মোঃরিপন রেজা স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জঃ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালনরত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃমোস্তাফিজুর রহমান দিগন্ত শেষ পর্যন্ত বদলি হয়েছেন।মঙ্গলবার তাকে বদলি করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়।
ডাঃমোস্তাফিজুর রহমান দায়িত্ব পালনকালে অনিয়ম,দুর্নীতি,কমিশন বাণিজ্য,দালাল সিন্ডিকেট পরিচালনা,সরকারি হাসপাতালকে ব্যক্তিগত চেম্বারে রূপান্তরের অভিযোগ উঠে আসছিলো তার বিরুদ্ধে।স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মচারী ও কর্মকর্তাসহ চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে ছিলো চরম অসন্তোষ।স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত একাধিক ডায়গনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে ছিল তার মাসিক কমিশন চুক্তি।চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রয়োজন না থাকলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পাঠানো হতো ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে।এতে গরীব রোগীদের পড়তে হয় অর্থ সংকট ও বিপদে।ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর সাথে কমিশন চুক্তি থাকার কারনে,ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল চক্র হাসপাতালের অভ্যন্তর থেকেই রোগীদের টেনে নিয়ে যায় নির্ধারিত ডায়গনস্টিক সেন্টারগুলোতে।বিশেষ করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিকটবর্তী স্থান”নিরাময় ডায়গনস্টিক সেন্টার”এ তিনি নিয়মিত প্রাইভেট রোগী দেখতেন।তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ উঠেছে-স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ঠিকঠাকমতো চিকিৎসা না দিয়ে উন্নত চিকিৎসার কথা বলে নিরাময় ডায়াগনস্টিক সেন্টার তার চেম্বারে আসতে বাধ্য করা হয়।বিশেষ করে হাসপাতালের পাশে অবস্থিত ‘নিরাময় ডায়গনস্টিক সেন্টার’-এ তিনি নিয়মিত প্রাইভেট রোগী দেখেন।এমনকি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ছোটখাটো অপারেশন,ইনজেকশন ও প্লাস্টার বন্ধ করে তিনি এসব সেবা তার ব্যক্তিগত চেম্বারে চালু করেন-বিনিময়ে মোটা অঙ্কের অর্থ গ্রহণ করতেন।ইনজেকশনের মূল্য ৫০/৬০ টাকা থাকলেও রোগীদের জয়েন্টে পুশ করেন হাতিয়ে নিতেন ৩/৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। প্লাস্টার করার বিনিময়ে রোগীদের কাছ থেকে নেওয়া হতো ৪/৫ হাজার টাকা। সরকারি ওষুধ সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও নিয়মিতভাবে প্রেসক্রিপশনে লেখা হতো বাহিরের দামি ওষুধ-আর এসব ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে নেওয়া হতো বড় অঙ্কের সুবিধা।সরকারি ফিট সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে আসা রোগীদেরও পাঠানো হতো তার প্রাইভেট চেম্বারে,যেখানে ব্যক্তিগত প্যাডে ২/৩ হাজার টাকার বিনিময়ে সরবরাহ করতেন সেই সার্টিফিকেট।হাসপাতালের কিছু চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও স্টাফদের সঙ্গে গড়ে তোলা একটি প্রভাবশালী চক্রের মাধ্যমে তিনি হাসপাতালজুড়ে আধিপত্য বিস্তার করেন। কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুললেই সেই চক্রের মাধ্যমে শোকজ,বদলি বা অপপ্রচারে নিপতিত হতেন সংশ্লিষ্টরা।এমনকি স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সমালোচকদের হুমকি,ভয়ভীতি এবং অশালীন ভাষায় দমন করতেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।এই বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃশারমিন আহমেদ তিথি বলেন-আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান দিগন্তের উপর আনিত অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সরকারি আইনে বদলি করা হয়েছে।তিনি আরো বলেন-এ ধরনের কর্মকাণ্ডের যারা জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।