বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায়ী প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী অর্ণব কুমার সরকার হত্যার ঘটনায় তাৎক্ষনিক তদন্তে প্রশাসনের সন্দেহের তীর বন্ধু সহ আরো দুইজনের দিকে নিক্ষেপ করলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি পুলিশের সন্দেহের তীর, ফলে আটককৃত তিনজনের মধ্য রব্বানী বাদে অন্য দুইজনকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দিলেও রব্বানীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়, পরে বিজ্ঞ আদালতের সিদ্ধান্তে অর্ণব হত্যার আসল রহস্য উদঘাটনের জন্য ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হলে একপর্যায়ে গত ২৯ জানুয়ারি বুধবার গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য দিয়েছে রাব্বানী। তবে মামলা তদন্তের স্বার্থে এবং হত্যাকান্ডের আসলে রহস্য উদঘাটন না হওয়া পর্যন্ত রব্বানীর স্বীকারোক্তি থেকে পাওয়া কিছু কিছু ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে রব্বানীর দেওয়া তথ্য অনুসন্ধানে নেমে সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সোনাডাঙ্গা আদর্শ পল্লী এলাকার বাসিন্দা খোকন শেখের ছেলে মোঃ রমজান শেখ ও খুলনা সদর থানা মুন্সিপাড়া এলাকার আরিফুল ইসলাম মিঠুর ছেলে জাহিদুল ইসলাম তুরানকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে এনে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে আসছে অর্ণব হত্যার থলের বিড়াল, ফলে উদঘাটন হচ্ছে ঘটনার মূল রহস্য।আটককৃত দুইজনের স্বীকারোক্তির তথ্য মতে সাইফুল গাজী নামে সন্দেহভাজন একজনকে গত শুক্রবার রাত দশটার দিকে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানাধীন বয়রা বাজার এলাকা থেকে আটক করেছে মামলা তদন্তের প্রশাসন টিম। সাইফুল গাজী সোনাডাঙ্গা থানার আইডিয়াল কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা মাগরেব গাজীর ছেলে। এই নিয়ে অর্ণব হত্যার দায়ে রব্বানী সহ মোট চারজনকে আটক করা হয়েছে গতকাল১ ফেব্রুয়ারি শনিবার সাইফুলকে ৭ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ এর জন্য আবেদন করলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৪ এর বিচারক রোববার শুনানির দিন ধার্য করে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। তবে ঘটনার দিন প্রথম অবস্থায় রব্বানীসহ তিনজনকে আটকের পর প্রথম অবস্থায় প্রশাসনের সন্দেহের বেড়াজল থেকে রব্বানীর চোখের পানি ও নাটকীয়তায় নির্দোষ প্রমাণ করতে পারেনি নিজেকে উপরন্ত হত্যার ঘটনার লোমহর্ষক অনেক তথ্য দিয়েছে পুলিশকে রাব্বানী, এবং তার দেওয়া তথ্য ভিত্তিতে শিক্ষার্থী অর্ণব হত্যার ঘটনার কুল কিনারা খুঁজে পেতে যাচ্ছে পুলিশ।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে গত বুধবার রাতে সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে এদেরকে আটক করা হয়েছে, এদিকে গ্রেফতারকৃতরা
রিমান্ডে নেওয়া অর্ণব হত্যা মামলার অন্যতম আসামি গোলাম রাব্বানি অর্ণব হত্যা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিচ্ছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ মনিরুজ্জামান মিঠু গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার রাতে সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানের সময় তাদের দু’জনকে নগরীর পৃথক স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দু’জনের থেকেও অর্ণব হত্যা মামলার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসছে বলে জানা গেছে।
অপরদিকে হত্যাকান্ড সম্পর্কে বিভিন্ন স্থান থেকেও অনেক অভিযোগ আসছে আমাদের কাছে যা মামলা তদন্তের স্বার্থে গোপন রাখা হচ্ছে। এবং সেগুলো সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।
এ সময় তিনি এটাও বলেছেন তদন্তের ক্ষেত্রে কোন বিঘ্ন সৃষ্টি না হলে তদন্তের কাজ আমরা অতি দ্রুত অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব এবং আসল ক্রিমিনাল কে আটক করতে সক্ষম হব, তিনি আরও বলেন আপনারা আমাদের কাছে অধিক প্রশ্ন করলেও তদন্তের স্বার্থে অনেক কিছু আপনাদের কাছে প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছেনা। এদিকে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম ৭দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আসামী রমজান ও তুরানকে আদালতে সোপর্দ করলে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশরাফুল আলম নাগরিক ভাবনার বিভাগীয় প্রধান বিপ্লব সহাকে মুঠোফোনে বলেন রমজান ও তুরানকে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং তাদের স্বীকারোক্তি থেকে গতকাল অভিযান চালিয়ে বয়রা বাজার থেকে সাইফুল গাজীকে খুবি ছাত্র অর্ণব হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে পুলিশ হেফাজতে প্রেরণ করলে আদালত রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে কারাগারে পঠিয়েছেন তবে আমাদের ধারণা সাইফুল গাজীকে রিমান্ডে পেলে অনেক তথ্য বেড়িয়ে আসবে । উল্লেখ্য, গত ১৫ জানুয়ারি শুক্রবার রাতে নগরীর শেখপাড়া তেতুলতলা মোড়ে সন্ত্রাসীরা গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা প্রশাসনের ছাত্র অর্ণবকে। হত্যাকান্ডের পরের দিন নিহত অর্ণবের বাবা নিতিশ কুমার বাদী হয়ে সোনাডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার নং ২৬। এর আগে এ হত্যাকান্ডের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য পুলিশ নিহত অর্ণবের ৩ বন্ধুকে হেফাজতে নেয়। অর্ণবের অন্য দুই বন্ধুকে পারিবারিক জিম্মায় ছেড়ে দিলেও পুলিশ হত্যা মামলায় আটককৃত অন্যতম আসামি বন্ধু গোলাম রাব্বানিকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে সে এ মামলায় সোনাডাঙ্গা থানায় রিমান্ডে রয়েছে বলে জানা গেছে।