রাসেল কবির//বরিশাল জেলার হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জে মেঘনা নদীর তলদেশ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হুমকির মুখে পড়েছে হিজলার গৌরবদী এবং মেহেন্দীগঞ্জের গবিন্দপুর ও উলানিয়া ইউনিয়নের বিশাল এলাকা।
এলাকাবাস আশঙ্কা—আগামী বর্ষাতেই নদীগর্ভে বিলীন হতে পারে কয়েক হাজার পরিবার, কৃষিজমি এবং সরকারের ৪২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রক্ষাবাঁধ। হাইকোর্টে রিট থাকা সত্ত্বেও বরিশাল জেলা প্রশাসন ও বিভাগীয় কমিশনার ১০০ একরসহ সাতটি বালুমহাল অবৈধভাবে ইজারা প্রদান করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত ৫ আগস্ট থেকে প্রতিদিন ১৫০–২০০ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে দ্রুত বাড়ছে নদী ভাঙন।
স্থানীয়রা বলছেন, “রক্ষকই যখন ভক্ষকের ভূমিকায়, তখন জনগণের জানমাল রক্ষা করবে কে?” হিজলার সৈয়দখালী–সাওড়া মৌজার বালুমহাল নিয়ে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ ও বালু উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ ১২ নভেম্বর জারি হলেও বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী ও রিটকারী সৈয়দ আকবর আলী চৌধুরী।বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)–র বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়কারী রফিকুল আলম বলেন, “জরিপ ছাড়া বালুমহাল ঘোষণা করা আইনবিরোধী। এতে নদী ভাঙন ও পরিবেশ ধ্বংসের ঝুঁকি তৈরি হয়। হাইকোর্টের নির্দেশ মানা হয়নি—এটি গুরুতর অন্যায়।” বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী জরিপ রিপোর্ট, পরিবেশগত মূল্যায়ন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মতামত ছাড়া কোথাও বালুমহাল ঘোষণা করা যায় না।
কিন্তু বরিশালে ৮টি বালুমহালের মধ্যে ৭টিতেই কোনো জরিপ হয়নি বলে অভ্যন্তরীণ নৌ–পরিবহন কর্তৃপক্ষের হাইড্রোগ্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।
অবৈধ বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোস্টগার্ড গত ১১ মে বিশেষ অভিযানে ৫৩টি ড্রেজার, ৩৬টি বাল্কহেড, এক কোটি ১২ লাখ টাকাসহ ছয়জনকে আটক করে নবাগত জেলা প্রশাসক খায়রুল আলম সুমন জানান, “আমি বিষয়গুলো জানছি। নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।” এলাকার সচেতন মহলের দাবি—হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য ও অবৈধ ইজারায় জড়িত কর্মকর্তাদের দ্রুত তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনা হোক।

