মশিউর মিলন, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি:
দুদিন পরেই মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল ফিতর। এর মধ্যে আকস্মিক ঝড়ে তছনছ হয়ে গেছে ৭শতাধিক পরিবারের ঈদ উৎসব। পটুয়াখালীর বাউফলে গতকাল রবিবার (৭মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় ৩৫ মিনিট স্থায়ী কাল বৈশাখী ঝড়ে ৬শতাধিক বসত ঘর আংশিক এবং শতাধিক বসত ঘর সম্পুর্ন বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে ভুক্তোভোগী পরিবার গুলো। অর্ধশত নারী-পুরুষ আহত হওয়ার পাশাপাশি ঘটেছে প্রাণহানীর ঘটনা। এখনো নিখোঁজ রয়েছে ইসমাইল রাঢ়ী নামে ১জেলে।
আকস্মিক ঝড়ে রাতুল নামে এক কিশোর, সুফিয়া বেগম নামে এক নারী এবং ইব্রাহিম ফরাজি নামে এক জেলে নিহত হয়েছেন। নিহত রাতুল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের রায় তাঁতের কাঠি গ্রামের জহির সিকদারের ছেলে। সুফিয়া বেগম উপজেলার দাশপাড়া ইউনিয়নের চরআলগী গ্রামের মৃত আহম্মেদ প্যাদার স্ত্রী। নিহত ইব্রাহিম উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরওয়াডেল গ্রামের খানকা বাজার এলাকার বাসিন্দা মো: মন্নান ফরাজীর সেজো (৩য়) ছেলে। নিহতের পরিবারগুলোতে চলছে শোকের মাতম।
বাউফল পৌর এলাকার ৭নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সত্তোরর্ধো বিধবা ফুলভানুর ১৪ জনের সংসার। সবাইকে নিয়ে এক ঘরে বসবাস করতেন তিনি। গতকালের কাল বৈশাখী ঝড়ে গাছ পড়ে সম্পূর্ন ঘর বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এতে ছেলে, পুত্রবধু, নাতি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ফুলভানু। ফুলভানুর পুত্রবধু মনজিলা বেগম জানান, ঘর ভেঙ্গে যাওয়ায় রাতে খোলা জায়গায় থেকেছেন। ঘরে খাবার না থাকায় ছোট ছোট বাচ্ছা এবং বৃদ্ধ শাশুড়িকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তিনি আরো জানান, সাহরী না খেয়ে তারা আজকে রোজা থেকেছেন। দ্রুত সরকারি সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের পূর্ব কালাইয়া এলাকার মো: আবদুল জলিলের ঘরটি ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে গেছে। এখন ভিটিতে ২টি চৌকি ছাড়া খাবার, কাপড় কোন কিছুই অবশিষ্ট নেই। স্ত্রী এবং ৩বছরের শিশু পুত্র নিয়ে মানবেতর অবস্থায় রয়েছেন জলিল। মো. আবদুল জলিল দেশ চ্যানেলকে জানান, গতকাল থেকে এখন পর্যন্ত আমরা না খেয়ে আছি। ৩বছরের ছেলেটার জন্য বেশি কষ্ট হচ্ছে। সরকারি সহযোগিতা না পেলে নতুন ঘড় তোলা আমার পক্ষে সম্ভব হবে না।
এবিষয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বশির গাজি দেশ চ্যানেলকে বলেন, আমরা প্রাথমিক ভাবে ৭শ’র মতো ঘরের তথ্য পেয়েছি এর মধ্যে ৬শতাধিক ঘড় আংশিক এবং শতাধিক ঘড় সম্পূর্ন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা চলমান রয়েছে। ২হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। নতুন ঘড় নির্মানের ক্ষেত্রে নগদ টাকা, ঢেউটিন ছাড়াও প্রয়োজনীয় সরকারি সহযোগিতা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।