বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বঙ্গোপসাগর ও মোংলা বন্দর সহ খুলনা বিভাগ জুড়ে ইতোমধ্য তাণ্ডব চালাচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ ফলে ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। ঘূর্ণিঝড় রেমালের তান্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে বঙ্গোপসাগর সুন্দরবন, মোংলা, শরণখোলা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা এলাকার উপর দিয়ে সব থেকে বেশি ক্ষয় ক্ষতির আশঙ্কার কথা ও উল্লেখ করেছে আবহাওয়াবিদরা এরই মধ্য আজ ২৬ মে ভোর থেকে খুলনার আকাশে ঘন মেঘ গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি সাথে দমকা হাওয়া থাকলেও সকাল দশটা নাগাদ আবারও আকাশ স্বাভাবিক হয়ে রোদ্রু ওঠে গরমের তীব্রতা বাড়ে অথচ মধ্যো দুপুর থেকে আবারও খুলনা জেলার কিছু কিছু এলাকার ওপর দিয়ে ঝড় সহ বৃষ্টি মেঘে এটেধরেছে আকাশ । থেমে থেমে দমকা হাওয়া বইছে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে করে আতঙ্কে রয়েছে খুলনার উপকূলীয় এলাকার জনগণ। এদিকে দেশের বিজ্ঞ আবহাওয়াবিদরা ইতোমধ্য জানিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের দিকে ক্রমান্বয়ে ঘনীভূত হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ যেটি বর্তমানে
পূর্বমধ্যো বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিম মধ্যো বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উল্লেখিত এলাকা অতিক্রম করে আজ গভীর রাতের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞ কর্তারা।পাশাপাশি সমুদ্র নদী বন্দর এলাকাগুলোকে ৭ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে। সাথে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের ট্রলার বা নৌকা নিয়ে কুলবর্তী এলাকার নিরাপদ স্থানে ফিরে আসার জন্য বারবার মাইকিং করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা আরো তথ্য দিয়ে জানিয়েছেন ‘রেমাল’ দ্রুত ধেয়ে উপকূলের দিকেই ঘনিভৃত হয়ে ঝড় আরো বেশি শক্তি সঞ্চারিত হয়ে উপকূলীয় সংলগ্নের ভূমিতে উঠে এসে ঝড়টি আরো বেশি প্রবল রূপ নিতে পারে তবে তার আগের থেকেই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী খুলনা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে খুলনা জুড়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের জন্য ৬০৪ টি আশ্রয় কেন্দ্র ও ৩ টি মুজিব কিল্লা সহ খুলনায় ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুুতি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রস্তুুত রাখা হয়েছে ও পাঁচ-স্রাধিক স্বেচ্ছাসেবক দল ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে কার্যক্রম শুরু করেছে এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ৩ লাখ ১৫ হাজার মানুষ থাকতে পারবে।
এদিকে খুলনা জেলা প্রশাসন সূত্রে আরো জানিয়েছে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার জন্য । এবং সতর্ক থাকার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি হওয়ার সাথে সাথে তারা এলাকায় মাইকিং করে দূর্গত এলাকার মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য অনুরোধ করছে শুকনা খাবার ঢেউটিন ও নগদ টাকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তুুতিতে কোন ঘাটতি নেই। প্রলয়ন্কর ঝড় রেমালের তাণ্ডব থেকে রক্ষা পেতে খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফিন জানান ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ মোকাবেলায় দুর্যোগপূর্ণ মানুষদের জন্য ৬০৪ টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী ঝুঁকিপূর্ণ লোকজন সেখানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে এসব সাইক্লোন সেল্টারে মোট ৩ লাখ ১৫ হাজার ১৮০ জন মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। এছাড়া তিনটি মজিব কিল্লায় ৪৩০ জন মানুষ আশ্রয় ও ৫৬০ টি গবাদি পশু রাখা যাবে কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলায় ৫ হাজার ২৮০ জন স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে খুলনা জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে সকল মানুষের পাশে স্বেচ্ছাসেবক সহ সকল বাহিনী ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার দুর্গত মানুষদের পাশে রয়েছে।