বদলগাছী উপজেলা প্রতিনিধি
বসতভিটার ১২ শতক জমি লিখে দিতে অস্বীকার করায় মেয়ে-জামাইয়ের মারধর আর নির্যাতনের শিকার হন টুরু মিয়া। তারই ধারাবাহিকতায় ৭ নভেম্বর মেয়ে-জামাইয়ের বিরুদ্ধে নওগাঁর বদলগাছী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। রবিবার (১০ নভেম্বর) বিকাল ৪টায় পুলিশ অভিযোগ তদন্তে এসে টুরু মিয়ার লাশ পান।
ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার সদর ইউনিয়নের জাইজাতা গ্রামের মৃত আফছার আলী মণ্ডলের বড় ছেলে টুরু মিয়ার সাথে।
জানা যায়, টুরু মিয়ার বয়স এখন ৮৫ বছর। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর টুরু মিয়া দ্বিতীয় বিয়ে করেন। প্রথম পক্ষের এক ছেলে সন্তান আছে। বনিবনা না হওয়ায় সে মহাদেবপুর উপজেলায় মাতাজীহাট সংলগ্ন গুচ্ছগ্রামে বসবাস করেন। আর দ্বিতীয় পক্ষের দুই কন্যা সন্তান নিয়ে জাইজাতা গ্রামে বসবাস করেন টুরু মিয়া।
ছেলে সন্তান না থাকায় আব্দুস সালাম নামের এক যুবকের সাথে বড় মেয়ে আঙুরের বিয়ে দিয়ে নিজ বাড়িতে ঘর জামাই রাখেন টুরু মিয়া। বেশ ভালোয় চলছিল সংসার। কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে বসত বাড়ির জমি লিখে দিতে বলেন মেয়ে-জামাই। তিনি অস্বীকার করলে মারধর করতেন মেয়ে-জামাই।
তবে স্থানীয়রা বলছে, প্রায় সময় টুরু মিয়াকে মারধর করতেন মেয়ে-জামাই। মারধর করার জন্য এর আগেও বেশ কয়েকবার গ্রামে এবং থানায় মেয়ে-জামাইয়ের বিরুদ্ধে সালিশ হয়েছিল। কয়েকদিন ভালো থাকার পর আবারও মারধর করতেন। গত কয়েকদিন আগেও তাকে মারধর করা হয়েছিল।
তবে জামাই আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমি আমার শ্বশুরকে মারধর করিনি। দুই তিন দিন আগে বাপ-মেয়ের সাথে ঝগড়া হয়। থানায় অভিযোগ বিষয়ে কিছু জানি না।‘ লাশের শরীরে আঘাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বয়স্ক মানুষ ঘর থেকে বের হওয়ার সময় গ্রিলের দরজার আঘাত লেগে বুক আর হাতে একটু লেগেছিল। তাছাড়া আর কিছুই জানি না।’
এ বিষয়ে বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। লাশের শরীরে এবং ডান হাতের কবজির উপরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মেয়ে-জামাইকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।