ভেড়ামারা প্রতিনিধি –
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার মোকারিমপুর ইউনিয়ন এর গোপীনাথপুর নিবাসী মৃত নুরুল ইসলাম এর বড় পুত্র মনির কর্তৃক ছোট দুই ভাই বিপুল ও বাপ্পি কে পৈতৃক সম্পদ থেকে বঞ্চিত করতে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে পারিবারিক ভাবে, সামাজিক ভাবে একাধিক বার বসলেও বড় ভাই মনির ওরফে বাচ্চু নানা তালবাহানা করে সময় ক্ষেপণ করে আসলেও অবশেষে গত ২৫ সেপ্টেম্বর তার ভাইদের বিরুদ্ধে চরম মিথ্যাচার করে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে উল্টো বিপুল ও বাপ্পির নামে মিথ্যা অভিযোগ ও গতকাল সাংবাদিক সম্মেলন করেন বলে ভেড়ামারা এই প্রতিবেদক কে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী দুই ভাই এবং এলাকা বাসী।
সরেজমিন ঘুরে এবং বিপুল ও বাপ্পির বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের পুরোপুরি সত্যতা আমাদের অনুসন্ধানে মেলেনি।
বড় ভাই মনির ওরফে বাচ্চু অভিযোগ এ বলেন, বিপুল ও বাপ্পি আমার উপর হামলা করে। বর্তমানে আমি প্রাণনাশের আশঙ্কায় রয়েছি।
আমার শ্যালিকা ওবায়দুলকে ইসলাম বাপ্পিকে ডিভোর্স দেওয়ার পর থেকে বিপুল ও ওবায়দুলকে ইসলাম বাপ্পি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ বিভিন্ন ধরণের হুমকি প্রদান করে আসছে। এমতাবস্থায়, ইং-২৫/০৯/২০২৪ তারিখ রাত অনুমান ০৮:০০ ঘটিকার সময় আমি ঘরে শুয়ে ছিলাম।
উল্লেখিত সময় তারা হাতে হাসুয়া, রামদা ও পিস্তল নিয়ে আমার বসত বাড়ির সদর দরজা ও বারান্দায় অনধিকার প্রবেশ করে আমার নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে এবং বিপুল ০২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। গালিগালাজের একপর্যায়ে বিপুল হুকুম দিয়ে বলে যে, শালার ঘর বাড়ি ভাংচুর করে শেষ করে ফেল ও পেট্রোল ডেলে আগুন ধরিয়েছে। হুকুম পাওয়া মাত্রই বিপুল ও ওবায়দুল ইসলাম বাপ্পি তাদের হাতে থাকা রামদা দিয়ে আমার ঘরের জানালা ও দরজা ভাংচুর করে ঐ ঘরের মধ্যে আমি আমার স্ত্রী ও ১৪ মাসের সন্তান ছিলাম। আমি প্রাণ ভয়ে ঘর থেকে বাহির হইনি তবুও ঘরের দরজা ভেঙ্গে ফেলে।
উক্ত ঘটনার পরবর্তীকালে ইং-২৫/০৯/২০২৪ তারিখ রাত অনুমান ১১.৩০ ঘটিকার সময় আমার গোপিনাথপুর আখ সেন্টারে অবস্থিত ০৪ টি দোকান ও আমার অফিসে গিয়ে দোকানটিতে ০৪ টির তালা ও আমার অফিসে তালা ভেঙ্গে তাদের তালা দিয়ে দেয়। আমার দোকানে তালা দেওয়ায় ভাড়াটিয়ারা আমার কাছে ৮,০০,০০০/- টাকার ক্ষতি পূরন চাচ্ছে (সংক্ষিপ্ত)
আমাদের অনুসন্ধানী টিম সরেজমিন ঘুরে যেসব তথ্য সংগ্রহ করেছে : প্রথমত, মোকারিমপুর ইউনিয়নের গোপিনাথপুর এলাকার
মৃত নুরুল ইসলামের তিন ছেলে, পাচ মেয়ে। বাবা প্রায় ১৭ বছর হলো মৃত্যুবরণ করেন। ভিটা বাড়ির সম্পত্তি রেখে যান তিন বিঘা এক কাঠা পরিমাণ। বাজারে দোকান রেখে যান ৮ টি।
মৃত্যুকালীন তিনি ওয়ারিশ হিসেবে স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ৫ মেয়ে রেখে যান। কয়েক বছর হলো স্ত্রীও মারা যায়।
বড় ছেলে মনির, বিপুল ও রাব্বি।
মা গত হওয়ার পর ছোট দুই ভাই ও বোনেরা জমির ওয়ারেশ মোতাবেক বন্টনের জন্য বললে তাল বাহানা করতে থাকে। ছোট ভাই রাব্বিকে জেলে পাঠানোসহ ষড়যন্ত্র করে রিহাবে রাখা হয়। এবার মেজো ছেলে জমির বন্টণ করতে বললে তার নামে হত্যা চেষ্টা ও ভাংচুরের অভিযোগ এনে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে দুই ভাই বিপুল ও রাব্বি জানান, তাদের বাবা নুরুল ইসলাম ১৭ বছর আগে স্থাবর সম্পত্তি তিন বিঘা এক কাঠা পরিমাণ বাড়ির জমি রেখে যান। এছাড়াও রাস্তার পাশে ৮ টি দোকান রয়েছে। বড় ভাই মনির প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন তাদের সম্পদের ভাগ বুঝিয়ে দেওয়ার। তবে ১৭ বছর পর এসে এখনও সম্পত্তি দিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। বিভিন্ন ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে শালিসি বৈঠকে থাকছে না। প্রতিবাদ করলে মামলার হুমকি ধামকি দিচ্ছে। দুই দিন আগে নিজে ভাংচুর করে থানায় অভিযোগ দিয়েছে হামলা ভাংচুর করে তাকে গুলি করেছি এবং দোকানে তালা মেরেছি। যাহা মিথ্যা সাজানো নাটক। আপনারা এলাকার মানুষের কাছে সঠিক তথ্য জানতে পারবেন। আমরা আমাদের পৈত্রিক বাড়ির বন্টন চাই। না চাইলে ভালো চাইলেই হুমকি ধামকি দিচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, সম্পত্তি ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বিরোধ। আশপাশের একাধিক বাড়িতে গিয়ে জানতে চেয়েছি গোলাগুলি হয়েছে কিনা বা শব্দ শুনেছেন কি না। কেউ নাকি শুনতে পাননি গোলাগুলির শব্দ। অপরদিকে দোকান তালা দেওয়ার অভিযোগ ও দোকান মালিকরা অস্বীকার করেন এবং আমরা দোকান খোলা পেয়েছি। দোকান ভাড়াটিয়ারা বলেন, আমাদের দোকানে কেউ তালা মারেনি এমনকি ক্ষতিপূরণ চাওয়ার কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমরা মনির ওরফে বাচ্চুর কাছে এমন কোন কথা বলিনি। (যার রেকর্ড আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে।) বিপুল এবং বাপ্পি তার বড় ভাই মনির ওরফে বাচ্চুর আনিত মিথ্যা অপবাদ অভিযোগ এবং সংবাদ সম্মেলন এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।