রাজু আহমেদ, শালিখা (মাগুরা) প্রতিনিধি:
কবি জসীম উদ্দিনের আসমানী কবিতার মতই, ‘বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছাওনি, একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি৷’ এই কবিতার মতই বাস্তবে একটি মানুষ গত ৫ বছর যাবৎ গাছের ডালে বাসা বানিয়ে বসবাস করে আসছেন৷
ঘটনাটি মাগুরার শালিখা উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের৷ যশোর-মাগুরা মহাসড়কের পাশ্ববর্তী কয়েকটি গাছের উপর পাখির বাসার মত ডালপালা ও কাঠখুটি দিয়ে বাসা বানিয়ে, গাছেই কাটছে মধ্যবয়সী মানসিক প্রতিবন্ধী লিয়াকত আলীর জীবন৷
লিয়াকত আলী শালিখা উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের মিয়া পাটোয়ারির ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মানসিক প্রতিবন্ধী লিয়াকত আলী যশোর-মাগুরা মহাসড়কের পাশ্ববর্তী কয়েকটি গাছের উপরে পৃথকভাবে ঢালপালা ও কাঠ দিয়ে নিজের থাকার জন্য তৈরি করেছেন পাঁচটি বাসা৷মহা সড়কের ২ধারে ৩টা ও নিজের বাড়ির সামনে ২টা।গাছের গাছের ডালপালা বিক্রি করে ও মানুষের বাড়ী বাড়ী গিয়ে নারকেল ডাব ও তুলা পেড়ে দিয়ে যা কিছু টাকা পায় তাই দিয়েই নিজের খাবারের ব্যাবস্থা করেন তিনি ৷সে কখনো ভালো আবার কখনো খারাপ তবে কারো ক্ষ তি করে না।
স্থানীয়রা জানান, লিয়াকত আলী যখন সুস্থ ছিলেন, তখন রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে সংসার চালাতো।ড্রাইভার থাকা অবস্থায় বিবাহ করেছিল। নেশা করার জন্য বউ চলে যায়। তার কোন সন্তান আসেনি।গাড়ি চালানোর সময় অতিরিক্ত নেশা করার কারণে হঠাৎ করে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। তারপর থেকে গাছেই কাটছে তার জীবন। স্থানীয়রা আরো জানান, স্ত্রী-সন্তান না থাকায় এভাবেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন তিনি । গাছেই তার বাড়ী, গাছেই চলে তার সংসার৷ সে গাছে গাছে পাঁচটি বাসা বানিয়ে দিন-রাত যাপন করেন সেখানে৷ রোদ, বৃষ্টি ও ঝড় যাই হোক না কেন মানসিক প্রতিবন্ধী লিয়াকত আলী তার গাছে বানানো বাসায়ই অবস্থান করেন৷
চিড়া, মুড়ী, পানি খেয়ে কোনরকম জীবন বাঁচিয়ে মুক্ত বিহঙ্গের মত গাছের ডালে বসবাস করছেন তিনি। স্বাভাবিক মানুষের মতোই একটা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা দরকার বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।