নজরুল ইসলাম, জেলা প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ) আসনের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের অভিযোগে তাড়াশ থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
গত শুক্রবার রাত ও আজ শনিবার সকালে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৫০ জনকে এ দুটি মামলায় আসামী করা হয়েছে।
উপজেলার সগুনা ইউনিয়নে গত শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল চারটায় আওয়ামীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ (নৌকা প্রতীক) ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্রপ্রার্থী মো. সাখাওয়াত হোসেন সুইটের (ঈগল প্রতীক) সমর্থকদের মাঝে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে মর্মে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে তাদের পূর্ব নির্ধারিত নির্বাচনী জনসভা থাকার পরও ঈগলের প্রার্থী ও সমর্থকরা এ ঘটনার সূত্রপাত করেন। এ ঘটনায় নৌকার সমর্থক হাসান আলী (৪০) নামের একজন আহত হয়ে তাড়াশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। এ ঘটনায় মঞ্জিল তালুকদার নামে নৌকার এক সমর্থককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে কুন্দইল বাজারের অবস্থিত সগুনা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে নৌকার প্রার্থী অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজের পথসভার আয়োজন করেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। ওই পথ সভা শুরুর আগেই ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সাখাওয়াত হোসেন সুইট তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বিকেল তিন টার দিকে সেখানে গণ সংযোগ করতে যান। এ সময় ঈগলের সমর্থক আইয়ুব আলী (৫৫) হ্যান্ড মাইকে আওয়ামী লীগের পার্টি অফিস লক্ষ্য করে উচ্চস্বরে প্রচার চালাতে থাকেন। এতে নৌকার সমর্থকরা তাকে অন্যত্র প্রচার চালাতে বলতে উভয় পক্ষের মাঝে বাকবিতন্ডা ও এক পর্যায়ে হাতাহাতি শুরু হলে স্থানীয়রা দুই পক্ষকে দু’দিকে সরিয়ে দেয়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ও ম্যাজিষ্ট্রেট ঘটনাস্থলে গিয়ে মো. মঞ্জিল তালুকদার নামের নৌকার এক সমর্থককে আটক করে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঈগলের সমর্থক মো. আইয়ুব আলী গতকাল শুক্রবার রাতে বাদী হয়ে ছয় জনকে আসামী করে তাড়াশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
অপরদিকে নৌকার সমর্থক মো: কাওসার আলম বাদী হয়ে আজ (শনিবার) সকালে সাত জন কে আসামী করে আরেকটি মামলা দেন। উভয় মামলা নামীয় আসামীদের পাশি আরও ৫০ জন কে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে।
নৌকার প্রার্থী অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ বলেন, তার পূর্ব নির্ধারিত পথ সভায় তিনি যাবার আগেই স্বতন্ত্রপ্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকরা এ ঘটনা ঘটায়। এটা ছিল তাদের পূর্ব পরিকল্পিত। নির্বাচন কে প্রশ্ন প্রশ্নবিদ্ধ করাতেই তারা এমন কর্মকান্ডে লিপ্ত হচ্ছেন।
ঈগলের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সাখাওয়াত হোসেন সুইট বলেন, শান্তিপূর্ণ প্রচারণায় নৌকার সমর্থকরা অতর্কিতভাবে তার সমর্থদের উপর হামলা করে। আমরা আইনের আশ্রয় নিয়েছি। নেতা-কর্মীদের ধর্য্য ধরতে বলেছি।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো.আরিফুল ইসলাম মন্ডল ঘটনার সতত্যা স্বীকার করে বলেন,স্বতন্ত্রপার্থীর পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলা একদিন আগে হওয়ায় ওই মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। নৌকার প্রার্থীর পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ আজকে তাড়াশ থানায় দিয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।