মো: আশরাফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি.
মানিকগঞ্জ পৌরসভার সেওতা এলাকার ‘স্বপ্ন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ সিজার অপারেশন করাতে এসে লিপি আক্তার নামের এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর দেড়টার দিকে স্বপ্ন হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারে সিজার অপারেশনের ওই নারীর অবস্থার অবনতি হলে বেলা তিনটার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুন্নু মেডিকেল কলেজ হসপিটালে নেওয়ার পথেই মারা যায় ওই নারী। পরে মুন্নু মেডিকেলে পৌছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রসূতি লিপি আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত লিপি আক্তার জেলার ঘিওর উপজেলার শ্রীবাড়ি এলাকার মোঃ উজ্জল হোসেনের স্ত্রী। তার তিনটি মেয়ে আছে এবং সিজার অপারেশনে পুনরায় আরেকটি মেয়ে সন্তান হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, লিপি আক্তারের অপারেশন করেছেন ডাক্তার খাইরুল হাসান এবং অ্যানাস্থেসিয়ায় ছিলেন ডাঃ মুজাহিদুর রহমান। এছাড়া অপারশেন থিয়েটারে তাদের সহযোগিতা করে হাসপাতালের একজন নার্স এবং মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট কোর্সে অধ্যয়নরত এক যুবক।
লিপি আক্তারের ভাই মো: রাজিব মিয়া জানান, অপারেশনের পর থেকেই আমার বোনের অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। আমার বোনের ফাইলপত্র চাইলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেগুলো দেয়নি। আমি সে বিষয়ে জানতে চাইলেও কোন সদুত্তর দেয়নি তারা।
লিপি আক্তারের চাচাতো ভাই শরিফুল ইসলাম জানান, সিজার অপারেশন করার জন্য তার বোন লিপি আক্তারকে সকাল ১০টার দিকে স্বপ্ন হাসপাতাল এণ্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এরপর দেড়টার দিকে ডাক্তার খাইরুল হাসানের তত্বাবধানে অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর থেকে ডাক্তাররা বার বার অপারেশন থিয়েটারে যাওয়া আসা করতে থাকে। এরপর রোগীর অবস্থা জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় রোগীর অবস্থা একটু খারাপ । ভালো কোন হাসপাতালে নিয়ে গেলে ঠিক হয়ে যাবে। রোগীর অবস্থার অবনতি হলে তাকে দ্রুত মুন্নু মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললে আমরা অ্যাম্বুলেন্স যোগে মুন্নু মেডিকেলে নিয়ে যেতে চাই। কিন্ত মুন্নু মেডিকেলে পৌছানোর আগেই আমার বোন লিপি মারা যায়।
এদিকে লিপি আক্তারের মৃত্যুর পর থেকেই ডাক্তার খাইরুল হাসান আত্মগোপনে থাকায় একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
স্বপ্ন হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুরাদ খান বলেন, আমাদের ম্যানেজমেন্ট এর কোন সমস্যা নেই। শেষ পর্যন্ত ডাক্তার খাইরুল হাসান ও অ্যানাস্থেসিয়া ডাক্তার তিনবার করে এসে রোগী দেখে গেছে। রোগীর আগেও তিনটা মেয়ে আছে, আজকে আবার মেয়ে হয়েছে। এজন্য তার পরিবারের লোকজন নানা ধরনের কথা বলছে, যা শুনে রোগীর অবস্থা হঠাৎ খারাপ হয়ে যায়।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার জানান, জরুরী সেবা ৯৯৯-এ কল পেয়ে স্বপ্ন হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারে লিপি আক্তার নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনা জানতে পেরে তাৎক্ষণিক সেখানে আমাদের পুলিশ পাঠিয়েছি। প্রসূতি লিপি আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।