মো. আনোয়ার হোসাইন জুয়েল, তাড়াইল (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা।জুন-জুলাই মাস জুড়ে ঢাকাসহ কয়েকটি অঞ্চলে ডেঙ্গুরপ্রাদুরভাব থাকলেও তাড়াইল উপজেলা ছিল নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু চলতি আগষ্ট মাসে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। এদিকে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেলেও উপজেলার ৫০ শয্যা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য নেই কোনো আলাদা ওয়ার্ড।
তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, জুলাইয়ের ১ তারিখ থেকে আগষ্টের ১২ তারিখ পর্যন্ত ডেঙ্গুর টেষ্ট করা হয়েছে ১০৭ জনের। পজেটিভ ৬ জন এবং নেগেটিভ ১০১ জন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়াও বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকেও পরীক্ষা করে ভর্তি হচ্ছে রোগী।
১লা জুলাই থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে পুরুষ ১৯, মহিলা ৩ ও শিশু ২ জনসহ মোট ২৪ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন পুরুষ ৮, মহিলা ২ ও শিশু ১ এবং রেফার্ড করা হয়েছে ৪ জন পুরুষ ও নিজ দায়িত্বে ছুটি নিয়ে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪ জন পুরুষ এবং চিকিৎসারত ১ জন হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছে। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে ২ জন পুরুষ, ১ জন মহিলা ও ১ জন শিশুসহ মোট ৪ জন।
সরজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শনে রোগী, স্বজন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, সবকটি রোগীই রাজধানী ঢাকাসহ অন্যন্যা অঞ্চল থেকে আক্রান্ত হয়ে এসেছে। তারা বলছেন উপজেলাতে এখনও পর্যন্ত এডিস মশার বংশবিস্তার তুলনামূলক কম। তবে উপজেলায় এডিস মশার আংশিক প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ যদি এখনি এর কার্যত পদক্ষেপ না নেয় তবে এডিসের বিচরণ খুব দ্রুত বাড়বে বলে মনে করছেন তারা। বেশিরভাগ রোগীরাই বলছে তাদের ভোগান্তির একটি বড় বিষয় পরিক্ষা-নিরিক্ষা। সরকারি হাসপাতালে করাতে পারছেন না ডেঙ্গু শনাক্তের প্রয়োজনীয় সকল পরিক্ষাদি। দুপুর ১টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যায় হাসপাতালের প্যাথলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট।সেইসঙ্গে যারা হাসপাতালে পরিক্ষা করাচ্ছে তারাও রিপোর্ট পাচ্ছে একদিন পর। ফলে একরকম বাধ্য হয়েই রোগীদের যেতে হচ্ছে বেসরকারি ডায়াগণস্টিকগুলোতে। এদিকে রোগিরা যখন পরিক্ষা-নিরিক্ষার জন্য প্রাইভেট ডায়াগনষ্টিকের স্বরনাপন্ন হচ্ছে তখন তাদের গুনতে হচ্ছে বেশি টাকা। ডায়াগনষ্টিকগুলোও তাদের খেয়াল খুশিমত পরিক্ষার মূল্য বসাচ্ছে। ফলে রোগীরা পড়ছে ভোগান্তিতে। ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে দৃশ্যমান কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনি। জোড়ালো কার্যক্রম গ্রহণের দাবি জানান সচেতন মহল।
তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলমাস হোসাইন জানান, হাসপাতালের পক্ষ থেকে মশক নিদন স্প্রে ছিটানোসহ সচেতনতামুলক নানা কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। যার অনেকগুলোই ইতোমধ্যেই বাস্তবায়ন করা হয়েছে। যেহেতু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে নতুন কার্যক্রমের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, তাড়াইলে এডিস মশার প্রাদুর্ভাব তেমন নেই, যারা আক্রান্ত তাদের বেশিরভাগই রাজধানী কিংবা অন্য অঞ্চল থেকে এসেছে। তবে তাড়াইলে যেনো এডিস মশা বংশ বিস্তার না করতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি আমাদের আছে। এছাড়া পরীক্ষার জন্য আমাদের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা আছে, তারা ৫০ টাকার বিনিময়ে ডেঙ্গু পরীক্ষা করতে পারছে।