আব্দুল গাফফার শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বগুড়ার শেরপুর শহীদিয়া আলীয়া কামিল মাদ্রাসার প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উৎসব শনিবার (২১ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়েছে। শতবছরের প্রাচীণ মাদ্রাসা প্রাঙণে প্রথমবারের মতো আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানকে ঘিরে আনন্দে মেতে উঠেন মাদ্রাসার সাবেক শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিন পর পরিচিত সহপাঠী-বন্ধু ও পরিচিত মুখগুলোকে কাছে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকেই। সবাই যেন পুরণো সব স্মৃতি খুঁজে ফিরছিলেন। স্মৃতিচারণে সবাই ফিরে যান সেই উচ্ছল তারুণ্যভরা দিনগুলোতে। পাশাপাশি তাঁদের প্রিয় মাদ্রাসার উন্নয়নসহ দেশ ও জাতীর উন্নয়নে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তাঁরা।
পুনর্মিলনীর এই অনুষ্ঠানে শামিল হওয়া প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অনেকেই এখন দেশ-বিদেশে নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। তাঁরাও অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ছুটে আসেন প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ফলে মাদ্রাসা প্রাঙণে অনুষ্ঠিত ওই উৎসব যেন পরিনত হয়েছিল নবীন-প্রবীন শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায়। তাইতো পুরনো সব বন্ধু আর সহপাঠীকে পরস্পর জড়িয়ে ধরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। আবার অনেকে মোবাইল ক্যামেরায় নিজেদের বন্দি করেন নতুন করে। অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. হাফিজুর রহমান।
মাদ্রাসার প্রাক্তন শিক্ষার্থী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব দবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় শেরপুর-ধুনট নির্বাচনী এলাকার বিএনপি দলীয় সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। তিনি প্রতিবেশী দেশের আগ্রসী আচরণের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ভারত মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তাই বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলা-ভাঙচুর চালিয়েছে। এমনকি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকায় আগুন দিয়েছে। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের সফলতা কামনা করে তিনি আরো বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংস্কার করে সম্পন্ন করতে হবে। পাশাপাশি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়ার জন্য জোর দাবি করেন।
অনুষ্ঠানে বরেণ্য অতিথি ছিলেন নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহা: হাছানাত আলী। প্রাক্তন ছাত্র অধ্যক্ষ আব্দুল হাই বারীর সঞ্চালনায় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামি স্টাডিজ বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ড. এফ এম এ এইচ তাকী, আরবী বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ড. শেখ মুহা. আব্দুস সালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কেএম মাহবুবার রহমান হারেজ, বগুড়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমজান আলী, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মানছুরুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বাবলু, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিন্টু, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির নাজমুল হক, প্রাক্তন শিক্ষার্থী ড. আব্দুর রাজ্জাক, মাওলানা আব্দুস সাত্তার, অ্যালামনাই ব্যাংকার শরীফ উদ্দিন প্রামাণিক, আব্দুল আলীম, কামাল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। শুরুতেই ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের অতিথিসহ উৎসবে অংশ নেওয়া সব প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়া হয়। সেইসঙ্গে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বিশেষ উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।