খায়রুল বাশার ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহে অবস্থিত সদর উপজেলার চর নিলক্ষিয়া ভাটিপাড়া গ্রামের শিক্ষানবিশ আইনজীবী মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ নাটকীয় হামলার শিকার হয়েছেন। তিনি তার খালাতো ভাইকে
শিহাব সরকারকে ২০২১ সালের মার্চ মাসে বিশ লাখ টাকা ধার দিয়েছিলেন। পারিবারিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্কের কারণে তাদের মধ্যে ব্যবসায়িক লেনদেনের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তার নিকট থেকে টাকা নিয়ে শিহাব সরকার ময়মনসিংহের তারাকান্দার অন্তর্গত কাশিগঞ্জ বাজারে মেসার্স জনতা এন্টারপ্রাইজ নামক দোকানে মাছ মুরগি ও গবাদি পশুর খাদ্যের ব্যবসা পরিচালনা করতে থাকে। টাকা পরিশোধের নির্ধারিত সময় আসলে খালিদ সাইফুল্লাহ ,শিহাব সরকারকে টাকা ফেরত দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু টাকা ফেরত না দিয়ে শিহাব সরকার নানা তালবাহানা শুরু করে। বিগত ২৮ শে মার্চ ২০২১ তারিখ, শিহাব সরকার , খালিদ মাহমুদ সাইফুল্লাহ কে ফোন করে। শিহাব সরকার ফোনে বলে ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর বাজারে সে পাওনা টাকা থেকে ছয় লক্ষ টাকা ফেরত দিবে। এই লক্ষ্যে শিহাব সরকার ও তার শশুর তোতা বেপারী ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্ধুর বাজারে খালেদ সাইফুল্লাহকে নিয়ে মোটরসাইকেল যোগে রওনা করে, কিন্তু প্রতিশ্রুত টাকা ফেরত দেয়নি। ফেরার পথে ঘোষগাও গামারিয়া বিলের কাছে শিহাব সরকার ও তার শশুর তোতা ব্যাপারী শিক্ষানবিশ আইনজীবী খালিদ মাহমুদ সাইফুল্লার উপর এলোপাতাড়ি মারপিট ও মাথায় মারাত্মক আঘাত করে ফলে তিনি অজ্ঞান হয়ে যায় । তিনি প্রায় তিন মাস স্মৃতিশক্তিহীন ছিলেন। জ্ঞান ফেরার পর তিনি জানতে পারেন তাকে ধোবাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শমরিতা বেসরকারি হাসপাতাল পান্থপথ ,ঢাকা, আগারগাঁও নিউরোসাইন্স হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। চিকিৎসা কালীন সময়ে তিনি আইসিইউ ও লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। তার পরিবারের নিকট চিকিৎসকের সনদপত্র ছিল। পরবর্তীতে তার বাবা কোর্টে সি আর মামলা দাখিল করিলে বিজ্ঞ অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটিকে জিআর মামলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে ও তদন্ত করতে কোতোয়ালি মডেল থানাকে নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার সাব ইন্সপেক্টর মোঃ আবুল কাশেম মামলাটি তদন্ত করেন। মামলার আসামিদের গ্রেফতার করার জন্য ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি অফিস থেকে একটি নির্দেশনা ছিল(স্মারক নং অপরাধ/১৫৬৫), তারিখ ৬/৬ /২০২১। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও অজ্ঞাত কারণে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়নি। মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদনে আইও সাব ইন্সপেক্টর মোঃ আবুল কাশেম ধোবাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের জবানবন্দী গ্রহণ করেননি। তদন্তকারী কর্মকর্তা আবুল কাশেম আদালতে অসঙ্গতিপূর্ণ রিপোর্ট দিলে তার রিপোর্টের বিরুদ্ধে ভিকটিমের বাবা কোর্টে না রাজি আবেদন করেন। পরবর্তীতে আদালত মামলাটি পিবিআই ময়মনসিংহকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পি বি আই উপ পরিদর্শক অমিতাভ দাস মামলাটি তদন্ত করেন এবং ১২-১১-২০২২ তারিখ আদালতে রিপোর্ট পেশ করেন। পিবিআই পরিদর্শক খালেদ সাইফুল্লার মোবাইলে থাকা উক্ত ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ও প্রমাণাদি নষ্ট করেন বলে ভিকটিমের মা অভিযোগ করেছেন। এ রিপোর্টে আইও অমিতাভ দাশ আসামীগণ কর্তৃক প্রভাবিত হয়ে রিপোর্ট প্রদান করেন বলে, ভিকটিমের মা অভিযোগ করেন। রিপোর্টের বিরুদ্ধে ভিকটিমের বাবা আদালতের পুনরায় না রাজি পিটিশন করেন। আদালত মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য সিআইডি ময়মনসিংহ কে নির্দেশ দেন। বর্তমানে মামলাটি সিআইডি ময়মনসিংহের অধীনে তদন্তাধীন রয়েছে। বর্তমানে ভিকটিম ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ করেছেন। আসামিগণ যেকোনো সময় তাদের ওপর হামলা করতে পারে। ভিকটিমের মা সংবাদ সম্মেলন করে সাংবাদিক দের জানান। ন্যায় বিচারের স্বার্থে সঠিক তদন্তের জন্য ভিকটিম মোমেনশাহী প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে ৯-১০ ২০২৩ তারিখ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। ন্যায় বিচারের স্বার্থে ও সঠিক তদন্তের জন্য তিনি বাংলাদেশ সরকারের উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। তিনি তার ওপর হামলার সুস্থ তদন্ত , পাওনা টাকা পুনরুদ্ধার ও ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করেন।