ঢাকাMonday , 1 September 2025
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অভিযোগ
  4. অর্থনীতি
  5. আইন আদালত
  6. আটক
  7. আন্তর্জাতিক
  8. আবহাওয়া
  9. ইতিহাস
  10. কবিতা
  11. কুষ্টিয়া
  12. কৃষি
  13. খুন
  14. খেলাধুলা
  15. চাকুরী
আজকের সর্বশেষ সবখবর

৩৮ বছরের শিক্ষকতা শেষে পথের ধারে লেবু বিক্রি,কোনো কাজই ছোট নয়’ বলছেন আবদুল লতিফ।

দেশ চ্যানেল
September 1, 2025 3:41 pm
Link Copied!

শার্শা উপজেলা প্রতিনিধি যশোর

যশোরের সার্কিট হাউসের সামনে পথের ধারে ছোট্ট টেবিলে সাজানো কয়েক ঝুড়ি কাগজি লেবু। এর পাশেই আছেন সাদা চুলে ভরপুর এক বৃদ্ধ মানুষ। তিনি শিক্ষক আবদুল লতিফ (৭৪)। ৩৮ বছর ধরে chalk আর blackboard হাতে শত শত শিক্ষার্থীকে মানুষ করেছেন যিনি, আজ তিনি জীবনের সন্ধিক্ষণে বসে লেবু বিক্রি করে সংসার চালান।

১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত যশোর সদর উপজেলার পাঁচবাড়িয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক ছিলেন আবদুল লতিফ। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে স্নাতক হলেও ইংরেজি পড়ানোর দক্ষতায় তিনি শিক্ষার্থীদের মাঝে ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়। দীর্ঘ শিক্ষকতা জীবনে যশোর শিক্ষা বোর্ডের তালিকাভুক্ত পরীক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৪ সালে অবসরে যান তিনি।

অবসরের টাকায় শহরের পোস্ট অফিস পাড়ায় দুইতলা একটি বাড়ি নির্মাণ করেন। অবসরের পর বাড়িভাড়া ও টিউশনি করেই সংসার চলত। তবে কয়েক বছর আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় টিউশনি বন্ধ হয়ে যায়। তখনই সংসার চালানোর নতুন উপায় হিসেবে বেছে নেন লেবু বিক্রি। গত এক বছর ধরে প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বাজার থেকে লেবু কিনে সার্কিট হাউসের সামনে বসে বিক্রি করেন তিনি। এতে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ টাকা আয় হয়। বাড়িভাড়ার সঙ্গে এই সামান্য আয়েই চলে তাঁর সংসার।

শিক্ষক লতিফ বলেন, “আমি ৩৮ বছর শিক্ষকতা করেছি, শত শত মেয়েকে মানুষ করেছি। তাদের অনেকেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। মাঝে মাঝে তারা আমাকে দেখতে আসে, আমার বর্তমান অবস্থা দেখে কষ্ট পায়। কিন্তু আমি কোনো আক্ষেপ করি না। কারণ আমি বিশ্বাস করি—কোনো কাজই ছোট নয়। বাড়িতে বসে থাকলে একাকী লাগে, এখানে বসলে কিছু মানুষের সঙ্গে আলাপ হয়, সেটাও এক ধরনের সঙ্গ।”

স্ত্রী মারা গেছেন তিন বছর আগে। এখন তিনি থাকেন ছেলের পরিবার ও বড় ভাইয়ের সঙ্গে। ছেলে ঢাকায় চাকরি করেন। নাতি-নাতনি ও জ্যাঠাসহ পরিবার মিলেই তাঁর সংসার।

পাঁচবাড়িয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক মো. আবু তাহের বলেন, “আমি ২০১৩ সালে বিদ্যালয়ে যোগ দিই। পরের বছরই লতিফ স্যার অবসরে যান। তিনি বিকম পাস হলেও ইংরেজি পড়াতেন। শিক্ষক হিসেবে ছিলেন সৎ, নিষ্ঠাবান ও একজন ভালো মানুষ। অসুস্থতার কারণে এখন তাকে কষ্টে থাকতে হচ্ছে, মাঝে মাঝে রাস্তায় দেখা হয়।”

আজ জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও আবদুল লতিফের চোখেমুখে কোনো হাহাকার নেই। বরং তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস—সততার সঙ্গে যে কোনো কাজ করাই জীবনের সবচেয়ে বড় সম্মান।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
  • Design & Developed by: BD IT HOST