মশিউর মিলন বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর বাউফলে নবারুণ সার্ভে অ্যান্ড পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী হৃদয় কবিরাজের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী , এলাকাবাসী ও পরিবারের সদস্যরা।
বুধবার ( ৯ আগস্ট) দুপুরে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রী ও এলাকাবাসী অংশগ্রহণ করেন। শিক্ষার্থী হৃদয় কবিরাজকে হত্যাকারী জাফর, কাওসার মৃধা, আবু বকর ও রাকিব প্যাদা ওরফে নয়নসহ জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দাবি করেন তারা।
অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, হৃদয় কবিরাজের বাবা হরেন্দ্র কবিরাজ,কাকা আদিত্য কবিরাজ, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কিশোর ও আবির প্রমূখ।
বক্তারা বলেন,গত ১১ জুলাই রাতে বাউফল থেকে হৃদয় কবিরাজকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয় । পরে তাকে হত্যা করে খালে লাশ ফেলে দেয়। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের ফাঁসির দাবি করেন বক্তারা।
হৃদয় কবিরাজ বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের দাসপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হরেন্দ্র কবিরাজের একমাত্র ছেলে। সে উপজেলার নবারুণ সার্ভে অ্যান্ড পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সপ্তম সেমিস্টারের ছাত্র ছিলেন। ৯ জুলাই সপ্তম সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষায় হৃদয় অংশ নিয়েছিলেন । দুই ভাই-বোনের মধ্যে হৃদয় বড়। তার বোন একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) ও তার সহপাঠীরা জানান, হৃদয় ১১ জুলাই পরীক্ষা শেষে পটুয়াখালী থেকে বাড়িতে যায় সন্ধ্যা ৬ টার দিকে। পরে মোটরসাইকেল নিয়ে নিজের ব্যবসার কাজে বের হন। বাসায় ফিরতে বিলম্ব হওয়ায় রাতে পৌনে ১২টার দিকে তাঁর বাবা ছেলেকে মুঠোফোনে কল করে দ্রুত বাড়ি ফেরার কথা বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়ি ফিরবেন বলে হৃদয় জানান। ওই রাতে হৃদয় বাড়ি ফেরেননি। পরে ওই রাতে একাধিকবার কল করলে হৃদয়ের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরের দিন সকাল নয়টার দিকে হৃদয় তাঁর মুঠোফোন নম্বর থেকে বাবা হরেন্দ্র নাথের মুঠোফোনে কল করে জানান, তিনি পটুয়াখালী আছেন। এরপর আর হৃদয়ের সাথে আর যোগাযোগ করা যায়নি।
এ ঘটনায় হৃদয়ের বাবা হরেন্দ্র নাথ কবিরাজ ১৩ জুলাই বাউফল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি (জিডি) করেন। হরেন্দ্র নাথ বলেন, সর্বশেষ হৃদয়ের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল তখন হৃদয় কোনো কক্ষের মধ্যে আটকা ছিল, কথায় তা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল। কারণ, হৃদয়কে পাশ থেকে কেউ পটুয়াখালী আছে বলর কথা শিখিয়ে দেয় ,আমি তা শুনতে পেয়েছিলাম।
পরে খালের মধ্যে থেকে ২৮ জুলাই আমার ছেলের মাথা বিহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার মাথা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত চার জনকে আটক করেছে পুলিশ। আমার একমাত্র ছেলেকে কেনো তারা হত্যা করলে ওরা । আমি তাদের ফাঁসি চাই।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম আরিচুল হক বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে, এ ঘটনায় আর জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ভিক্টিমের মাথা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি, উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।