জেলা প্রতিনিধি নড়াইল
দীর্ঘদিন ধরে নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার নিরাপত্তা রক্ষায় এককভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন পৌরসভার নিয়োজিত নৈশ প্রহরী উজ্জ্বল শেখ। যথাযথ সহায়তা ও জনবল ছাড়াই তাঁর একক প্রচেষ্টা দীর্ঘদিনের একটি নীরব বীরত্বের নিদর্শন হয়ে উঠলেও, প্রশাসনিক অবহেলার কারণে তাঁর ওপর চলছিল বৈষম্যমূলক চাপ ও দায়িত্বের অতিরিক্ত বোঝা। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পর বিষয়টি সেনাবাহিনীর দৃষ্টিগোচর হয়।
সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি ও জন-সেবায় অঙ্গীকারবদ্ধতা থেকে নড়াইল সদর সেনা ক্যাম্প দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। সেনাবাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল ২৭ মে মংগলবার সকালে সরাসরি লোহাগড়া পৌরসভায় উপস্থিত হয় এবং পৌরসভার প্রশাসক মিঠুন মৈত্র ও সচিব তৌফিকুল আলমের সাথে আলোচনায় বসেন।
নড়াইল জেলার সেনাবাহিনীর টহল অধিনায়ক উজ্জ্বল শেখের দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলোর সুস্পষ্ট চিত্র তুলে ধরেন। বৈষম্য, অতিরিক্ত দায়িত্ব এবং নিরাপত্তার অভাবজনিত চ্যালেঞ্জগুলো আলোচনায় স্থান পায়। সেনাবাহিনীর সরাসরি মধ্যস্থতায় অবিলম্বে কিছু কার্যকর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উজ্জ্বল শেখের দায়িত্ব ভাগাভাগির জন্য আরও একজন নৈশ প্রহরী নিয়োগে পৌর কর্তৃপক্ষ সম্মত হয়
তার নিরাপত্তা ও কর্মের মানউন্নয়ন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেন পৌরসভা কতৃপক্ষ। অতীতের দায়িত্ব পালনের জন্য আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ও সম্মাননা প্রদানের পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
উপস্থিত সেনা কর্মকর্তা বলেন“একজন সাধারণ প্রহরীর প্রতিদিনকার সাহসিকতা ও দায়িত্ববোধ যেন কখনও প্রশাসনিক অবহেলায় চাপা না পড়ে। আমরা এটাই নিশ্চিত করতে এসেছি।
তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতেও যেকোনো ধরনের সামাজিক বা প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী তার দায়িত্ব পালনে সদা প্রস্তুত থাকবে।
সেনাবাহিনীর দ্রুত ও মানবিক পদক্ষেপে এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ও কৃতজ্ঞতার জোয়ার বইছে। সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং ন্যায়বিচারের প্রতি এ ধরণের সদয় মনোভাব দেশের সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি আস্থা ও শ্রদ্ধা বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে।
এই ঘটনা প্রমাণ করেছে, সাহস ও ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াতে হলে কখনও কখনও নীরব যোদ্ধাদের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠতে হয় – আর সেনাবাহিনী তা করতে পিছপা হয় না।
এভাবেই রাষ্ট্রের প্রান্তিক স্তরে কাজ করে যাওয়া নিরব নায়কদের পাশে দাঁড়িয়ে সত্যিকার অর্থে “জনগণের সেনাবাহিনী” হয়ে ওঠে সেনাবাহিনী।