রশিদুল ইসলাম
কালিগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় শারদীয় দুর্গোৎসবে জিআর এর চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জানাগেছে, এ বছর কালীগঞ্জ উপজেলায় শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে উপজেলায় মোট ৯৪ টি পুঁজা মন্ডব রয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কালীগঞ্জ উপজেলা বাংলাদেশ পুঁজা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক কমিটি। ৯৪ টি মন্ডবের তালিকাও প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে জমা দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কমিটি। এরমধ্য তালিকার ১৫ নং সিরিয়ালের দক্ষিন মুসরত মদাতী কালিকাপুর দূর্গা মন্দির বটতলা পুঁজা উদযাপন করেনি। উক্ত মন্দির কমিটির সভাপতি রাজেন্দ্র নাথ রায় বলেন, তালিকায় আমাদের নাম থাকলেও আমরা এ বছর পুঁজা উদযাপন করিনি এবং কোন জি আরও বরাদ্দ নেইনি। বিষয়টি আমরা উপজেলা কমিটিকে অবগত করেছি বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা বাংলাদেশ পু্জা উদযাপন কমিটির আহবায়ক দুলাল চন্দ্র সাহা বলেন, এ বছর পুজায় ৯৪ টি মন্ডবের তালিকা দেয়া হলেও একটি মন্ডব বাদ গেছে মোট ৯৩ টি মন্ডবে পুঁজা উদযাপন হয়েছে এবং ৯৩ টি জিআর চালের ডিও দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস আহমেদ বলেন, কমিটির দেয়া তালিকা মোতাবেক ১ টি বাদে ৯৩ টি পুঁজা মন্ডবের কমিটিকে ৫০০ কেজি করে জি আর চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
জি আর চাল ক্রয়কারী এরশাদ বলেন, আমি ৬১ টি ডিও ক্রয় করেছি আর ৩২ টি ডিও ক্রয় করেন ইউনুস আলী আশরাফী নামে অপর এক ব্যবসায়ী।
তবে অনেকের অভিযোগ এ জি আর চালের ডিও আত্বসাৎ করা হয়েছে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানে তার সত্যতা পাওয়া যায়। এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা বাংলাদেশ পু্জা উদযাপন কমিটির সাবেক নেতৃবৃন্দ বলেন, এ বছর মোট ৯২ টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়াও উপজেলার চন্দ্রপুর ইউনিয়নে মোট ১৩ টি পূজা মন্ডপ তালিকায় উল্লেখ করা হলেও চন্দ্রপুর এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা বাবু সুনীল চন্দ্র জানান এ ইউনিয়নে মোট ১২ টি পূজা মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসব পালিত হয়েছে। তাকে গোন্ডারায় পাড়া শ্রী শ্রী সার্বজনীন দুর্গা মন্দির চিনেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ নামে কোন মন্দিরের অস্তিত চন্দ্রপুর ইউনিয়নে নেই।
তবে গোন্ডারায় পাড়া মন্দিরের সভাপতি সুশান্ত কুমার রায় বলেন, আমরা পুঁজা পালন করেছি, ডিও পেয়েছি। উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয়ের আনসার দায়িত্ব পালনের কোন তথ্য কেন নেই জানতে চাইলে তিনি এর সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে সাধারন সম্পাদক দিলীপ কুমার রায় বলেন, এ মন্দিরটি গোড়ল এলাকায় এর দায়িত্বে আছেন বিষ্ণু মাস্টার আমি নই। আনসার ডিউটির তালিকায় মন্দিরটির নাম না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান। শারদীয় দুর্গোৎসবের জি আর বরাদ্দকৃত মোট ডিওর ২ দুটি ডিও কোথায় কি হয়েছে তা নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। অনুসন্ধানে খোঁজ নিয়ে দুটি ডিওর চাল কে বা কাহারা আত্বসাৎ করেছে এ প্রশ্ন এখন সবার।
তবে কালীগঞ্জ উপজেলা বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক নেতারা বলেন, একটি ধর্মীয় বিষয়ে ডিও লেটার নিয়ে এরকম অনিয়ম মেনে নেয়া যায় না। যারা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া তালিকাভুক্তি দেখিয়ে ডিও লেটার আত্মসাৎ করতে পারেন তাদের দিয়ে আর যাই হোক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা যায় না।