মোঃ মশিউর রহমান সুমন।
কেরানীগঞ্জের টর্চার সেলে নির্মম নির্যাতন চালিয়ে এক যুবককে হত্যার ঘটনায় বহিস্কৃত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আফতাব উদ্দিন রাব্বিসহ ১১ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবির। তিনি বলেন, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের রাসেল হত্যার ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ (১৭ জানুয়ারি) বুধবার পুলিশ সুপার বিস্তারিত জানিয়েছেন।
জানা যায়, থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক রাব্বির নেতৃত্বে ১০/২০ জন মিলে সারারাত নির্যাতন চালিয়ে রাসেলকে হত্যা করা হয়। চাঁদার টাকার ভাগাভাগি নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। রাসেলকে নির্যাতনের বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, রাসেলের পরনে কোন জামা নেই। মাথার চুল কেচি দিয়ে কেটে দেওয়া হয়েছে। খালি গায়ে থাকা রাসেলকে কয়েকজন টানাহেঁচড়া করছে। মারের চোটে রাসেল রাব্বিকে বলছে, আব্বা আব্বা, রাব্বি আব্বা আমাকে বাচান।
অপর এক ভিডিওতে দেখা যায়, অসচেতন অবস্থায় বসিয়ে রাখা হয়েছে রাসেলকে। একজন তাকে গালাগাল করছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায় নিথর দেহ রাসেলের মাটিতে পরে আছে। নাক দিয়ে রক্ত ঝড়ছে। কেউ একজন সেটা মুছে দিচ্ছেন।
নিহতদের স্ত্রী জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে স্বামীকে নির্যাতনের খবর পেয়ে আমরা রাব্বির অফিসে (টর্চার সেল) যাই। সেখানে রাসেল অসচেতন অবস্থায় মেঝেতে পরেছিলো। আমরা তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিতে চাইলে রাব্বি অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। এরপর আমার মেয়েকে হত্যার হুমকি দিয়ে সেখান থেকে আমাকে তাড়িয়ে দেয়। বুধবার সকালে লাশ বাসায় এনে রেখে যায়। খবর পেয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা তোফাজ্জল হাওলাদার বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় আফতাব উদ্দিন রাব্বিসহ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন।
নিহত রাসেলের গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার ভাসানচর ইউনিয়নের তোফাজ্জল হাওলাদারের ছেলে। এদিকে তার মৃত্যুতে পারিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং তারা হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।