ঢাকাSaturday , 15 February 2025
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অভিযোগ
  4. অর্থনীতি
  5. আইন আদালত
  6. আটক
  7. আন্তর্জাতিক
  8. আবহাওয়া
  9. ইতিহাস
  10. কবিতা
  11. কুষ্টিয়া
  12. কৃষি
  13. খুন
  14. খেলাধুলা
  15. চাকুরী
আজকের সর্বশেষ সবখবর
  • বিজ্ঞাপন

    বিজ্ঞাপন

  • বাগেরহাটের কৃতি সন্তান ড. মোঃ ফরিদুল ইসলাম বাবলুর পদোন্নতিতে ঘুচল ১৯ বছরের বঞ্চনা।

    দেশ চ্যানেল
    February 15, 2025 1:31 pm
    Link Copied!

    হারুন শেখ বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি

    ১/১১ এর সময় ভুয়া অভিযোগে তদন্তের মুখোমুখি হন। কঠিন সেই সময়ে টাস্কফোর্স তদন্তে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো প্রমাণ মেলেনি। কিন্তু এরপরও রেহাই পাননি ড. মো. ফরিদুল ইসলাম। ১১৩ম বিসিএসের এই প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রথমদফা তদন্তে নথিজাতকৃত বিষয়ে দ্বিতীয় দফায় তদন্ত শুরু হয়। দীর্ঘদিন চলে সেই তদন্ত। কোনো অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এবার তাকে লিখিতভাবে তদন্ত থেকে ‘অবমুক্ত’ করা হয়। ফরিদুল ইসলাম এরপরও খুব একটা স্বস্তিতে থাকেননি। সচিব পদে পদোন্নতি পেতে তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৯টি বছর!

    ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জনপ্রশাসন থেকে অবসরে যাওয়া সাবেক ৭৬৪ জন কর্মকর্তাকে গত ৯ ফেব্রুয়ারি ‘ভূতাপেক্ষ’ পদোন্নতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। উপসচিব থেকে সচিব পর্যন্ত এই পদোন্নতি দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ১১৯ জন সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। এর মধ্যে কেউ ১৬ বছর পদোন্নতি পাননি, কেউ পাননি ১৯ বছর। তাদেরই একজন ফরিদুল ইসলাম।

    বাগেরহাটের সন্তান ফরিদুল ইসলামের সততার গল্প মুখেমুখে ফেরে মন্ত্রণালয়ে। আর নিজ এলাকার মানুষের কাছে তিনি উন্নয়নের কারিগর হিসেবে পরিচিত। বাবার নামে গড়ে তুলেছেন লতিফ মাস্টার ফাউন্ডেশন নামের একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠন। পৈতৃকসূত্রে পাওয়া সব সম্পদ তিনি ও তার ভাইবোনেরা দান করেছেন সেই ফাউন্ডেশনে। তার গ্রাম ও আশপাশের অঞ্চলে এই ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বে চলছে মানবিক, সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের এক মহাআয়োজন। এতিম ও বৃদ্ধদের জন্য গড়ে তুলেছেন আধুনিক নিবাস। সেখানে আপনি পা রাখলে মনে হবে কোনো সুসজ্জিত হোটেলে প্রবেশ করেছেন।

    বাগেরহাটের বেশরগাতী গ্রামে অবস্থিত লতিফ মাস্টার ফাউন্ডেশনে গিয়ে এই প্রতিবেদক দেখেছেন, বেকারদের জন্য তিনি গড়ে তুলেছেন ট্রেনিং সেন্টার। প্রবীণদের জন্য থেরাপি সেন্টার। ঠিক সামনেই বিশাল মসজিদ। পাশে বড় খেলার মাঠ। রয়েছে বিনামূল্যে ড্রাইভিং শেখানোর ব্যবস্থা। গড়ে উঠবে মার্কেটিং ফ্যাসেলিটিসহ দোকানঘর। সহজ যাতায়াতের জন্য হচ্ছে প্রশস্থ রাস্তা। পানির সংকট স্থায়ীভাবে মেটাতে চলছে ওয়াটার প্ল্যান্টের পরিকল্পনা। এখন পর্যন্ত এর সবকিছুই হচ্ছে তার ও তার পরিবারের নিজস্ব অর্থায়নে।

