বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
দেশের সাধারণ মানুষের আয় উপার্জনের ওপর নির্ভর করে খরচের ক্ষেত্রে চলছে অভাব অনটন দুঃখ দুর্দশার হাহাকার ফলে এই মুহূর্তে দ্রব্যমূল্যর পাগলা ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরতে না পারলে আয়ের ওপর নিত্যদিনের খরচের সামঞ্জস্য রাখতে মূর্চ্ছা যাচ্ছে নিম্ন মধ্যম আয়েরের মানুষদের। কারণ বর্তমানে বাজারে গেলেই ১২০ টাকা থেকে ৮০ টাকার নিচে কোন ধরনের সবজি মিলছে না। সাথে কাঁচা মরিচের তালমাতাল অবস্থা প্রায় বছর খানেক ধরে চললেও সর্বশেষ ৪০০ টাকা ঠেকেছে কেজিতে। তাও মাঝেমধ্যে সরবরাহের অভাবে বাজারে সংকট দেখা দিচ্ছে। অপরদিকে নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজারের একজন ক্রেতা বলেন
১ হাজার টাকা নিয়ে সবজি বাজারে ঢুকলে মাত্র কয়েক পদের সবজি কিনলেই পকেট ফাঁকা হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে মাছ-মাংস আমাদের মতন মানুষদের কাছে থেকে যাচ্ছে সাদ সাধ্যের বাইরে। যদিও ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলনের মুখে একপর্যায়ে নির্যাতিত ফ্যাসিস্ট সরকার পতন হলেও বহাল তবিয়তে রয়েছে অবৈধ কালো বাজারী সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা। অথচ ওই মুহূর্তে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের সমন্বয়করা বলেছিল আমরা দেশকে নতুন করে স্বাধীনতা দিয়েছি সে ক্ষেত্রে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নির্যাতিত অসহায় মানুষদের পাশে সকল ধরনের সহযোগিতায় থাকবো এবং প্রথম ধাপেই তাদের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে বাজার পর্যায়ে মনিটরিং এ থাকবে ছাত্র সমন্বয়করা এবং দেশে থাকবে না অবৈধ কালোবাজারী সিন্ডিকেট।
এ সময় খুলনা নাগরিক ফোরামের ঊর্ধ্বতন সংশ্লিষ্ট নেতা গণমাধ্যমকে বলেন দেশের সাধারণ মানুষের আয় উপার্জন না বাড়লেও নিত্য পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। সামগ্রিকভাবে দাম বেড়েছে আলু, বেগুন, কাঁচা, মরিচ, ধনেপাতা সহ প্রায় সব ধরনের সবজি আকাশ ছোঁয়া দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। এ যেন মধ্যস্বত্বভোগীদের দেশ।বর্তমানে সড়ক মহাসড়কে নাই চাঁদাবাজি কিংবা পুলিশের উৎপাত।তারপরেও কৃষকদের ২০ থেকে ২৫ টাকার ফসল ক্রেতার হাতে পৌঁছাতে দাম উঠে যায় ১০০ টাকার ওপরে। এদিকে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় কৃষকরা যেমন থাকে লোকসানে তেমনি সবজি কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন ক্রেতারা। বাস্তবিক পক্ষে ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান ও ভারত থেকে ডিম আমদানি অনুমতি দেওয়ার ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম কিছুটা কমে ১৬০ টাকা ডজন হয়েছে। মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ৪০ টাকা ২৬০ টাকার সোনালি মুরগি ৩০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে শতের কোঠায়, কাঁচা মরিচ কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকার কমে মিলছে না।পিয়াজের ও আগের তুলনায় দাম বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ-মাংস চাউলের দাম। গতকাল সরকারি ছুটি ও পুজোর বাজার থাকা অবস্থায় বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। বাজারে সরজমিনে দেখা গেছে ৮০ থেকে ১০০ টাকার কমে কোন সবজিই নাই। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে শাকের দাম আটিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে বেগুন ১০০ থেকে ১৬০ টাকা হয়ে গেছে পটল ৮০ থেকে ৯০ টাকা, ঢ্যারশ ৮০ টাকা ধুন্দল যা গত এক সপ্তাহ আগেও মাইকিং করে ২০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেলেও তা এখন ৯০ থেকে ১০০ টাকায় মিলছে না। একটু ভালো মানের পেপে কিনতে গেলে ৫০ টাকা শসার কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা বরবটি, ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি, গাজর ১৬০ টাকা, সিম ১৩০ থেকে ২৫০ টাকা, টমেটো ২৪০ টাকা, লাউ,
চালকুমড়া, পিস ১০০ টাকা ছুঁয়েছে পাতাকপি প্রতি কেজি ৮০ টাকা। পুঁইশাক এখন আর কেজিতে বিক্রি হচ্ছে না বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা আটিতে । প্রতিনিয়ত দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে বিক্রেতারা বলেন সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিনই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে কখনো হচ্ছে ভারী বৃষ্টি এজন্য ক্ষেত থেকে তোলা যাচ্ছে না ফসল। ফলে সরবরাহ কমে গেছে বাজারে। সারাদেশ থেকে সবজি আসছে না তাই আগের সপ্তাহের চেয়ে প্রায় প্রতিটি সবজির দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। পেঁয়াজ কেজি ১২০ থেকে ১২০ টাকা। বাড়তি দামের ব্যাপারে নগরীর বড় বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন হঠাৎ করে ছোলার দাম বেড়ে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে মুগডালের দামও বাড়তি ১৮০ টাকা কেজি সিন্ডিকেট করে সব জিনিসের দাম বাড়ছে। এখন তো রমজান মাস নেই তাহলে ছোলার দাম বাড়ে কেন তেল চিনির দামও কমছে না। এদিকে বিক্রেতারা জানান আগের সপ্তাহে ১১০ থেকে ১২০ টাকা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করা হলেও রোববার তা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজিও আমদানি করা পেঁয়াজ ১১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আলু গতানুগতিক ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে রসুন দুইশ থেকে ২৪০ টাকা আদার দামও বেড়েছে তা ৩১০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। একই সাথে নগরীর বিভিন্ন বিক্রেতারা জানান আগের মতই মসুর ডাল ১১০থেকে ১৩৫ টাকা ছোলা ১৪০ টাকা কেজি ২ কেজি ওজনের প্যাকেট আটা ১০০ থেকে ১৩০ টাকা খোলা আটা ৪০ টাকা কেজি। সবকিছু মিলে সাধারণ মানুষদের আক্ষেপ দেশে নির্বাচিত সরকার থাকলে তাদের খেয়ালখুশি মতন স্বেচ্ছাচারিতা করেছে। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নতুন করে দেশের হাল ধরলেও তারা ও তাদের নিজ গতিতে অন্য কাজ করলেও তদারকি নাই সাধারন মানুষের খেয়ে বেঁচে থাকা নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দিকে। আবার এদিকে দেশের দিন দিন কাজ কর্মের চাহিদা ও কমে যাচ্ছে শ্রমিক বেকার হচ্ছে ফলে তাদের দিন চালাতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। তবে এই মুহূর্তে যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও ছাত্র জনতা একত্রিতভাবে সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা না করে তাদের পাশে না থাকে তাহলে সাধারণ মানুষের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে ধাবিত হবে অনাহার অর্ধহারে দিন কাটাতে হবে সাধারণ মানুষদের। সামান্য আয় উপার্জনের উপর নির্ভর করে সাংসারিক অভাব দুঃখ দুর্দশা যেন নিত্য দিনের সঙ্গী হয়ে রয়েছে।