ভেড়ামারা প্রতিনিধি –
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার পদ্মানদীর বালু মহল দখল নিতে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ২টি বালু ঘাটে ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে। এসময় ৭০/৮০ টা মোটরসাইকেল নিয়ে শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বালুর ঘাট দখল নিতে ব্যাপক গুলি বর্ষন, ককটেল নিক্ষেপ করে। ভাংচুর করে ১৮টি মোটরসাইকেল। অগ্নিসংযোগ করা হয় ৬টি মোটরসাইকেলে। এঘটনায় বালু ব্যবসায়ীদের মাঝে চরম আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ফেরী ঘাট বালু মহল এবং মসলেমপুর ১২ মাইল বালুর ঘাট এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে। সশস্ত্র মহড়া এবং উত্তেজনা চলে প্রায় ৩ ঘন্টা ব্যাপী। এঘটনায় ৫ জন আহত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, দুপুর ১২টার দিকে সশস্ত্র একটি সন্ত্রাসী দল মোটর সাইকেল নিয়ে ভেড়ামারার পুরাতন ফেরী ঘাট বালু মহলে হামলা চালায়। এসময় ৭০/৮০ টি মোটরসাইকেল থেকে নেমেইে শতাধিক সন্ত্রাসী ব্যবসায়ীদের উদ্দ্যেশ করে আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে গুলি ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষার্থে বালু ব্যবসায়ীরা আড়ালে পালিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা ব্যাপক তান্ডব চালায়। এসময় মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
বাহিরচর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও বালু ব্যবসায়ী সোহেল রানা ভুঁই বাবু জানিয়েছেন, ১৬ ডিসেম্বর সকাল থেকে একদল সন্ত্রাসীরা বালু ঘাটে এসে, জোর করে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করতে থাকে। এতে ব্যবসায়ীরা সংঘবদ্ধ হয়ে চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তারা ঘোষনা দেয়, কোন সন্ত্রাসীকে অতিরিক্ত চাঁদা তারা দেবে না। গতকাল মঙ্গলবার ব্যবসায়ীদের একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। এরই ভিতর বিএনপি নেতা তৌহিদুল ইসলাম আলমের ক্যাডার হিসাবে পরিচিত রোকন’র নেতৃত্বে ৭০/৮০টি মোটর সাইকেলে প্রায় শতাধিক সশস্ত্র ক্যাডার বালু ঘাটে প্রবেশ করেই এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষন শুরু করে। ককটেল ফাটায়। এসময় ৮টি মোটরসাইকেল ভাংচুর এবং ৫টি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়। বিএনপি নেতা এবং সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক শহীদুল ইসলামের ভাতিজা জহুরুল ইসলাম বিজলী জানিয়েছেন, আওয়ামীলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম চুনু’র নামে ঘাট ছিল। টাকা উঠাতো জাকিরুল নামের এক আওয়ামীলীগ নেতা। এই বালু ঘাট দখল নিতে আধিপত্য বিস্তার করতেই রোকন’র নেতৃত্বে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী এই হামলা চালায়। বিএনপি নেতা বিপ্লব মালিথা বলেন, নাইন এম এম পিস্তল, শটগান, দো নালা বন্দুক সহ প্রত্যেকের হাতেই ছিল আগ্নেয়াস্ত্র। তারা প্রক্যাশে সশস্ত্র মহড়া দিয়েছে।
এ দিকে ফেরী ঘাটের বালু মহল নিয়ন্ত্রন নিয়েই সশস্ত্র এই বাহিনী চলে যায় পার্শ্ববর্তী ১২ মাইল বালুর ঘাট দখল নিতে। সেখানেও একই ভাবে তান্ডব চালায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। বালু ঘাটে থাকা বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম বিশু এবং তার পুত্র শামসুজ্জামান সবুজ কে হত্যার উদ্দ্যেশে তাদের খুজতে থাকে এবং অন্তত ১০/১৫ রাউন্ড গুলি বর্ষন করে। এসময় ৫টি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। ১টি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। শামসুজ্জামান সবুজ অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি নেতা তৌহিদুল ইসলাম আলমের নির্দেশে তার ক্যাডার রোকন, উজ্জল’র নেতৃত্বে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ঘাটে প্রবেশ করে ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ী গুলি বর্ষন শুরু করে। ২ জন ব্যবসায়ী আহত হয়। আমার মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়। শফিকুল ইসলাম বিশু জানান, বালুর ঘাট দখল নিতে ক্যাডাররা এই সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে।
এ ঘটনার পর ভেড়ামারা থানা পুলিশের পৃথক পৃথক দল ২টি বালুর ঘাট এলাকায় পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানায় পৃথক পৃথক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।