বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
মানছে না স্বাস্থ্য বিধি বাড়ছে করোনা, উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় স্বাস্থ্য বিভাগ বিগত দিনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
(আইডিসিআর) করোনা ইউনিট অধিক জনবল ফোকালপার্সন নিয়োজিত রাখা হয়েছে প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে। কিন্তু কিট সংকটে করোনা পরীক্ষা থেকে পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে,
তবে হাসপাতাল গুলোতে রেড জোন ইয়োলো জোন রোগীদের জন্য সয্যা সহ অক্সিজেন প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র সাথে চিকিৎসক নার্স পরিছন্ন কর্মী সেবা প্রদান করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
একই সাথে করোনার পাশাপাশি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু সব মিলে চিকিৎসকদের বর্তমান পরিস্থিতিতে বেসামাল হতে হচ্ছে। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিশেষজ্ঞদের কথা আগের তুলনায় বর্তমান করোনার নতুন ভেরিয়েন্টের ধরন একটু তীব্র গতি সম্পন্ন হয়ে দ্রুত মানব দেহে বিস্তার করার সম্ভাবনা থাকলেও এতে মৃত্যুর ঝুঁকি কম। তবে যথারীতি স্বাস্থ্য বিধি নিষেধ মেনে চললে অতি দ্রুত এই মহামারির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব আর পাশাপাশি অসচেতনতা ও অবহেলায় জীবন ঝুঁকি বারতে পারে বহু গুণ এমনকি মৃত্যুর পর্যন্ত হতে পারে তাই প্রত্যেক মুহূর্তে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নাই। প্রসঙ্গত ডেঙ্গু আমাদের দেশের আবহাওয়ার সাথে ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে।
আর এর মূল কারণ প্রত্যেক এলাকার জনপ্রতিনিধি ও জনস্বাস্থ্য প্রকল্প এবং সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা সহ নগর পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাদের উদাসীনতা ও কাজের গাফিলতি তাছাড়া সাধারণ মানুষদের মধ্যে অসচেতনতা তো রয়েছেই আর এই সকল অবহেলার কারণে ডেঙ্গু বাহিত এডিস মশার বংশ বিস্তার করে যা মানব দেহে সংক্রমণ ছড়াতে সক্ষম হচ্ছে ফলে
দেশে করোনা ও ডেঙ্গুতে মৃত্যু অব্যাহত রয়েছে। একইসঙ্গে বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে, আক্রান্ত হয় ২৬ জন। অন্যদিকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আর নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৪৯ জন। সোমবার (১৬জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো পৃথক দুইটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। ২৯১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এদের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে করোনা আক্রান্ত ২৬ জনসহ দেশে এই পর্যন্ত মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৮৩৩ জনে। সেইসঙ্গে করোনায় দেশে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৫০৩ জন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৪ জন। এর ফলে এ সংখ্যা ২০ লাখ ১৯ হাজার ৪১০ জনে দাঁড়িয়েছে। এদিকে মহামারির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ। আর গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম ৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ওই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট দু’দিন করোনায় সর্বাধিক ২৬৪ জন করে মারা যান। অপরদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তি হওয়াদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৩৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৯ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৮ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৩৫ জন, খুলনা বিভাগে ৮ জন রয়েছেন। এছাড়া রাজশাহী বিভাগে ৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৭ জন, রংপুর বিভাগে ৩ জন এবং সিলেট বিভাগে ১ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৫ হাজার ৯৮৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের। এদিকে, গত একদিনে সারা দেশে ২২২ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৫ হাজার ২৯৯ জন। প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং মারা গেছেন ৫৭৫ জন। এর আগে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়। ওই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গুর বিষয়টি একটু ভিন্নভাবে দেখছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।