বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
১৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরি গণতন্ত্রের মানস কন্যা দেশ উন্নয়নের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ পাঁচ বছর পর খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োজনে
মহা সম্মেলন ও বিভাগের ২৪টি প্রকল্প উদ্বোধন করার লক্ষ্যে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
এ আগমন।
এবং তানার আগমন ও মহাসম্মেলন খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে দেশ উন্নয়নের অন্যতম মেঘা প্রকল্প দক্ষিণ বাংলার ১৯ জেলার মানুষের ভাগ্যর দ্বার উন্মোচন এর সংযোগ দেশের ১৭ কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু ও নৌকার আদলের মঞ্চে এই মহা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর খুলনায় আগমন উপলক্ষে খুলনা নগরীর প্রধান প্রধান প্রবেশ দ্বার সহ জেলা জুড়ে বিভিন্ন নেতাকর্মীরা প্রায় শতাধিক তোরণ তৈরি করেছে। পাশাপাশি খুলনাকে সাজিয়েছে বর্ণিল সাজে।
১৩ তারিখের মহাসম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক দফায় দফায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে কাউন্সিলার ও কর্মীদের সাথে মত বিনিময় করছে।
প্রধানমন্ত্রীর খুলনায় আগমন নিয়ে বিভিন্ন পর্যালোচনায় তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ পাঁচ বছর পরে খুলনায় জনসভার লক্ষ্যে আসছেন এবং সাথে ২৪ টি প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। এই মহাসম্মেলন জনসমুদ্রে পরিণত করে জনস্রোতে বিরোধীদলের অপশক্তিকে ভাসিয়ে দিতে হবে। তিনি আরো বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ বাংলার মানুষদের ভাগ্যে পরিবর্তন করেছেন। দক্ষিণ অঞ্চল তথা সারা দেশের যোগাযোগের এক উন্নয়ন অবকাঠামোর রূপ হিসেবে পদ্মা সেতু দৃশ্যমান করেছে। বিশেষ করে দক্ষিণবাংলার ১৯ জেলার মানুষদের জন্য এটি একটি আশীর্বাদ। পাশাপাশি তিনি খুলনার সকল জনসাধারণ ও নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনে মহা সম্মেলন সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য সবাইকে প্রস্তুত থেকে প্রধানমন্ত্রীকে সুন্দর একটি মহাসম্মেলন উপহার দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীর খুলনায় আগমন উপলক্ষে দলীয় নেতাকর্মী সহ সাধারণ জনগণের মাঝে এক উৎসব আমেজের উৎফুল্লতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত এক সপ্তাহ ধরে খুলনা নগরী ও জেলা শহর জুড়ে কঠোর নিরাপত্তার বেষ্টনী গড়ে তুলেছে।
এ লক্ষ্যে খুলনা পুলিশ কমিশনার মোঃ মোজাম্মেল হক বলেন প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা দক্ষিণ বাংলা তথা সারা দেশের মানুষের কাছে আশীর্বাদ। কারণ তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করার পর থেকেই দেশে একের পর এক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছেন। তানার প্রতিটা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড দেশের জনগণের অন্ধ চক্ষুর জ্ঞান উন্মোচন করেছে এবং অন্ন বস্ত্রের ব্যবস্থা হয়েছে। দেশের কোন মানুষ আজ অনাহারে নাই বাংলাদেশের কোন পরিবারই কর্মহীন অবস্থায় নাই । তাই প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে খুলনার জেলা প্রশাসক পুলিশ সুপার এবং পুলিশ র্যাব বিজিবি ডিবি সিটিএসবি গোয়েন্দা সংস্থা আনসার বাহিনী এবং দলীয় নেতাকর্মীরা সর্বদাই সক্রিয় অবস্থানে থেকে বিরোধী দলের কঠোর কর্মসূচি অবরোধের মধ্যেও যাতে করে তারা কোনো নাশকতা সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে এ মহা সম্মেলনের আয়োজন সম্পন্ন করা হবে।
এদিকে খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন আগামী ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী ২২ টি প্রকল্প উদ্বোধন ও ২ টি প্রকল্পের ভীত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন। প্রকল্প গুলোর তালিকা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে প্রেরিত উদ্বোধনযোগ্য প্রকল্পের তালিকা প্রস্তাবিত রয়েছে মোট ২২ টি প্রকল্প।
এর মধ্য গণপূর্ত বিভাগে রয়েছে
৮ টি। সেগুলো হলো নগরীর সাউথ সেন্টার রোডে ১৯৭১ গণহত্যা নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ভবন নির্মাণ কাজ, শামসুর রহমান রোডে সিভিল সার্জন এর অফিস ভবন ও বাসভবন। খুলনার পাইকগাছা উপজেলা একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, কাজ খুলনা শিক্ষা প্রশিক্ষণ দপ্তর সংস্কার আধুনিকায়ন কাজ। খুলনায় বিএসটিআইর ১০ তলা আঞ্চলিক অফিস স্থাপন ভবন। বিটা খুলনা কেন্দ্র ১০ তলা বিশিষ্ট নারী হোস্টেল ভবন নির্মাণ। পাইকগাছা উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ সিভিল সেনেটারী ও বৈদ্যুতিক কাজ। নগরীর দৌলতপুরে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের চারতলা ছাত্র হোস্টেল নির্মাণ কাজ। সুন্দরবন পশ্চিম বনবিভাগের প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে সুন্দরবন পরিবেশবান্ধব পর্যটন ইকো ট্যুরিজম সুবিধা সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত শেখেরটেক ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকল্প রয়েছে দশটি তা হলো ডুমুরিয়া টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ পঞ্চম তলা একাডেমিকাম চারতলা প্রশাসনিক ওয়ার্কশপ ভবন নির্মাণ কাজ। বয়রা মাধ্যমিক বিদ্যালয় খুলনা কলেজিয়েট স্কুল, সরকারি এল বি কে ডিগ্রী মহিলা কলেজ, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, চালনা বাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তালিমুল মিল্লাত রহমতিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, নজরুল নগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, এবং আর আরএফ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর প্রতিটিতে ছয় তলা একাডেমি ভবন নির্মাণ কাজ। আড়ংঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চার তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের এলজিইডি প্রকল্প হচ্ছে ডুমুরিয়া উপজেলার চচুরিয়া শিবনগর সড়ক ভদ্রা নদীর ওপর ৩১৫.৩০ মিটার দীর্ঘ সিপিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ কাজ। উদ্বোধন প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে খুলনা সিটি কর্পোরেশনের গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা উন্নয়ন ও পুনর্বাসন প্রকল্প এবং খুলনা শহরে জলবদ্ধতা দূরীকরণের ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প এর আওতায় খালিশপুর বিআইডিসি রোড ফুটপাত নির্মাণ সহ রাস্তা প্রশস্ত করণ ও পুনঃনির্মাণ কাজ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রকল্পের তালিকায় রয়েছে নগরীর দৌলতপুরে অতিরিক্ত পরিচালকের ছয় তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত অফিস ভবন।
