মোঃ আতিকুর রহমান আজাদ
মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুরের কালকিনিতে বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের বিজয় মিছিলে বোমা হামলার ঘটনায় গুরতর আহত এমারত সরদার (৪০) মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার তিনটায় দিকে রাজধানী ঢাকার প্রাইম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত এমারত কালকিনি উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের কালিনগর এলাকার মৃত ফজর আলী সরদারের ছেলে।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে তিনটায় প্রতিদিনের সংবাদ প্রতিবেদককে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মাদারীপুর-৩ আসনের সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্য তাহিমনা বেগম।
প্রাইম হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘বোমা হামলায় আহত এমারত আমাদের এখানে ভর্তি হওয়ার পর থেকে তাঁকে বিশেষ তদারকিতে রাখা হয়েছিল। অনেক চেষ্টার পরও রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
পুলিশ, হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাদারীপুর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী আবদুস সোবহান গোলাপকে পরাজিত করে বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম। পরের দিন সোমবার সকালে তাহমিনার সমর্থক আলীনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ওরফে মিলন সরদারের নেতৃত্বে একটি বিজয় মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কালিগঞ্জ থেকে ফাসিয়াতলা বাজারের যাওয়ার পথে আলীনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহেদ পারভেজের সমর্থকেরা মিছিলে অতর্কিত হামলা চালায় বলেন অভিযোগ ওঠে। এ সময় বেশ কয়েকটি হাতবোমা নিক্ষেপ করা হয়। এতে এমারত সরদারসহ আহত হন অন্তত ১০ জন। গুরুতর এমারত সরদারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে মাদারীপুর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হলে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওই দিনই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আজ সকাল সাতটার দিকে এমারত সরদারকে প্রাইম হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আনা হয়। দুপুর তিনটায় তিনি মারা যান।
নিহত এমারতের বড় ভাই এমদাদ সরদার বলেন, ‘নির্বাচনে আমরা ঈগলের সমর্থন করেছিলাম। ঈগল বিজয়ী হলে আমরা বিজয় মিছিল করছিলাম। ওই মিছিলে আমিও ছিলাম। আমাদের মিছিলে নৌকার অনুসারী শাহেদ পারভেজের নেতৃত্বে বোমা হামলা চালানো হয়। ওই বোমার আঘাতে আমার ভাইডা মইরা গেল। হাসপাতালে অনেক চেষ্টা দৌড়াদৌড়ি করেও ভাইডারে বাঁচাইতে পারলাম না।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আলীনগর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান শাহেদ পারভেজ মুঠোফোনে বলেন, ‘এমারত মারা গেছে শুনেছি। এখানে আমাকে রাজনৈতিক কারণে দায়ী করা হচ্ছে। আসল সত্য হচ্ছে, এমারত নিজে বোমা বহন করতে গিয়ে বিস্ফোরণে তার হাত ও পায়ে গুরুতর আঘাত পায়। কেউ তার ওপর হামলা চালায় নাই। পুলিশ তদন্ত করলে পুরো ঘটনা জানতে পারবে। তা ছাড়া সে যে নিজের কাছে রাখা বোমার আঘাতে মারা গেছে, তার প্রমাণও রয়েছে।’
জানতে চাইলে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরকার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বোমা হামলায় আহত এমারত চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মারা গেছেন, এমন খবর শুনেছি। তা ছাড়া বোমা হামলার ঘটনায় একটা মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’