেও তিনি সাংবাদিককে ভিতরে যেতে বাধা দেয়৷ তখন জাল ভোটার ছেড়ে দেয়ার বিষয় জানতে চাইলে অনরেকর্ড কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন তিনি। পরবর্তীতে বারবার চেষ্টা করেও এ বিষয়ে তার মন্তব্য জানা যায়নি।
সাংবাদিককে তথ্য সংগ্রহে বাধা প্রদানের ঘটনাটি প্রত্যক্ষ করেন দৈনিক কালবেলা, আজকের দর্পণ, মতবাদ পত্রিকাসহ একাধিক গণমাধ্যমকর্মী ও স্থানীয়রা।