মোঃ মশিউর রহমান সুমন। মেহেন্দিগঞ্জ, বরিশাল, প্রতিনিধি।
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় সারাদেশের ন্যায় প্রচন্ড তাপদাহের মধ্যে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সকাল, দুপর, বিকেল এমনকি মধ্যরাতেও হচ্ছে লোডশেডিং। ফলে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে মানুষ।দৈনিক গড়ে ৭ -৮ ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে। গরম আর অসহনীয় তাপে যেন শরীর পুড়ে যাওয়ার অবস্থা প্রায়। ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মানুষ। বিশেষ করে শিশু, নারী এবং বৃদ্ধরা তীব্র গরমে সীমাহীন কষ্ট পাচ্ছেন।
জানা যায়, বর্তমান তাপমাত্রা ৩৪ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও বাতাসের আদ্রতা কমে বাতাস শুস্ক হয়ে যাওয়ার ফলে সূর্যের তাপ শরীর থেকে পানি চুষে নিচ্ছে। ফলে আমাদের ত্বক জ্বালাপোড়া করছে। এর মধ্যে সারা দেশেই গরমের সঙ্গে বাড়তি ভোগান্তির আরেক নাম লোডশেডিং। মেহেন্দিগঞ্জে এলাকাভেদে প্রতিদিন গড়ে ছয় থেকে ৭ ঘন্টা করে লোডশেডিং হচ্ছে।
খোজঁ নিয়ে জানা যায়, গতকাল বুধবার উপজেলার চরএককরিয়া ইউনিয়ন এলাকায় সকাল পৌনে আটটা থেকে সকাল ১০ টা, দুপুর ১ টা থেকে ৩টা, বিকাল ৫ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা, এমনকি রাত ১০টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত মোট ৪ বার লোডশেডিং দেওয়া হয়। আবার মধ্য রাতেও দেয়া হচ্ছে লোডশেডিং। একই অবস্থা উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নগুলোতেও।
এদিকে লোডশেডিং চলাকালে দুপরে দেখা যায়, তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে নারী- পুরুষ এবং শিশুরা বাড়ি থেকে বের হয়ে গাছের ছায়ায়, বাসার দরজার সামনের রাস্তায় অবস্থান নিয়েছে এবং হাতপাখা দিয়ে বাতাস করে কিছুটা স্বস্তির খোঁজ নিচ্ছেন।তীব্র গরমে সর্বাধিক কষ্টের শিকার হচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষ। গরমের তীব্রতা থেকে বাঁচতে তারা আশ্রয় নিচ্ছেন গাছের তলায় কিংবা ছায়াযুক্ত স্থানে।
লোডশেডিংয়ের বিষয়ে উপজেলার বাসিন্দা মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, এর আগে কোনদিন এমন কষ্ট হয়নি। রাতের বেলা বিদ্যুৎ চলে গেলে বাচ্চারা গরমে কান্না শুরু করে দেয়। বাচ্চাদের সারাশরীর ঘামে ভিজে যায়।এভাবেই প্রতিদিন চলছে। আমরাতো বিদ্যুৎতের টাকা বাকি রাখিনা, তাহলে এই লোডশেডিংয়ের দায় কার? নাম প্রকাশ করার না শর্তে আরও একজন ভুক্তভোগী বলেন, প্রকৃতি এবং সরকার উভয়েই আমাদের সঙ্গে বিরুপ আচরন করছে। এই গরমে বেচে থাকাই কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।
দেশ চ্যানেলের অনুসন্ধানের মাধ্যমে আমরা মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা পল্লী বিদুৎ সমিতির জোনাল অফিসের ডিজিএম এর সাথে কথা বলে জানতে পারি, বিদ্যুৎতের ঘাটতিজনিত কারনে এই দূর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। যেখানে সমগ্র উপজেলায় দৈনিক চাহিদা ৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ, সেখানে আমরা চাহিদার মাত্র শতকরা ৩০ ভাগ বিদ্যুৎ পাচ্ছি। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। আর উৎপাদন বিষয়ে বলতে পারবে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান।
এদিকে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তীব্র গরমে বিদ্যুৎ চাহিদা বাড়লেও জ্বালানি সংকটে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সক্ষমতার চেয়ে কম বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে। ফলে দেশজুড়ে ব্যাপকভাবে লোডশেডিং করতে হচ্ছে।