বিপ্লব সাহা খুলনা ব্যুরো:
হায়েনার ছোবলে এক মহাকালের জীবন সমাপ্তিতে বাকরুদ্ধ বাংলাদেশ শোকে নিথর সমগ্র জাতি। দেশ রক্ষার সংগ্রামে বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন এক বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর যে কন্ঠকে অবরুদ্ধ করতে পারেনি কোন অপশক্তি, তিনি রাজনৈতিক নিষ্ঠার সাদা মনের মানুষ গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে কোথাও মাথা নত করেনি অথচ গেল ১৭ বছরের হায়না রুপি ফ্যাসিস্ট হাসিনার এই মহীয়সী নারী প্রতিহিংসার শিকার হয়ে অপচিকিৎসার নামে গুপ্ত নির্যাতনে ধুকেধুকে মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে এসে দীর্ঘদিন অসুস্থ থেকে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রজ্বলিত আলোর শিখা।
রাজধানী এভার কেয়ার হাসপাতালে ৩০ ডিসেম্বর ভোর ছয়টায় চিরদিনের জন্য নিভে যাওয়ার মধ্য দিয়ে দেশজুড়ে শোকের অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে। একই সাথে রাজনৈতিক অঙ্গনের উজ্জ্বল নক্ষত্র এবং দেশ হারালো অকুতোভয়ী আপসহীন একজন নেত্রীকে, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি হারালন অভিভাবক মাতৃহারা হলো জিয়া পরিবারের একমাত্র সন্তান তারেক রহমান। এদিকে দেশের সর্বস্তরের মানুষের অভিযোগে সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিএনপির চেয়ারপার্সন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর পেছনে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার সরকারের পৈচাশিক মানসিকতার মদদ রয়েছে।
খুলনার একজন বিজ্ঞ আইনজীবী বলেছেন খালেদা জিয়াকে প্রহসনমূলক ও সাজানো রায়ে জেলখানায় পাঠিয়ে অকথ্য নির্যাতন করা হয়েছে। তার বিষয়ে আপিল বিভাগের (খালাসের) রায়ে বারবার বলা হয়েছে, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। তা না হলে ওনাকে আমরা হয়ত এত তাড়াতাড়ি হারাতাম না। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বেগম জিয়ার মৃত্যুর পেছনে ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের দায় রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকারের যা করার ছিল সর্বোচ্চটা করেছে। প্রধান উপদেষ্টা ব্যক্তিগতভাবে সবসময় তার খোঁজখবর নিয়েছেন। তার অবস্থা ঠিক থাকলে সরকারের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশেও পাঠানো হতো। আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা যদি বেগম জিয়াকে বছর দুই-এক পেতাম তাহলে কিছু করা যেতো। তবে আল্লাহর ইচ্ছায় উনি চলে গেছেন, দেশের মানুষের সম্মান, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা নিয়ে বিদায় নিয়েছেন। এদিকে বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা ও দাফন সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক একটি বৈঠক চলছে ।তাছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে তাকে দাফন করা হবে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পাশেই। আজকে মন্ত্রিপরিষদের এক জরুরী সভায় প্রধান উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জানাজার বিষয়ে সব ধরনের সহায়তা করা হবে। সভায় উপদেষ্টা বেগম খালেদা জিয়ার স্মৃতিচারণ করেন। সর্বশেষ সশস্ত্র বাহিনী দিবসে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তার দীর্ঘক্ষণ কথা হয়েছিল।
তিনি বলেন, জাতির এই বিশেষ মুহূর্তে খালেদা জিয়ার খুব প্রয়োজন ছিল। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে তার অবস্থান অক্ষয় অবিনশ্বর হয়ে থাকবে। ওনার জানাজার নামাজে সেটা শৃঙ্খলার সঙ্গে ভাবগম্ভীর পরিবেশে পালন করার অনুরোধ করছি।
সভায় খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত (৩১ ডিসেম্বর এবং ১ ও ২ জানুয়ারি) তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সারাদেশে সাধারণ ছুটি থাকবে।
মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও Password সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।

