নজরুল ইসলাম, জেলা প্রতিনিধি:
খাল খননে অনিয়ম-দুর্নীতি, ভুয়া মাষ্টাররোল ও কাজ না করেই বিল উঠানো, ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে দরপত্র ছাড়াই নিম্নমানের কাজ বাস্তবায়ন, যোগসাজশে দরপত্রে অনিয়মের প্রহসনসহ- এমন ডজন খানেক অভিযোগ সিরাজগঞ্জের এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। অভিযোগে প্রমাণ মেলার পর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে গত তিন মাস আগে বদলি করা হলেও এখনো বহাল তবিয়তে আছেন । এমনকি তিনি এখন ‘ডোন্ট কেয়ার’ নীতিতে চলছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
এবার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে না জানিয়ে একাধিক কাজ বাতিলের অভিযোগ উঠেছে ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মেসার্স হাসমতুল্লাহ এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অনৈতিক চাহিদা পূরণ না করায় ২ বছর ধরে পাথর মিক্সিং করে ফেলে রেখেছে। এরমধ্যে আরসিসি সম্পন্ন এবং কাজের বিলও গ্রহণ করেছে। রাস্তায় কার্পেটিং এর কাজের জন্য খোয়া দিয়ে রোলার করেছে। সেই কাজ বাতিল করে আবার দরপত্র প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।
এ নিয়ে স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বরাবর লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ এলজিইডিসহ একাধিক সূত্র বলছে,
সদর উপজেলাধীন সীমান্ত বাজার আরএইচডি হইতে রতনকান্দি জিসি পর্যন্ত রাস্তা মেরামত (চেইনেজ ০০মিঃ-৮৯০মিঃ), রোড আইডি নং-১৮৮৭৮২০০৮, টেন্ডার আইডি নং-৬১২৭৫৫,প্যাকেজ নং- e-Tender/LGED/Siraj/GOBM/21-22/W-61 কাজে মেসার্স হাসমতুল্লাহ এন্টারপ্রাইজ, উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ সঙ্গে ৮৩ লাখ ২২ হাজার ৬শ ৫০ টাকায় এলজিইডি চুক্তিবদ্ধ হয়।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স হাসমতুল্লাহ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোছাঃ সেলিনা খাতুন জানান, আমি কাজটির আরসিসি কাজ সম্পূর্ণ করেছি প্রায় ৪৩ লাখ টাকার বিলও গ্রহণ করেছি। রাস্তার কার্পেটিং এর কাজের জন্য খোয়া দিয়ে রোলারও করেছি। অফিসের উপস্থিতিতে পাথর মিক্সিং করি। হঠাৎ প্রকল্পের পাশেই চলমান পানি উন্নয়ন বোর্ডের যমুনা বাঁধের কাজ দ্রুত করার জন্য কাজটি স্থগিত রাখার জন্য বলেন উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। কাজ করার জন্য আজ ২ বছর ধরে আনা পাথর মিক্সিং অবস্থায় পড়ে আছে। আমরা সময়ে সময়ে কয়েকবার মৌখিক ও লিখিতভাবে নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপজেলা প্রকৌশলী অফিসে জানিয়েও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সেই কাজ আমাকে কিছুই না জানিয়েই বাতিল করেছে নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম। আমি শুনেছি সেই কাজ অন্য প্রকল্প দিয়ে পুনঃ দরপত্রের আহ্বান করেছে সফিকুল ইসলাম। সে বর্তমানে আমার ব্যাংক গ্যারান্টি ক্ষতির চেষ্টা করছে,আমাকে সামাজিক, আর্থিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করছে।
আলম নামের এক ঠিকাদার জানান, আমি মহিষলুটি হাট সেটের কাজ পাবনা এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ক্রয় করি। উক্ত কাজের সাইট, অফিস বুঝিয়ে দিতে পারে নাই। উল্টো সেই কাজ ডোন্ট কেয়ার করে বাতিল করা হয়েছে। এ কাজ শুরু না করেই ব্যাংক গ্যারান্টি, কাজ ক্রয় ও জরিমানা বাবদ আমি ১৫ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার জানান, কাটাগাড়ি থেকে রানীর হাট রাস্তার কার্পেটিং এর কাজ শুরু করি, এজন্য পাথর মিক্সিং করি। চুলাতে বিটুমিন রাখা আছে। আমার সেই কাজ জোরপূর্বক ভাবে বাতিল করেছে সফিকুল ইসলাম।
এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি মুঠোফোনে জানান, আমি বাহিরে আছি। এই কাজের আইডি নাম্বার না দেখে কিছুই বলতে পারব না।
অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী জুলফিকার আলী বলেন, আমি অভিযোগ পেয়েছি। সফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে আরো অনেক অভিযোগ শুনছি।