মোঃজাকির হোসেন নীলফামারী প্রতিনিধি:
লাখো মানুষের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায় শেষ শয্যায় শায়িত হলেন নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ীর কৃর্তি সন্তান প্রবীণ রাজনীতিবিদ, জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ।
বুধবার (৩১ জানুয়ারী) বেলা ৩ টায় নীলফামারী বড় মাঠে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মরহুমের একমাত্র ছেলে আল ফারুক আব্দুল লতিফ। প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ জানাজায় অংশ নেয়। পরে জেলা জজকোর্ট সংলগ্ন শহরের কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯ টায় তিনি ঢাকায় ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর।
জানাজা পূর্ব আলোচনায় অংশ নেন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আব্দুল হালিম, রংপুর দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান বেলাল, দিনাজপুর উত্তর জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আনিসুর রহমান, দক্ষিণ আমীর আনোয়ারুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও জেলা আমীর মাওলানা আব্দুল হাকিম, পঞ্চগড় জেলা আমীর অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, কুড়িগ্রাম জেলা আমীর মাওলানা আব্দুল মতিন ফারুকী, লালমনিরহাট জেলা আমীর এ্যাডভোকেট আতাউর রহমান, রংপুর জেলা আমীর অধ্যক্ষ গোলাম রব্বানী, মহানগর আমীর এটিএম আজম, গাইবান্ধা জেলা আমীর আব্দুল করিম সরকার।
নীলফামারী জেলা আমীর আব্দুর রশিদের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, সাবেক এমপি ও মরহুমের বন্ধু এডভোকেট আনিসুল আরেফিন চৌধুরী, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন মোল্লা, নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি আ খ ম আলমগীর হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা হাফিজুর রশিদ মঞ্জু, জেলা বারের এ্যাডভোকেট সজিব, মরহুমের ভাতিজা এ্যাডভোকেট আমানুল্লাহ, ছেলে আল ফারুক আব্দুল লতিফ প্রমুখ।
তিনি স্ত্রী, এক ছেলে আর তিন কন্যাসহ বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মরহুম আব্দুল লতিফ নীলফামারী আইনজীবি সমিতির বিভিন্ন সময় গুরুত্বপুর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক জেলা আমীর, কেন্দ্রীয় কর্ম ও সূরা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই সাথে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল নীলফামারী ইউনিটে সভাপতি এবং নীলফামারী বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল ফারুর আব্দুল লতিফের পিতা।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক মজিবুর রহমান, জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মমতাজুল হক, বাংলাদেশে ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরাম নীলফামারী ইউনিটের সভাপতি এ্যাড. আবু মোহম্মাদ সোয়েম, সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আসাদুজ্জামান খান রিনো এবং ইউনাটেড ল’ ইয়াস ফোরামের সভাপতি এ্যাড. এস এম ওবাইদুর রহমান, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আজমসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তি, জেলা-উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা মৃত্যুত গভীর শোকাহত ও মর্মাহত মর্মে শোকবার্তা দিয়েছেন।
তার মৃত্যুতে জেলাজুড়ে নেমে আসে শোকের ছায়া। মঙ্গলবার রাতে লাশ এসে পৌঁছার পর থেকে লাখ লাখ দলীয় নেতা কর্মী, আত্মীয় স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী একনজর দেখার জন্য উপচে পড়ে। বড় মাঠে রক্ষিত মৃতদেহে শ্রদ্ধা ও শোক জানাতে আসেন আইনজীবি সমিতি, বিচারপতি, জেলা-উপজেলা প্রশাসন অঙ্গনের কর্মকর্তা, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা-উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও অঙ্গসংগঠনসহ ব্যবসায়ী, শ্রমিক সমিতির নেতৃবন্দগণ।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যক্ষ আব্দুল হালিম বলেন, এ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ একটা আদর্শ লালন করতেন। যে কারণে তিনি একজন নৈতিক মানুষে পরিণত হয়েছিলেন। আর এজন্যই তিনি দলীয় পরিচিতির উর্ধে উঠে জননেতার আসনে আসীন হয়েছেন। যার প্রমাণ আজকের এই লাখো মানুষের উপস্থিতি। তাঁর সেই আদর্শকে ধারণ করার মাধ্যমে আমাদেরকেও আল্লাহ ও রাসূলের পথে চলে প্রকৃত ইমানদার হতে হবে। মরহুমের স্বপ্ন ছিল আল্লাহর জমিনে কুরআানের রাজ প্রতিষ্ঠা করা। সেই সংগ্রামের জন্য নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রস্তুতিই হোক আজকের শপথ।