বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
দেশের চলমান পরিস্থিতি ও সবকিছু মিলে আমি নিজেকে ছোট মনে করছি আমার সম্মানহানি হচ্ছে কারণ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া সহ জায়গায় জায়গায় যে ধরনের লেখালেখি শুরু হয়েছে তা আমি মানসিকভাবে নিতে পারছি না। কারন সবকিছুর আগে আমার সম্মান আমাকে একটু শান্তিতে থাকতে দাও। তোমরা আমার সন্তান আমার জন্য তোমরা যথেষ্ট করেছ। আমি তোমাদের ভালোবাসা সম্মান চিরকাল বুকে ধারণ করব। তবে আমি চাইনা তোমরা আর কোন ধরনের কিছু করো তোমরা সবাই ক্লাসে ফিরে যাও সুশিক্ষায় নিজেদের ব্রত করো এবং প্রকৃত দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হও তোমাদের প্রতি আমার শুভকামনা।
২০ আগস্ট মঙ্গলবার সকালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর মাহমুদ হোসেন পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার সময় সকল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য এসব কথা বলেন।
এর দুদিন আগে উপাচার্য পদত্যাগ করার কথা ঘোষণা দিলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীগণ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে উপাচার্যকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য দাবি জানিয়ে স্লোগানের ভাষায় বলেন স্যার আপনি আমাদের ছেড়ে যাবেন না। আপনি আমাদের অভিভাবক, আপনি আমাদের বিবেকের পথপ্রদর্শক। তাই আপনি পদত্যাগ করলে আমরা অভিভাবকহীন হয়ে পড়বো। তাছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয় এর সকল স্থানে আপনার সুদক্ষ বিচরণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আপনার অকুন্ঠ ভালোবাসা দিয়ে আপনি শিক্ষার্থী অভিভাবক সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কর্মকর্তাদের হৃদয় স্থান করে নিয়েছেন আপনার শূন্যতা আমাদের ব্যথিত করবে। সবকিছুর পর শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে ২০ আগস্ট মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় অশ্রুসিক্ত নয়নে তিনি পদত্যাগ করেন। তবে দেশজুড়ে সাবেক সৈরাতন্ত্র ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার পদত্যাগের পর পরই দেশের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানে হাসিনা পন্থী সকল ঊর্ধ্বতন কর্তাদের পদত্যাগের দাবিতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে উল্লেখযোগ্যকর্তাদের পদত্যাগ করাতে সক্ষম হলেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ক্ষেত্রে রয়েছে সম্পূর্ণ অন্য রকম চিত্র। কারণ যখন দেশব্যাপী বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন গণ আন্দোলনের রূপ নেয় এবং অসংখ্য ছাত্র জনতার মৃত হয় ঠিক তখনই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের তসনার বুকে আগলে রেখেছিলেন এবং সকল প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন পুলিশ প্রশাসন প্রবেশ করতে পারবে না কারণ এখানের প্রশাসন আমি নিজেই। আর বিক্ষিপ্ত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় উপাচার্য ডক্টর মাহমুদ হোসানের বিচক্ষণ ভূমিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কর্মকর্তা সহ শিক্ষার্থীদের মন কেড়েছে। ফলে তার বিদায় লগ্নে সকলের হৃদয়ে ব্যথিত সুর বেজে ওঠে।
অপাচার্য ডক্টর মাহমুদ হাসান খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেস্ট্রি এন্ড উড টেকনোলজি ডিসিপ্লিন এর ভিসি হিসেবে ২০০১ সালের ২৫ মে যোগদান করেন।