সাঁথিয়া (পাবনা) প্রতিনিধিঃ
পাবনার সাঁথিয়ায় গৃহবধুকে স্বামী ও তার পরিবার দ্বারা নির্যাতন করায় আদালতে মামলা করেছেন এক নারী। মামলা পর থেকে তাকে মামলা তুলে নিতে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছেন আসামীরা। ভূক্তভোগী নারী বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন। স্বামী ও তার শ্বশুর বাড়ীর লোকজনের শান্তি ও ন্যায় বিচারের দাবীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরছেন তিনি। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে সাঁথিয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের স্ত্রী আইরিন খাতুন (৩৮)। তিনি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার এলঙ্গীপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল হকের মেয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ওই ভূক্তভোগী নারী বলেন, গত ২০১৫ সালে সাঁথিয়া উপজেলার রসুলপুর গ্রামের মৃত উসমান গণির ছেলে শহিদুল ইসলামের সাথে তাঁর বিয়ে হয়। যৌতুক হিসেবে তার পরিবার আসবাবপত্র ও স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মালামাল শহিদুলকে প্রদান করেন। স্কয়ার ফার্মাসিটিকেলসে স্বামীর চাকরির সুবাদে তিনি টাঙ্গাইলে বসবাস করেন। বিয়ের পর তাদের সন্তান না হওয়ায় ভারতে গিয়ে ওই নারীর পরিবার প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা চিকিৎসা বাবদ। খরচ করেন। এরপর তার স্বামী ও শ্বাশুড়ীসহ পরিবারের লোকজন তাকে শারিরীক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করেন। তিনি একটি চাকরি করতেন সে চাকরি ছেড়ে দিতেও তাকে বাধ্য করেন তার স্বামী। এক পর্যায়ে তার স্বামী জুয়া ও পরকিয়ায় জড়িয়ে পড়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিষয়টি আইরিন খাতুন জানার পর তার ওপড় নেমে আসে অমানষিক নির্যাতন। এ ঘটনায় তিনি স্বামী শহদুিল ইসলাম, তার বড় ভাই কামাল হোসেন, শ্বাশুড়ী মমতাজ বেগম, ননদ আফরোজা পারভীন মুক্তিসহ ছয়জনকে আসামি করে এ বছর ৮এপ্রিল টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আদালতে মামলা করেন। যার মামলা নং-০৭। কামাল হোসেন বর্তমানে গাজীপুর ‘বিএসটিআই’তে উপ-পরিচালক পদে কর্মরত আছেন। তার নেত্বত্বেই ওই নারীকে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে তিনি দাবী করেন। পরবর্তীতে তার স্বামী তাকে আর নির্যাতন করবেনা এবং দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দিবে মর্মে বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে টাঙ্গাইল আদালত থেকে স্বামীকে তিনি জামিন করান। কিন্তু জামিনে বের হয়ে তার স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন তাকে আবারো নির্যাতন শুরু করেন এবং নগদ এক লাখ ৫০ হাজার এবং ব্যাংক থেকে দুই লাখ ৬৪ হাজার টাকা, ১০ভরি স্বর্ণ, মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, ই- পাসপোর্ট, ব্যাংকের এটিএমকার্ডসহ বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ কাগজপত্রসহ ছিনিয়ে নিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ ঘটনায় আইরিন খাতুন আবারো গত ২০ সেপ্টেম্বর সাভার মডেল থানায় স্বামী শহিদুল ইসলামসহ তিন জনকে আসামি করে মামলা করেন। যার মামলা নং-৫৫। এছাড়া তিনি গত ২০ অক্টোবর সাঁথিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। বর্তমানে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন এবং ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।