মো: জাকির হোসেন নীলফামারী প্রতিনিধি:
স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনি মুসলমানদের প্রতি সহমর্মিতা স্বরুপ সংহতি প্রকাশ করে শনিবার জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করেছে সরকার। এজন্য নিয়মানুযায়ী সকল সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধ নমিত রাখা হবে। সেই সিদ্ধান্তকে অমাণ্য করে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পূর্ণভাবে পতাকা উড়ানো হয়েছে। আর অন্যটিতে একেবারেই উত্তোলন করা হয়নি।
শনিবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১২ টায় নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের উত্তর সোনাখুলী এলাকায় নেছারিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা যায়। এসময় বিদ্যালয়টিতে কাউকেই পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে মোবাইলে জানানো হলেও তিনি গুরুত্ব না দিয়ে দাওয়াতে আত্মীয়ের বাড়িতে আছি বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
এদিকে একই চত্বরে অবস্থিত ছমির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে পতাকা উত্তোলনই করা হয়নি। অথচ প্রতিষ্ঠানটিতে ওই মূহুর্তে ৩ টি পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। এ উপলক্ষে ডিজির প্রতিনিধি এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও স্কুলের সভাপতি জাতীয় পার্টি নেতা ঠিকাদার জয়নাল আবেদীন উপস্থিত ছিলেন।
এসময় প্রতিষ্ঠান খোলা অথচ পতাকা উত্তোলন করা হয়নি কেন জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক পুলিন চন্দ্র রায় বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় এমনটা ঘটেছে। তাছাড়া আজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ তাই বিষয়টি খেয়াল করা হয়নি। সভাপতি এনিয়ে কোন কথা বলতে পারবেন না বলে জানান।
এমতাবস্থায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম ও ডিজির প্রতিনিধি সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম ফারুক স্কুলের প্রধান শিক্ষককে পতাকা উত্তোলনে তাড়া দেন। এতে তিনি পিয়নকে নির্দেশ দিলে তরিঘরি একটি পরিত্যক্ত কক্ষে পতাকা আনতে যায়। এসময় দেখা যায় পতাকাটি স্টিলের স্টান্ডে বাধা অবস্থায় টয়লেটের দরজার সাথে অবমাননাকরভাবে রাখা। বাতাসে টয়লেটের ভিতরে উড়ে যাচ্ছে আবার পাশে থাকা বেসিনের নোংরায় পড়ছে।
বিষয়টি উপস্থিত সরকারি কর্মকর্তাদ্বয়কে জানালে শিক্ষা অফিসার দ্রুত ছুটে গিয়ে তা সচক্ষে দেখেন এবং এভাবে রাখা ঠিক হয়নি বলে শিকার করেন। কিন্তু তিনি এব্যাপারে প্রতিষ্ঠান প্রধান বা সংশ্লিষ্ট কাউকে কোন প্রকার দায়ী করে এজন্য ব্যবস্থা নেননি। বরং ডিজির প্রতিনিধিকে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন। তবে যাওয়ার আগে তাঁরা দুজন পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পতাকা অর্ধ নমিত করেন।
অন্যদিকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাকির হোসেন সরকারকে নেছারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পতাকা অর্ধ নমিত না রাখার বিষয়ে অবগত করা হলে তিনি বলেন, এটা অনভিপ্রেত। এত শেখানোর পরও যদি শিক্ষকরা এমন ভুল করেন তাহলে আর কি করার আছে? এজন্য তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন।
এর কিছুক্ষণ পর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজিয়া সুলতানা আঁখি মুঠোফোন কল ব্যাক করে বলেন, এতে আমার কোন দোষ নেই। পিয়নকে নির্দেশ দিয়ে এসএমএস করেছিলাম। কিন্তু সে অর্ধ নমিত করার কথা ভুলে গেছে। তাই এমন হয়েছে। বন্ধের দিন হওয়ায় আমিও যাইনি। তাছাড়া দাওয়াত বাড়িতে আসায় যেতে পারিনি। এজন্য তাহলে দায়ী কে জানতে চাইলে তিনি আগের মতই সদুত্তর না দিয়েই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।