জেলা প্রতিনিধি (নড়াইল)
নড়াইলের তিনটি উপজেলার ফসলের মাঠজুড়ে এখন শুধুই হলুদের সমারোহ। সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে বাতাসে। যতদূর চোখ যায় বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে শুধু হলুদের সমারোহ। অপরদিকে মৌচাষীরা মধু সংগ্রহে জন্য শরিষা ক্ষেতের পাশে মৌ মাছির চাক বসিয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ভোজ্য তেলের মূল্য বৃদ্ধি ও সরিষা তেল স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ার কারণে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর জেলায় সরিষার আবাদ কয়েক গুণ বেড়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন এ জেলার কৃষকরা। ইতোমধ্যে সরিষা ক্ষেতে বীজ আসতে শুরু করেছে।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে সরিষা আবাদের এমন চিত্রই দেখা গেছে।
লোহাগড়ার উপজেলার করফা গ্রামের কৃষক মো. মনিরুল সিকদার দুই একর জমিতে বারি-১৭ জাতের সরিষা আবাদ করেছেন। বর্তমানে গাছগুলো খুবই ভালো হয়েছে, ভালো ফলনের আশা করছেন তিনি।
উপজেলা কৃষি বিভাগ চলতি মৌসুমে কৃষকদের ১ কেজি সরিষা বীজ, ১০ কেজি এমওপি ও ১০ কেজি সার বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেছে।
কালিয়া উপজেলার বড়নাল গ্রামের কৃষক হরিশ চন্দ্র রায় জানান, এবার তিনি ১ একর ৩৩ শতক জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। তবে কালিয়া কৃষি বিভাগ কৃষকদের বিনামূল্যে বিভিন্ন উপকরণ দিয়েছে। সরিষা চাষের জন্য কৃষকদের সকল প্রকার সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, এ মৌসুমে নড়াইল জেলায় ১২ হাজার ৮৮৮ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে রিলে পদ্ধতিতে সরিষা চাষ হয়েছে। গত বছর এ পদ্ধতিতে আবাদ হয়েছিলো দেড় হাজার হেক্টরে। রিলে এবং সাধারণ পদ্ধতি মিলে গত বছরের তুলনায় এ মৌসুমে মোট আবাদ বেড়েছে ৩ হাজার ৬৭৩ হেক্টর জমিতে।
তিনি আরো বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সরিষার ফলন ভালো হবে বলে আশা করছেন সবাই। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কিছু কিছু এলাকায় কৃষক জমি থেকে সরিষা তুলতে পারবে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী প্রতিটি জমি কাজে লাগাতে চাই। ভোজ্য তেলের উৎপাদন বাড়িয়ে আমদানি নির্ভরতা কমাতে চাই। এছাড়া এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদী না থাকে, সেই লক্ষে নড়াইল কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।