    মেধা ও চেষ্টার সর্বোচ্চ ব্যবহার: ফরিদুল ইসলাম ছেলেবেলা থেকেই দারুণ মেধাবী। মাস্টার্স ডিগ্রির ইন্টারভিউর সময়ই খবর পান ১১তম বিসিএসে চাকরি হয়েছে। চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগেই ১ম শ্রেণি পেয়ে এম.এস.সি (এগ্রিকালচার) ডিগ্রি অর্জন করেন।

    সেই দিনগুলোর কথা স্মরণ করে ফরিদুল ইসলাম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হবার প্রস্তাব ছিল। স্বপ্ন ছিল পিএইচডি করার। কিন্তু আমার পরোলকগত বাবার ঐকান্তিক ইচ্ছায় প্রশাসন ক্যাডারে যোগদানের কারণে তখন তা আর হয়ে ওঠেনি।”

    ফরিদুল ইসলাম আইন পেশায়ও ডিগ্রি নিয়েছেন। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার এসি ল্যান্ড হিসেবে কর্মরত থাকার সময় টাঙ্গাইল কলেজ থেকে এলএলবি (প্রথম পার্ট) পাশ করেন।

    বদলি হয়ে পরে ঢাকা ডিসি অফিসে যোগদান করলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি নিয়ে মিরপুর ল-কলেজ থেকে পার্ট-২ পরীক্ষায় পাশ করে এল.এল.বি ডিগ্রি পান। ইতিমধ্যে Australian Aid এর অধীনে মাস্টার্স করার জন্য মনোনীত হন। ফরিদুল ইসলাম জানান, তখনকার চাকুরিস্থল থেকে মাস্টার্সে পড়ার অনুমতি না পাওয়ায় ঐ কোর্সে যেতে পারেননি। তখন রাত্রিকালীন এমবিএ-তে ভর্তি হন এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশন্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ (মার্কেটিং) ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়া তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে পাবলিক পলিসিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করেন। পাশাপাশি
    লন্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে পাবলিক পলিসিতে উচ্চতর প্রশিক্ষণসহ দেশ-বিদেশে বহু প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন।

    পরবর্তীতে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ে পিএইচডি স্কলারশিপ এর জন্য আবেদন করলে জাইকার অর্থায়নে ৪ বছরের স্কলারশিপ পান। কিন্তু আবারো চাকুরিস্থল থেকে অনুমতি না দেয়ায় তার যাওয়া হয়নি।

    ফরিদুল ইসলাম বলেন, “পিএইচডি করার আগ্রহ অটুট থাকায় পরবর্তীতে লিয়েনে একটি বিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠানে যোগদান করি এবং সেখান থেকে সরকারের অনুমতি নিয়ে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি কোর্সে ভর্তি হই। ২০০৭-০৮ সেশনে পরিবেশ বিষয়ে উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগে গবেষণা কাজ যথারীতি শুরু করি। পরিবেশ বিষয়ে একটা সেমিনারও শেষ করি। তখন বহুল আলোচিত ১/১১ দেশে নাজিল হয়। সে গল্প অনেক লম্বা। ভুয়া অভিযোগে টাস্কফোর্স তদন্তে আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তা নথিজাত করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি মনোনয়নে পাবলিক পলিসি (Public Policy) এর উপর ডিপ্লোমা ডিগ্রি অর্জন করি।”

