জেলা প্রতিনিধি ( নড়াইল)
নড়াইলের লোহাগড়ায় কিস্তির টাকা না পেয়ে অশীতিপর বৃদ্ধকে পিটিয়েছেন এক ব্যাক কর্মী। এ ঘটনার পর ওই বৃদ্ধ ক্ষোভে-দুঃখে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বৃদ্ধ’র স্ত্রী লোহাগড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার (৩১ মার্চ) দুপুরের দিকে ব্র্যাক লোহাগড়া ব্রাঞ্চের ম্যানেজার জামিরুল রহমানের নির্দেশে মাঠ কর্মী মোঃ সেলিম হোসেন পার-মল্লিকপুর গ্রামের মোঃ রবিউল ইসলামকে ( ৭১) লোহাগড়া পৌর শহরের মশাঘুনী এলাকায় অবস্থিত ব্রাক অফিসে কিস্তির টাকার জন্য ফোন করে ডেকে নিয়ে আসেন। এরপর মাঠ কর্মী সেলিম ঋণ গ্রহীতা রবিউল ব্রাক অফিসে আসলে তার নিকট কিস্তির টাকার জন্য মানসিক ভাবে চাপ দিয়ে নানা কুরুচিপূর্ণ কথা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে কথাকাটি হলে ব্রাক সেলিম অশীতিপর বৃদ্ধ রবিউল ইসলামের চোখে মুখে কিল,ঘুসি, চড়-ধাপ্পড় মেরে বলেন, ‘টাকা দিতে না পারলে বিষ কিনে খাও, মরে গেলে আর কিস্তির টাকা দেওয়া লাগবে না’। অবস্থা বেগতিক দেখে রবিউল কিস্তির টাকা পরিশোধের কথা দিয়ে ব্র্যাক অফিস থেকে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন।
অপমান সহ্য করতে না পেরে ক্ষোভে-দু:খে ঋনগ্রহিতা রবিউল আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন এবং তার বাড়িতে থাকা কীটনাশক পান করেন। পরিবারের সদস্য হঠাৎ রবিউলের অবস্থা খারাপ দেখে তাকে লোহাগড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সোমবার তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে সোমবার রাতে
ম্যানেজার জামিনুর রহমান ও মাঠ কর্মী সেলিমের নামে থানায় একটি অভিযোগপত্র দায়ের করেছেন।
রাবেয়া বেগম বলেন, ‘ ব্র্যাক থেকে লোন নিয়েছি। ১টা কিস্তি দিয়েছি। ২টা কিস্তির জন্য ২দিন সময় চেয়েছি। তারপর যদি টাকা না দিতে পারি, তার জন্য দেশে প্রচলিত আইন আছে, সেই আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নিবেন। ব্রাককর্মী সেলিম তো ৭১বছর বয়সী একজন মানুষের গায়ে হাত দিতে পারেন না। আমি এ ঘটনার বিচার চাই ‘।
এ ঘটনার পর সোমবার সকালে গণমাধ্যম কর্মীরা ব্র্যাক অফিসে গিয়ে খোঁজ করেও ম্যানেজার জামিরুল রহমান ও মাঠ কর্মী সেলিমকে পাওয়া যায় নাই। মোবাইল ফোনে ফোন দিলেও তারা ফোন রিসিভ করে নাই।
এ বিষয়ে নড়াইল জেলা ব্রাকের সমন্বয়কারী মোঃ জাহিদুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘ এমন আচরণ করা অপরাধ, এটা ঠিক না। তবে তদন্তকরে ঘটনার সত্যতা পেলে সেলিমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)কাঞ্চন রায় অভিযোগ প্রাপ্তির কথা জানিয়ে বলেন, ‘তদন্ত করে আইনত ব্যবস্হা নেওয়া হবে।