মোঃসাদ্দাম হোসেন ইকবাল, ঝিকরগাছা উপজেলা প্রতিনিধি।
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার পানিসারা ইউনিয়নের কুলিয়া গ্রামের মা ও ছেলের বিরুদ্ধে জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা আত্মসাৎের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত মা হলেন মৃত মোরশেদ আলীর স্ত্রী আমেনা খাতুন ও ছেলে বিল্লাল হোসেন। এই কর্মকান্ড পরিচালনা করে বিল্লাল হোসেন নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র জালিয়াতি করে আমেনা খাতুনের ব্যাংক একাউন্টের নমিনি হয়েছেন।
তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, উপজেলার পানিসারা ইউনিয়নের কুলিয়া গ্রামের মৃত মোরশেদ আলীর পিতার নাম তারা চাঁদ মন্ডল। আর এই তারা চাঁদ মন্ডলকে পুজি করে নিয়ে আমেনা বেগম তার জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি কার্ড) স্বামীর নাম জালিয়াতির মাধ্যমে মোরশেদ মুছে ফেলে সেখানে মৃত মশিয়ার রহমান সংযুক্ত করে মশিয়র রহমান নামের একজন মৃত মুক্তিযোদ্ধা যার ভারতীয় তালিকায় নং ৪৭৭৫৩, বেসামরিক গেজেট নং ১৬৪৫ ওয়ারেশ সেজে ব্যাংক থেকে প্রতিমাসে মুক্তিযোদ্ধাদের নামে বরাদ্দ সরকারি ভাতা উত্তোলন করছেন এবং সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন। এছাড়া আমেনা বেগমের বড় ছেলে বিল্লাল হোসেনও নিজের আইডি কার্ডে জালিয়াতির মাধ্যমে পিতার নাম মোরশেদ মুছে দিয়ে মৃত মশিয়ার রহমান বানিয়ে নিয়ে ঐ একাউন্টের নমিনি হয়েছেন। আমেনা বেগমের জাতীয় পরিচয়পত্র নং ১৯৬২৪১১২৩৭১৮৬৮৭০২ তে সার্চ করে দেখা যায় সরকারি তথ্য ভান্ডারে স্বামীর নাম উল্লেখ রয়েছে মোরশেদ আলী। অথচ তিনি ব্যাংকে একাউন্ট করার সময় যে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দিয়েছেন তাতে তার স্বামীর নামে উল্লেখ রয়েছে মৃত মশিয়ার রহমান। অনুরূপ ভাবে বিল্লাল হেসেনের জাতীয় পরিচয়পত্র নং ১৯৮২৪১১২৩৭১৯২০৮৬৩ এ সার্চ করে দেখা যায় সরকারি তথ্য ভান্ডারে তার পিতার নাম আছে মোরশেদ আলী। কিন্তু তার মায়ের একাউন্ট করার সময় নমিনি করতে যে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি দিয়েছেন তাতে তার পিতার নাম মৃত মশিয়ার রহমান। মা ও ছেলে মিলে এই জালিয়াতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক, ঝিকরগাছা শাখা থেকে ২৩৮০২৩০০৩২৪১ নং একাউন্ট থেকে ২০১৩ সাল থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা উত্তোলণ করে সরকারি ভাতার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে আমেনা বেগমের গ্রামের বাড়ি কুলিয়া গেলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, তার স্বামীর নাম মশিয়ার আর লোকে ডাকতো মোরশেদ বলে। মশিয়ার নামে কোনো ডকুমেন্টস তিনি দেখাতে পারেননি। এসময় তিনি আরও বললেন, এ বিষয়ে সব আমার ছেলে বিল্লাল জানে।
বিল্লাল হোসেন সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এটার বিষয়ে আপনার শোনার দরকার নেই বলে ফোন কেটে দেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুল হক বলেন, আমি বিষয়টি জানার পর ব্যাংক থেকে তাদের টাকা উত্তোলন বন্ধ করে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছিলাম। সেখানে তারা এর স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে না পারায় একাউন্টের লেনদেন বর্তমানে স্থগিত অবস্থায় আছে।