মো আমিরুল ইসলাম পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি।
পঞ্চগড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়া এক যুবককে হত্যার পর লাশ গুমের মামলায় সাবেক রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের জামিন না মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার সকালে আইনজীবির মাধ্যমে জামিন আবেদন করলে পঞ্চগড়ের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আশরাফুজ্জামান জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নূরুল ইসলাম সুজন পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের মহাজন পাড়া এলাকার মৃত ইমাজ উদ্দিন আহম্মেদ এর ছেলে। তিনি পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত ১০ নভেম্বর পঞ্চগড় জেলা সদরের উত্তর দর্জিপাড়া এলাকার মনু মিয়া নামে এক ব্যক্তি নূরুল ইসলাম সুজনকে প্রধান করে ১৯ জনের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী মো. মনুর ছেলে আলামিন পেশায় রিক্সা চালক। তবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় যোদ্ধা ছিলেন। এজন্য তাকে শুরু থেকেই বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেয়া হতো। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আলামিন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাকিব প্লাবন পাটোয়ারীর বাড়ির সামনে দিয়ে যখন বাড়ি ফিরছিলেন তখন কতিপয় আসামীর পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ মদদে অন্য আসামীরা তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দ্বারা আল আমিনকে জখম করে। এতে রক্তাক্ত হয়ে আলামিন সড়কে লুটিয়ে পড়লে তার নিথর দেহ টেনে হিচেড়ে নিয়ে যায় তারা। তখন থেকেই আল আমিনের সন্ধান নেই।
মামলার বাদী মো. মনু বলেন, আল আমিনের সঙ্গে সেদিন যারা ছিলো তাদের সঙ্গে কথা বলেই মামলা করেছি। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ মতে, আমি ধারণা করছি আমার ছেলেকে হত্যার পর তার লাশ গুম করে রাখা হয়েছে। আমি ন্যায় বিচার চাই।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এ্যাডভোকেট আদম সুফি বলেন, ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সম্মুখ যোদ্ধাকে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। আসামী পক্ষের আইনজীবিরা জামিন চেয়েছেন, আমরা সরকার পক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করেছি। বিচারক আসামীর জামিন না মঞ্জুর করেছে। খুব দ্রুত এই আসামীর বিরুদ্ধে রিমান্ড এর প্রার্থনা আসতেছে।
এদিকে, আসামী পক্ষের আইনজীবী মির্জা সারোয়ার আলম বলেন, নুরুল ইসলাম সুজনকে মামলায় প্রধান আসামী করা হয়েছে। উনাকে গ্রেফতার দেখানো হইলো। আদালতে তাকে তোলার পর জামিনের জন্য আবেদন করা হয়েছিল, আদালত জামিন না মঞ্জুর করেছে। তবে আদালত তাকে ডিভিশন মঞ্জুর করেছে। এজাহারে যেহেতু অভিযোগ তোলা হয়েছে, ভিকটিমকে পাওয়া যাচ্ছে না তাহলে এটা কোন ভাবে ৩০২ ধারায় পরতে পারে না। আমরা বিষয়টি আদালতকে অবগত করেছি।