নজরুল ইসলাম, জেলা প্রতিনিধি:
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ হার্ডপন্টে ও কাজীপুর উপজেলার মেঘাইঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছেন নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের মানুষেরা।
একই সাথে অভ্যান্তরীন নদ-নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে। এতে জেলার ৫টি উপজেলার ১ হাজার ২৭৬ পরিবারের সাড়ে ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় (শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার কাজিপুর, সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের মানুষ বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। এসকল এলাকার রাস্তা-ঘাট, হাটবাজার, বসতভিটায় পানি উঠে পড়ায় বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। ইতিমধ্যেই জেলার প্রায় ৪০৯ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর জানান, যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যমুনার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সিরাজগঞ্জ সদরে ১৬০ হেক্টর, কাজীপুরে ২৩০ হেক্টর, শাহজাদপুরে ১০ হেক্টর, রায়গঞ্জে ৭ হেক্টর ও কামারখন্দ উপজেলার ২ হেক্টর ফসলি জমি এরই মধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব জমিতে সবজি, মরিচ, পাট, আউশ ধান, তিল ও বীজতলা ছিল।
সিরাজগঞ্জের জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরাত দিয়ে জানান, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে আরও বেশ কয়েকদিন, এতে জেলায় মাঝারি ধরনের বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। তবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকল প্রস্তুতি রয়েছে জেলা প্রশাসনের।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, সর্বশেষ জেলার ৫টি উপজেলার ১ হাজার ২৭৬টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি আছে। ৫০০ মেট্রিক টন চাল আর ১০ লাখ টাকা মজুদ আছে। সময়মতো সেগুলো বিতরণ করা হবে।
সিরাজগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, দ্রুতগতিতে যমুনায় পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে শহর রক্ষা হার্ড পয়েন্ট ও কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। পানি আরও ৩/৪ দিন বাড়তে পারে। তিনি আরও বলেন, পানি বাড়লেও বড় ধরনের বন্যা না হলেও মাঝারি বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ভাঙন কবলিত এলাকাগুলোর খোঁজ নিয়ে বালি ভর্তি ব্যাগ জিওটিউব ও জিওব্যাগ ডাম্পিং করে ভাঙন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।