বিপ্লব সাহা,খুলনা ব্যুরো:
খুলনায় চলছে ঘাট দখলের মহোৎসব, শহরের অন্তর্গত রূপসা ভৈরব নদীর ঘাট দখলের রাম রাজত্বে অতিষ্ঠ নদী পারাপারের ট্রলার মাঝি ও চলাচলরত যাত্রীগণ। আগের আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে খুলনার প্রভাবশালী তিন নেতা তালুকদার আব্দুল খালেক এমডিএ বাবুল রানা ও শফিকুর রহমান পলাশের নেতৃত্বে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে রূপসা জেলখানা ও কালিবাড়ি ঘাট নিয়ন্ত্রণে রেখে তারা সুবিধা নিলেও ছিল না কোন বাড়তি ঝামেলা। দিনশেষে তাদের ধার্যকৃত টাকা দিয়ে দিলে সকল চাঁদাবাজও উটকো ঝামেলার কোন বালাই ছিল না। কিন্তু গেল ৫ আগস্ট হাসিনা পালানোর সাথে সাথে খুলনার ওই তিন নেতাও এলাকা ছেড়ে অদৃশ্য হতেই ঘাট তিনটি দখল নিতে আবির্ভাব হচ্ছে দলে দলে।
আগে খাতো তিনজন আর এখন খাবে ২০/২৫ জন আমরা সারাদিন যে কয় টাকা আয় ইনকাম করি সবই যদি ঘন্টায় ঘন্টায় আসা বিএনপি দলের নেতা কর্মীরা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে চাঁদা নিলে আমরা খাব কি। আবার না দিয়েও উপায় নাই ট্রলার বন্ধ করার হুমকি দিয়ে ভয় দেখায় বলে ১৫ বছর আগে তোদের ধারে কাছে আসি নাই। এতদিন তোগে বাপরা খাইছে তাগে দিতে পারিছিস আমাগে দিবি না কেন। আমরা জেল খাটিছি দেশ ছেড়ে পালিয়ে বেড়াইছি সবকিছু হারাইছি। হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাইছে আমরা আইছি আমরা দেশ চালাবো আমাগে চান্দা দিবি এখন থেকে আমরা ঘাট চালাবো আমাগে কথা মতন চলবি না হলে ট্রলার বন্ধ করবি এসব কথা বলেছেন খুলনা জেলখানা ঘাটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ট্রলার চালক। এ সময় তিনি নাগরিক ভাবনাকে আরো বলেন শুধু আমাগে কাছেই না ঘাটের আস পাশ দিয়ে যে সকল দোকানপাটগুলো রয়েছে তাদের কাছ থেকেও চান্দা নিচ্ছে। সকালে একদল এসে তারেক জিয়া দেশে ফেরার কথা বলে টাকা নিচ্ছে আবার বিকালে আরেক দল এসে বলছে ওরা আসলে ওদের কিছু দিবিনা আমরা যা বলব তাই শুনবি। এরকম যদি প্রতিদিন দুই-তিন দল আসে তাহলে আমরা এখন কোন দিকে যাব। এ ব্যাপারে ট্রলার মাঝির কাছে কে বা কারা আসে তাদের নাম জানতে চাইলে সে ভয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি। অপরদিকে নগরীর রূপসা ঘাট ও কালীবাড়ি ঘাটে একই চিত্র। সব ঘাট এলাকার মাঝি ও সাধারণ ব্যবসায়ীদের কথা আমরা এখন দোদুল্যমান অবস্থার মধ্যে পড়েছি যন্ত্রণার মধ্যে আছি। মাসখানেক ধরে রাজনৈতিক দলের কথিত নেতাগে এটা ওটার অজুহাতে টাকা দিতে দিতে ফতুর হয়ে যাচ্ছি। অথচ দেশে র্যাব আছে পুলিশ আছে আর্মি নামিছে তা সত্ত্বেও আমাগে সমস্যার সমাধানের জন্য কেউ আগোয়ে আসতেছে না। অনেক ভুক্তভোগীরা বলতেছে সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করতি। কিন্তু অনেকে আবার ভয় পাচ্ছি অভিযোগ করার পরে উল্টো আবার ক্ষয়ক্ষতি আমাদের জানমালের পরে হামলা হতেই পারে।
তবে এরকম করে যদি তারা ক্ষমতা আসার আগেই জুলুমবাজি লুটপাট আর চাঁদাবাজি করে তাহলে সাধারণ মানুষের ধারণা তিক্ততা সৃষ্টি হবে ভোটের সময় ভোট দেবেনা হাসিনার মতন তাগেও দেশ ছেড়ে পালানো লাগবে। জনগণ ভোট না দিলে কেউ ক্ষমতায় আসতে পারবে না। দলের নাম ভাঙ্গায়ে কয়দিন চলতি পারে একদিন না একদিন তাগে ধরা খেতেই হবে।