    “শত প্রতিকুলতার মাঝেও পরিবেশ বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে থাকি। এরই মধ্যে আমার বিরুদ্ধে ১/১১ সময়ে প্রথম দফা তদন্তে নথিজাতকৃত বিষয়ে পুনঃরায় ২য় দফা তদন্ত শুরু হয়। আবারো দীর্ঘদিনব্যপি তদন্তে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় একই অভিযোগ পুনঃনথিজাত করে আমাকে লিখিতভাবে তদন্ত থেকে অবমুক্ত করা হয়। এই সময়ে হঠাৎ হাতে পাই আমার লিয়েন বাতিলের চিঠি। আমি ঐ চিঠিটিকে আমার পিএইচডি করার বাধা মনে করে মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগে রীট মামলা দায়ের করি এবং মাননীয় আদালত ঐ চিঠির কার্যকারিতা স্থগিত করে দেন।”

    ফরিদুল ইসলাম জানান এরপর একান্ত বাধ্য হয়ে প্রশাসন ক্যাডারের মূল চাকরিতে ফিরে আসেন, “সেই সময় থেকে অদ্যাবধি সরকারি নিয়মনীতি অনুসরন করে বিধি মোতাবেক চাকুরি করছি। বিপিএটিসি ও সিংগাপুরে অনুষ্ঠিত সরকারি প্রশিক্ষণ MAAT-1 এ পর্যাপ্ত যোগ্যতা অর্জন করায় MAAT-2 এ মনোনিত হয়ে London Wolver hampton Universityতে পড়াশোনা করার সুযোগ পাই। তবে প্রয়োজনীয় সকল যোগ্যতা থাকা স্বত্ত্বেও পদোন্নতির জন্য যোগ্য বিবেচিত হই নাই বিধায় আমাকে সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবেই চাকুরী জীবন প্রায় শেষ করতে হচ্ছিলো।”

    “এত কিছুর মধ্যেও পিএইচডি করার আগ্রহটি জাগ্রত ছিল বিধায় কয়েক বছর আগে American Independent University, Los Angeles, USA তে ভর্তি হই। দীর্ঘ তিন বছর গবেষণা কাজে লিপ্ত থেকে অবশেষে Public Administration (Major) এর অধীন Local Government (Minor) বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করি।”

    ফরিদুল ইসলাম ১১ বিসিএস ফোরামের সভাপতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমী (সাবেক আগারগাঁও কলেজ) এর সভাপতি, এবং বিসিএস প্রশাসন সমিতি, বিসিএস কর্মকর্তাদের জন্য গঠিত প্রত্যাশা সমবায় সমিতি, বাগেরহাট ডায়াবেটিস সমিতি, বাগেরহাট ফাউন্ডেশন, লতিফ মাস্টার ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ও নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন।

    বর্ণাঢ্য এই জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে নতুন প্রজন্মের উদ্দেশ্যে ফরিদুল ইসলাম বলেন, “জীবনের শেষ প্রান্তে এসে মনে হয় কেউ যদি নিজের ইচ্ছায় আর স্বপ্নে অটুট থাকে, সৎভাবে সে যদি সেই স্বপ্নের পেছনে ছুটতে থাকে, তাহলে কোনো কিছুই তাকে আটকাতে পারে না। আমাকে আটকাতে একসময় রাষ্ট্রযন্ত্র সব চেষ্টাই করেছে। দীর্ঘদিন তদন্ত করেছে। কখনো নাজেহাল করেছে। কিন্তু দিন শেষে সততা, দক্ষতা আর নীতিতে অবিচল কর্মনিষ্ঠার কাছে কোনো কিছুই আমাকে লক্ষ্য থেকে পিছপা করতে পারেনি।

    ফরিদুল ইসলাম বলেন, “আমি জীবনের এই অমোঘ শিক্ষা পেয়েছি আমার বাবার থেকে। নিজের নামে কোনো সম্পদ গড়ার ভাবনা কিংবা লালসা কখনো আমার আসেনি। বাকি জীবনে আসবেও না। এই দেশ আর দেশের মানুষের জন্য নিজের সবকিছু উৎসর্গ করেছি। এতেই আমার সুখ।”

    এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
  • Design & Developed by: BD IT HOST