জেলা প্রতিনিধি নড়াইল
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের দৌলতপুর ঠাকুরবাড়ি রাধা গোবিন্দ মন্দিরে দুই গ্রুপের নামযজ্ঞ অনুষ্ঠান নিয়ে দুগ্রুপের বিরোধ তুঙ্গে।
বিভিন্ন সুত্রে জানাগেছে, গত শুক্রবার ওই মন্দিরে অনুষ্ঠিত কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় কমিটির পূর্ণাঙ্গ নাম ঘোষনা ও ৬৮ তম নাম যজ্ঞের প্রস্তুতিমুলক সভায় আগামী অগ্রহায়ণ মাসের ১৫ তারিখে ৬৮তম নামযজ্ঞের তারিখ ঘোষণা করা হয়।
গত (৫ ডিসেম্বর) শুক্রবার সন্ধ্যায় ইতনা ইউনিয়নের দৌলতপুর ঠাকুরবাড়ি রাধাগোবিন্দ মন্দির প্রাঙ্গণে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন (অবঃ) ড. জীবন কৃষ্ণ সাহার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অপূর্ব কুমার সাহার তত্বাবধানে ৬৮তম নামযজ্ঞ আগামী ১৫ মাঘ অনুষ্ঠিত হবে বলে সভায় সকলকে অবহিত করা হয়। এসময় এলাকার ৩ শতাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বীরা উপস্থিত ছিলেন। সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন(অবঃ) ও মন্দিরের সভাপতি ড.জীবন কৃষ্ণ সাহা বলেন, আমরা ঈশ্বরের সন্তুষ্টির জন্য পার্থিব জীবনে কিছু করে যেতে চাই। আমাদের সমাজে কিছু মানুষ ভালো কাজে বাধা হয়ে দাড়ায় তারা কিন্ত সংখ্যায় খুবই নগন্য। আমরা একে অন্যের সাথে সকল বিভেদ ভুলে এক সঙ্গে কাজ করতে চাই।
শুক্রবার কমিটির পরিচিতি সভার পর এলাকার কতিপয় লোকে একই মন্দিরে আগামী ১৫ডিসেম্বর থেকে ৩২ প্রহরব্যাপী নামযজ্ঞ করবার জন্য ইতনা ইউনিয়ন মহানামযজ্ঞ কমিটি ও লোহাগড়া উপজেলার দ্বীন সেবকবৃন্দ ব্যানারে চিঠি বিলি শুরু করে। এখানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সভাপতি হিসাবে শ্যামল রঞ্জন সাধু খা এবং সাধারণ সম্পাদক ভবদেব সাহা।
এ বিষয়ে গত ১০ অক্টোবর ঘোষিত কমিটির সভাপতি ড.জীবন কৃষ্ণ সাহা ও সাধারণ সম্পাদক অপূর্ব কুমার বলেন, একই স্থানে একই নামে দুটি নামযজ্ঞ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।যা ধর্মীয়ভাবে দৃষ্টিকটু। যদিও আমরা তাদের কোন বাধা প্রদান করবো না।কিন্ত দৌলতপুর ঠাকুরবাড়ি রাধাগোবিন্দ মন্দিরের নামযজ্ঞ হবে ৬৮ তম, বিদ্রোহী যে গ্রুপটি ১৫ ডিসেম্বর নামযজ্ঞের আয়োজন করেছে তা হলে ইতনা ইউনিয়ন সর্বজনীন নামযজ্ঞের ১ম বর্ষ।
এদিকে, বিদ্রোহী কমিটির সভাপতি শ্যামল রঞ্জন সাধু খা বলেন, আমরা ইতনা ইউনিয়ন সার্বজনীন নামযজ্ঞানুষ্ঠান ওই মন্দিরে আগামী ১৫ডিসেম্বর থেকে করবো। ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে দুটি নামযজ্ঞ করলে দৃষ্টিকটু হবে স্বীকার করে তিনি বলেন, আমরা উভয়ই স্বজন। আসন্ন নামযজ্ঞের পরে সকলে বসে মিমাংশার চেষ্টা করবো।
ইতনা ইউপি মেম্বর ও বিদ্রোহী কমিটির অন্যতম নেতা তমাল কৃষ্ণ কুন্ডু বলেন, রক্তের আত্মীয়দের মধ্যকার দ্বন্দ এটি। দুটি কমিটির নেতারাই পরস্পর আত্মীয়। দুষ্ট গরুর চেয়ে যেমন শুন্য গোয়াল ভালো, তেমনি শিক্ষিত লোকের চেয়ে অশিক্ষিত লোক অনেক ভালো। আমরা সমাধানে বসতে চেয়েছি, তারা গুরুত্ব দেয়নি। তাই দুটি নামযজ্ঞ হতে যাচ্ছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সনাতন ধর্মের ওই এলাকার কয়েকজনে বলেন, একই মন্দিরে দুটি নামযজ্ঞ হওয়া মানে নিজেদের মধ্যকার দ্বন্দ আরো বেড়ে যাওয়া। বিষয়টি নিয়ে এলাকার শান্তি বিনষ্টের শংকা রয়েছে।ওই এলাকার কয়েকজন মুসলমান বলেছেন এই নামযজ্ঞকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে ও পারে।

