জেলা প্রতিনিধি নড়াইল
নিয়োগ বাণিজ করতে রাতারাতি গড়ে তোলা বিতর্কিত সেই সোনাদাহ পাচুড়িয়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা বিষয়ে বুধবার তদন্ত করতে সোনাদাহ পাচুড়িয়া গ্রামে গেলেন লোহাগড়ার ইউএনও! তদন্তে মিললো অভিযোগের সত্যতা। ইউএনও,র নির্দেশে ভেঙে ফেলা হলো সাবেক আই,জি,আর(ভারপ্রাপ্ত) মুন্সী নজরুল ইসলাম ও আওয়ামী লীগ নেতা মুন্সী শরিফুল ইসলামের বাড়ির পুরাতন ঘরে টানানো মাদ্রাসার সাইনবোর্ড টি।
নিয়োগ বাণিজ্য করবার জন্য রাতারাতি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টার অভিযোগ এনে কয়েকমাস আগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে গ্রামবাসী।
সোনাদহ গ্রামের বাসিন্দা শ,ই, আহম্মেদ রেজা তারা, চান মিয়া শরীফ, আল মামুন হাসান সহ গ্রামবাসীরা জানান, ১৯৮০ সালে সোনাদহ-পাচুড়িয়া গ্রামের লোকজন গ্রামের মাঝে সোনাদহ-পাচুড়িয়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।১৯৮২ সালে ওই মাদ্রাসা বিলুপ্ত হয়ে যায়। কিন্তু ওই সময় ওই নামে একটি আবেদন সচিবালয়ে জমা দেয়া ছিলো। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে গ্রামবাসিরা সম্মিলিতভাবে সেই একই স্থানে সোনাদহ-পাচুড়িয়া বারিয়া দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। যেটা এখনো সুনামের সাথে চলছে। কিন্তু রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সাথে সাথে একটি চক্র নিয়োগ বাণিজ্য করবার জন্য রাতারাতি সোনাদহ গ্রামের ফারুক শরীফের বাড়ির পাশে বাগানের মধ্যে ১৯৮২সালে বিলুপ্ত হওয়া সেই সোনাদহ-পাচুড়িয়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে। এই মাদ্রাসা থেকে ৬৫ নং সোনাদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব মাত্র দেড়শো গজ। আর ১৯৯১ সালে গ্রামবাসিরা সম্মিলিতভাবে যে সোনাদহ-পাচুড়িয়া বারিয়া দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার দূরত্ব দুশো গজ।
গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন, শিক্ষার্থী সংকটে এমনিতেই আগের দুটি প্রতিষ্ঠান চলতে হিমসিম খাচ্ছে। তারপরে আবার রাতারাতি নতুন মাদ্রাসা করবার চেষ্টা করা মানে আগের দুটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করা। নিয়োগ বানিজ্য করতে একটি মহল নতুন মাদ্রাসা করতে চাচ্ছে। আমরা গ্রামবাসীরা এটি প্রতিহত করবো।
অভিযোগের ভিত্তিতে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবু রিয়াদ বুধবার বিকালে সোনাদাহ পাচুড়িয়া গ্রামে যান। সরেজমিনে গিয়ে তিনি দেখেন কয়েকমাস আগে বাগানের মধ্যে মাদ্রাসার নামে যে ঘর তোলা হয়েছিলো সেটা নাই। এরপর তিনি দেখেন সোনাদাহ পাচুড়িয়া গ্রামের মাঝে সাবেক আই,জি,আর(ভারপ্রাপ্ত) মুন্সী নজরুল ইসলাম ও আওয়ামীলীগ নেতা মুন্সী শরিফুল ইসলামের বাড়িতে নতুন মাদ্রাসার সাইনবোর্ড টানানো। এসময় ইউএনওর নির্দেশে সাইনবোর্ড টি খুলে ভেঙে ফেলা হয়।
সোনাদাহ পাচুড়িয়া বারীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা তসলিম আহম্মেদ বলেন, এই মাদ্রাসাটিই আগে স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা ছিলো। পরবর্তীতে এটি এবতেদায়ীসহ দাখিল মাদ্রাসা করা হয়। এখানে এবতেদায়ী সেকশন আছে। চারজন শিক্ষকও আছে। ছাত্র সংকটে এই মাদ্রাসাটি ই চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। তারপর আবার নতুন মাদ্রাসা কিভাবে হয়।আমার এই মাদ্রাসার দলিল ব্যবহার করে তারা নতুন মাদ্রাসা করবার চেষ্টা করছে। এ বিষয়টি আমি ইউএনও স্যারকে অবহিত করেছি।
ইউএনও মোঃ আবু রিয়াদ বলেন, এই গ্রামে সরকারী প্রাইমারী স্কুল ও একটি মাদ্রাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের দুই-তিনশ গজ দূরে নতুন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে পারে না।তাছাড়া আমি নিয়োগ বানিজ্যের কথা শুনেছি। প্রমান পেলো ব্যবস্থা নিবো। এই মাদ্রাসা এখানে হতে পারে না। আমি কতৃপক্ষের নিকট যা পেয়েছি সেই প্রতিবেদন পাঠিয়ে দিবো।