বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
গ্রীষ্মের সবজির ভরা মৌসুম কৃষকের মাঠ ভরা ফসল তবু বাজারে ৮০ টাকার নিচে মিলছে না সবজি সাথে পাল্লা দিয়েছে চাল চিনি ও তেলের দাম,গেল রোজার মাসেও বিগত ১৬ বছরের ইতিহাস ভেঙে দ্রব্যমূল্যের দাম নাগালের মধ্য রেখে সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও দ্রব্যমূল্যর ক্ষেত্রে স্বস্তি পেয়েছে এবং দেশের সাধারণ জনগণ যখন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশংসায় পঞ্চমুখ আর তখন এক শ্রেণীর সিন্ডিকেট কালোবাজারি ব্যবসায়ীরা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। ফলে সপ্তাহের ব্যবধানে সকল ধরনের সবজি কেজিতে বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা চালের দাম বাড়ছে পাল্লা দিয়ে, সাথে চিনি তেল অন্যান্য মসলা সামগ্রীত রয়েছেই।
এক্ষেত্রে সাধারণ ভুক্তভোগী ক্রেতাদের অভিযোগ সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও কয়েক দিনের ব্যবধানে সবজির দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক। ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চাল, ডাল, ভোজ্য সয়াবিনের দাম। দোকানে পণ্যের মূল্য তালিকা সাঁটানো ও বাজার দর মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার থাকলেও কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
নগরীর কেসিসির সন্ধ্যা বাজারে প্রকার ভেদে বেগুন কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগেও ৩৫ থেকে ৪০ ছিল অহরহ । শসা কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকায়। লেবুর হালি ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন দ্বিগুণের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর মিস্ত্রিপাড়া বাজার, রুপসা বাজার, ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজার ঘুরে জানা যায়, ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি ২০০ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগি কেজি প্রতি ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা, লেয়ার ৩২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি করলা ৮০ টাকা, ঢেঁড়শ ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, বরবটি সিম ৭০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, খিরাই ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, টমেটোর কিছুটা আমদানি কম থাকায় কেজি হাকিয়েছে ৪০ টাকা প্রতিহালি কাঁচকলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশি পেঁয়াজ গত সপ্তাহে ৪ কেজি ১০০ টাকায় মিললেও বর্তমানে কেজিতে বেড়েছে ২৫ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা, আলু চার কেজি একশ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এর আগে গত এক সপ্তাহ আগে বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি করলা ৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বরবটি ৩০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, ক্ষিরই ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকা, টমেটো ৭ থেকে ৮ টাকা, আলু ২০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকা, চায়না রসুন ২৩৫ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
এদিকে, মাসের পর মাস চড়া দামে চলছে চালের বাজার। নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মোটা চাল (স্বর্ণা) ৬০ টাকা, আঠাশ বালাম ৭৩ টাকা, মিনিকেট ভালোমানের ৭৮ টাকা, মিনিকেট নিম্নমানের ৬৮ টাকা, বাসমতি ৮৫ থেকে ৮৬ টাকা, কালোজিরা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে কমছে না ভোজ্য সয়াবিন তেলের দাম বরং লিটার প্রতি বেড়েছে ১৪ টাকা বোতলজাত ফ্রেশ, তীর, বসুন্ধরা সয়াবিন (৫লিটার) বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা দরে। যা লিটার প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ টাকা। লুজ সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। খুচরা বাজারে প্রতিলিটার সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ টাকা দরে। কমছে না মশুর ডালের দাম। খুচরা বাজার প্রতিকেজি মশুর ডাল (সরু) ১৪০ টাকা, মশুর ডাল (মোটা) ১০৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে, মুরগি বিক্রি হচ্ছে চড়া মূল্যে। কেজিপ্রতি ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকা, লেয়ার ২৮০ টাকা, কক ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে গরুর মাংস কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা দরে।
কেসিসি সুপার মার্কেটে আসা ক্রেতা জাহিদুল ইসলাম বলেন, “সবজির দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। চাল, ডাল, তেল, মুরগিসহ বেশকিছু পণ্য ও জিনিস বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। রমজানেই দাম বাড়ানো হলো জিনিস পত্রের। অথচ কেউ দেখছে না।” নগরীর সন্ধ্যা বাজারে আসা কলেজ শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, “সবজির দাম বেড়েই চলেছে। চাল, ডাল, সয়াবিন তেলের দাম কোনভাবেই কমছে না।” তাসলিমা বেগম নামে এক ক্রেতা বলেন, “এ বছর রমজানে বাজার স্বাভাবিক থাকবে ভাবছিলাম কিন্তু চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে দামও বেড়ে যাচ্ছে।”
সন্ধ্যা বাজারের বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, “খামার থেকে মুরগি কম সরবরাহ হওয়ার কারণে এখন দাম একটু বাড়তি।” অপর বিক্রেতা মফিজুর রহমান জানান, দুদিনের ব্যবধানে আড়তে পণ্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। সরবরাহ আগের মত রয়েছে। বাজারে চাহিদা থাকার কারণে আড়ৎদাররা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা সাধারণ ক্রেতার কাছে জবাবদিহিতার শিকার হচ্ছি। অপরদিকে সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে সবজি ও পণ্য সরবরাহ থাকলেও রমজানের আভাস পেয়ে অসৎ ব্যবসায়ীরা অস্বাভাবিক হারে দাম বৃদ্ধি করেছে ফলে ক্রেতাদের পড়তে হচ্চে নাকাল অবস্থার মধ্য তবে ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছামত নিত্য পণ্যের দামের উপর খর্গ ধরলেও বাজার পর্যায়ে মনিটরিংয়ের জন্য প্রশাসন মহল রয়েছে উদাস।