মো:আছিফ মল্লিক
জেলা প্রতিনিধিঃ
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় সম্পত্তির দাবিতে বাবা ভাইকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম ও ভাতিজাকে পিটিয়ে কাধের হাড় ভেংগে দিয়েছে মনিরুজ্জামান ও তার পরিবারের সদস্যরা। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার ৫নং ধাওয়া ইউনিয়নের ২নং নলকাটা গ্রামের আব্দুল খালেক ফরাজির বাড়িতে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, আব্দুল খালেক ফরাজি (৮৩) দীর্ঘদিন যাবত তার প্রথম পরিবার ও দ্বিতীয় পরিবার নিয়ে পাশাপাশি দুইটি পাকা বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন। তিনি দ্বিতীয় পরিবারবর্গের মাঝে বার্ধক্য জীবনযাপন করতেন। বুধবার সকালে ঐ বাড়ির পরিবারের সদস্যরা বাড়িটির সামনের অংশে সম্পত্তির দাবি করেন এবং বিবাদে লিপ্ত হন। এসময় দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে সপরিবারে হামলা করেন তারা।
হামলাকারীরা হলেন, মো. মনিরুজ্জামান ফরাজি (৫২), মো. খাইরুল ইসলাম সিহাব (২২), মোসা. জেসমিন বেগম (৪২), মো. এমারুল ফরাজি (৪০), মো. আলমগীর ফরাজি (৫৫), রওশন আরা বেগম (৪২) ও মোসা. ফাতিমা আক্তার (২০)।
আহতরা হলেন, আব্দুল খালেক ফরাজি (৮৩), মো. জাহিদুল ইসলাম (৪২), মো. ইয়াসিন আরাফাত (১৭), তাহুরা আক্তার (২২), মোসা. দুলু বেগম (৩৫), মো. বেলাল সিকদার (৩৫), মো. হাসান সিকদার (২৮) ও মো. রায়হান হাওলাদার (২২)।
আহত খালেক ফরাজির ছেলে মো. আরিফুল ইসলাম জানান, পাশাপাশি বসবাস করে আসলেও সৎভাই মনিরুজ্জামান এর পরিবারবর্গের সাথে দীর্ঘদিনের দূরত্ব তাদের। তারা দীর্ঘদিন যাবত এই বাড়িতে সম্পত্তির দাবি করে আসছিলেন এবং একাধিকবার গ্রাম আদালতের মাধ্যমে স্থানীয় সালিশ বৈঠকের আয়োজন করেন। পরে গ্রাম আদালতের সিদ্ধান্ত অমান্য করিয়া বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘদিন পর বিজ্ঞ আদালত মনিরুজ্জামানকে দেওয়ানী আদালতের সরনাপন্ন হইতে নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু তিনি আদালতের নির্দেশ অমান্য করিয়া পুনরায় গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করেন এবং সেই সালিশের সিদ্ধান্ত অমান্য করিয়া আমাদেরকে অহেতুক হয়রানি করে আসছিলেন। বুধবার সকালে তারা হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সপরিবারে আমাদের উপর ঝাপিয়ে পরেন। এ সময়ে আমার বৃদ্ধ বাবা, ভাই ও ভাতিজাকে মাথা ও মুখমন্ডল সহ এলোপাথাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেন। তারা বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের এ অবস্থা দেখে আমি জীবন বাঁচানোর জন্য কোনোভাবে পালিয়ে রক্ষা পাই এবং জাতীয় সহায়তা কেন্দ্র ৯৯৯ এ কল করে থানা-পুলিশের সহযোগিতা চাই। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভান্ডারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসিকুজ্জামান জানান, আমরা সংঘর্ষের খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রণে আনি ও আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসি। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে ২জনকে আটক করা হয়েছে এবং বাকি আসামীদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত আছে।