হারুন শেখ স্টাফ রিপোর্টার বাগেরহাট জেলা।।
তীব্র লবণাক্ততা ও বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগের তদারকি ও প্রণোদনার আওতায় বীজ-সার ও উপকরণ প্রদান করায় আশানুরূপ ফলন ঘরে তুলতে পেরেছে কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ৮০’র দশক থেকে অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষ, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে বৈরী আবহাওয়ায় আমন আবাদের ফলন আশংকাজনক হারে কমে যায়। বিশেষ করে প্রলয়ঙ্করী আইলা ঝড়ের জলোচ্ছ্বাসে তীব্র লবন পানি কৃষি জমিতে প্রবেশ করার ফলে আমন আবাদ কমতে থাকে। এ সময় রামপালে ২০ থেকে ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হতো। যা কমে সাড়ে ৮ হাজার হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। তবে ২ হাজার সালের পরে এ উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের মধ্যে উজলকুড়, বাইনতলা ও মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নে ওয়াপদা বেড়ি বাঁধ থাকায় বোরো আবাদ দিন দিন বাড়ছে। চলতি বোরো মৌসুমে আরও সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হবে। কৃষি বিভাগ থেকে সরকারিভাবে উন্নত জাতের বীজ, সার, উপকরণ প্রদানের পাশাপাশি কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করায় ধান উৎপাদনের পরিমাণ বেড়েছে। তাতে করে সার্বিকভাবে এ উপজেলার জনসংখ্যার অনুপাতে খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ।
উপকূলীয় এলাকায় জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলা করে কৃষি খাতকে আবহাওয়া উপযোগী করা হয়েছে। যে কারণে আবাদ কম হলেও ধান উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।
রামপাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ওয়ালিউল ইসলাম জানান, এ বছর আমন আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮ হাজার ৪১৫ হেক্টর জমিতে। তা অর্জিত হওয়ায় ধান উৎপাদন হয়েছে ২৪ হাজার ৪০৩ টন। এর পূর্ববর্তী বছরে (২০২৩-২৪ অর্থবৎসর) ধান উৎপাদন হয়েছিল ২৩ হাজার ৭৮৯ মে. টন। ২০২২-২৩ অর্থবৎসরে উৎপান হয়েছিল ২০ হাজার ৯৯০ মে. টন।
খরিপ-২/২০২৪-২৫ অর্থবৎসরে ১০ টি ইউনিয়নে কৃষি প্রণোদনার আওতায় কৃষকদের হাইব্রিড ধানের আবাদ করা হয় ৮১০ হেক্টর, উফশী জাতের আবাদ করা হয় ৬ হাজার ৩১০ হেক্টরে ও স্থানীয় জাতের আবাদ করা হয় ১ হাজার ২৯৫ হেক্টরে।
চাষিরা জানান, আগাম বৃষ্টি, আবহাওয়া অনুকুলে থাকা ও কৃষি অফিস থেকে পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। বিনামূল্য উন্নত জাতের ধান ও কৃষি উপকরণ বিতরণ করায় তাদের আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর ধানের দাম ভালো পাওয়ায় ও খড়ের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় খরচ বাঁচবে বলে জানান সিংগড়বুনিয়া গ্রামের কৃষক এম, এম মহিতুর রহমান। একই কথা জানান বড়দিয়া গ্রামের কৃষক মোন্তাজ মোল্যা।