মোঃ জাহাঙ্গীর আলম – ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি:
ভোররাতে হালকা ঠান্ডা ও সকালের কুয়াশা জানান দিচ্ছে শীতের বার্তা। তাই রস সংগ্রহে খেজুর গাছ ঝোড়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের গাছিদের চোখ এখন খেজুর গাছের দিকে। রামচন্দ্রপুর থেকে লক্ষীকুন্ডু রোডে গাছ তোলার সময় কথা হয় মোল্লা পাড়ার মুন্তা জোয়ার্দারের এর সাথে। তিনি জানান যশোর, ঝিনাইদহ, খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত। তার মতই উপজেলা জুড়ে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গাছিরা। এ বিষয়ে কথা বলা হয় কোটচাঁদপুর উপজেলা কৃষি অফিসার রাজিবুল হাসানের সাথে, তিনি জানান উপজেলা জুড়ে প্রায় ৪৮ হাজার খেজুর গাছ আছে যা থেকে ১ শত ৫ টন গুড় উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা রয়েছে। শীতের শুরুতেই অবহেলায় পড়ে থাকা খেজুর গাছের কদর বেড়ে উঠেছে। গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য প্রাথমিক প্রস্ততি শুরু করেছেন। শুরু করেছেন প্রাথমিক পরির্চযাও। যাকে এক কথাই বলা হয় গাছ তোলা। কিছু দিন পরেই আবার গাছে চাছ দিয়ে নলি বা গুছা লাগিয়ে খেজুর গাছ থেকে রস বের করতে ব্যস্ত হবে গাছিরা। উপজেলার প্রতান্ত অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে দেখা যায় রাস্তার পাশে থাকা খেজুর গাছ ঝোড়ার দৃশ্য। আর কিছু দিন পরই মধু বৃক্ষ থেকে সুমধুর রস বের করে গ্রামের ঘরে ঘরে শুরু হবে গুড়, পাটালি, তৈরির মহা উৎসব। সুস্বাদু ও পিঠাপুরির জন্য অতি জরুরি উপকরণ হওয়াই খেজুরের রসের কদর বেশি। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য এই খেজুর গাছ আজ অবহেলায় অজান্তে বিলুপ্তির পথে। যে পরিমানে খেজুর গাছ নিধন হচ্ছে সে তুলনায রোপন করা যাচ্ছে না। অঞ্চল গুলো থেকে গাছ কমে গেছে। কারণ হিসেবে কয়েকজন গাছির সাথে কথা হয়, তারা জানান, খেজুর গাছ বছরে একবার রস সংগ্রহ যায় এবং অনেক পরিশ্রম করতে হয় সেজন্য অনেকেই গাছ কেটে জমিতে অন্যান্য চাষাবাদ করছেন। কিন্তু অনেক গাছি ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। খেজুরের রস জ্বালিয়ে পিঠা, পায়েস, মুড়ি, মোয়া ও নানা রকমের খাবার তৈরির করার ধুম পড়বে কয়দিন পরেই । আর রসে ভেজা বিভিন্ন ধরনের পিঠার স্বাদই আলাদা। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও গাছিরা শীতের শুরুতেই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। শীত শুরু হওয়ার সাথে সাথে খেজুর গাছ কাটার প্রতিযোগিতায় গাছিরা খেজুর গাছ পরিস্কার করার জন্য গাছি দা, পাটের দড়ি, মাটির কলস, বাঁশের নলি ব্যবহার করে থাকে। এলাকার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় রস, গুড়, পাটালি, রপ্তানি করে থাকে গাছিরা। ছবিটি উপজেলার বলুহর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর মোল্লা পাড়ার মাঠ থেকে তুলেছেন প্রতিবেদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম।