ভেড়ামারা প্রতিনিধি –
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য জমি দানকারীদের কে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকগণসহ ভেড়ামারা বাসী।
ভেড়ামারা বাসীর বহুদিনের প্রতীক্ষিত স্বপ্ন পূরণে ভেড়ামারায় হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা কল্পে নির্ধারিত জায়গা দান করেছেন কুষ্টিয়া ভেড়ামারার কৃতি সন্তান বিশিষ্ট শিল্পপতি সমাজ সেবক দানবীর একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু তাহের সাহেব ও তার পরিবার।
জমি দাতাদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে কলেজটির নামকরণ করা হয়েছে – ” আবুল কাশেম হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও সাহার বানু হাসপাতাল “। কলেজের নির্ধারিত স্থান :- বাহিরচর, মসলেমপুর, ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া।
উল্লেখ আবুল কাশেম প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু তাহের সাহেব এর বড়ভাই। তিনি ও তার কর্মজীবনের পাশাপাশি একজন হোমিওপ্যাথিক প্র্যাকটিশনার ছিলেন। হোমিওপ্যাথি কে ভালবেসে তার পরিবার দ্বয় মিলে জায়গা দান করেছেন।
আবুল কাশেম হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও সাহার বানু হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও ভেড়ামারা অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি লায়ন ডাঃ কামরুল ইসলাম মনা বলেন, এতদিন জায়গার অভাবে ভেড়ামারায় হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা মুখ থুবড়ে পড়েছিল। জায়গাটুকু পাওয়ায় কলেজটি প্রতিষ্ঠার অন্তরায় দুর হলো। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হলে এলাকাবাসীর বেকারত্ব দূরীকরণে এবং স্বাস্থ্যসেবায় উক্ত প্রতিষ্ঠান নিবেদিত ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। আমরা তাদের উভয় পরিবারের কাছে চিরঋণী। আল্লাহ তাকে সহ তার পরিবারের সকলকে দীর্ঘ নেক হায়াত এবং সুস্থতা দান করুন। আমিন।
তিনি আরো বলেন, তরুণ প্রজন্ম এবং ভেড়ামারা বাসীসহ সবার জ্ঞাতার্থে প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু তাহের সাহেবের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরার চেষ্টা করছি:-
বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু তাহের ১৯৪৭ সালে ভেড়ামারা উপজেলার চরদামুকদিয়া গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা-হাজী নিয়ামত উল্লাহ, মাতা-কফেজান্নেসা।
তিনি ১৯৬৯ সালে পশ্চিম পাকিস্তান প্রকৌশল
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যন্ত্রকৌশলে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। প্রকৌশলী আবু তাহের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে কলকাতা থেকে প্রথম ‘সাপ্তাহিক দাবানল’ পত্রিকা প্রকাশ করেন। পরবর্তী সময়ে ‘DHAKA TIMES’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন।
প্রকৌশলী আবু তাহের দেশের স্বনামধন্য শিল্প সংস্থা ফরচুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান। প্রথম সারির বিমা কোম্পানি পিপলস ইনস্যুরেন্স এবং লিজিং কোম্পানি, ইউনিয়ন, ক্যাপিটালের একজন পৃষ্ঠপোষক। তাছাড়া তিনি বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন, কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ, আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজসহ বহু গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের সাথে
জড়িত।
তিনি বিজিএমইএ-র সদস্য হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানি করার জন্য প্রতিনিধিত্ব করেন। ফলে গার্মেন্টস শিল্পে একটি শক্ত ভীত তৈরি হয়েছে এবং অসহায় অবহেলিত মহিলাদের চাকরির ক্ষেত্র গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
গার্মেন্ট শিল্পে শিশুশ্রম বন্ধে প্রকৌশলী আবু তাহের যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বাসেডর ডেবিট ম্যারিলের সাথে সমন্বয় করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। গার্মেন্ট শিল্পে ওয়েজ নির্ধারণে তিনিই প্রথম বিজিএমইএ-র পক্ষ
থেকে সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণে স্বাক্ষর করেন।
প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু তাহের একজন সফল ব্যবসায়ী। তিনি সমাজ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়িক ও সামাজিক (অলাভজনক) প্রতিষ্ঠানগুলোর
মধ্যে ফরচুনা অ্যাপারেলস লিমিটেড, রূপসী গার্মেন্টস লিমিটেড, ফরচুনা গার্মেন্টস অ্যান্ড ওয়াশিং লিমিটেড, রুমা লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এফএসসি ও ইনফ্রাৱু টেকনোলজি উল্লেখযোগ্য।
তাহের মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কফেজান্নেসা অ্যান্ড হাজী নিয়ামত উল্লাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়; কফেজান্নেসা প্রাথমিক বিদ্যালয়; ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক ও বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট প্রকৌশলী আবু
তাহের প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম।
অর্থনীতি ও সমাজসেবায় তার বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি জয়ভেরী বিজয় দিবস অ্যাওয়ার্ড, আরজেএফ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
সম্মাননা, আরজেএফ স্বাধীনতা দিবস স্বর্ণপদক ২০০৮-এ ভূষিত হন।
অবশেষে ভেড়ামারায় হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের জন্য জায়গা দানসহ অসংখ্য মানবসেবায় ব্রত তিনি।