বিপ্লব সাহা, খুলনা ব্যুরো:
এবার সারাদেশ সহ দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে লক্ষ্যমাত্রা থেকেও বাম্পার ফলন হয়েছে আমন ও বোরো ধানের আশানুরূপভাবে ভালো ফসল পেয়ে উজ্জল হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে অথচ ভরা মৌসুম দেশে চালের কোন কমতি নেই আমদানিতে রয়েছে যথেষ্ট সরবরাহ তা সত্ত্বেও ব্যবসায়ীরা গাজা ইসরাইল ইরানের মধ্যকার যুদ্ধের অজুহাতে এক মাসের ব্যবধানে প্রকারভেদে সব ধরনের চালের কেজিতে দাম বেড়িয়েছে সাত থেকে আট টাকা
ফলে অসহায়ত্বের কাছে হার মানতে হচ্ছে নিম্ন মধ্যম আয়ের সকলের। এ ব্যাপারে যেন চরম উদাসীনতায় গভীর ঘুমে মগ্ন রয়েছে বাজার মনিটরিং কর্তৃপক্ষের কর্তারা। চালসহ অন্যান্য পণ্য সামগ্রী ও চোখ রাঙ্গাচ্ছে কঠিনভাবে।
তার মধ্য উল্লেখযোগ্য হারে চাউলের বাজারে শুরু হয়েছে মূল্য বৃদ্ধির প্রতিযোগিতা পিছিয়ে নাই চিকন মোটা কোনটাই। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৭ থেকে ৮ টাকা। দাম বাড়লেও সবকিছুর অন্তরালে সুবিধা জনক অবস্থায় মধ্যস্বত্বভোগীরা।
নগর জুড়ে সরজমিনে দৈনিক নাগরিক ভাবনার অনুসন্ধানীতে উঠে আসে ক্রেতা বিক্রেতাদের ভিন্ন ভিন্ন অভিমত।এক্ষেত্রে সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনার ঘাটতির কথা বলছেন সাধারণ ক্রেতারা। বাজার পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা প্রতিকেজি মোটা চাল খুচরা বিক্রি করছেন ৬২ টাকা। একইসাথে মিনিকেট ৮০ টাকায়, নাজিরশাল ৮৭ টাকা, ২৮ সিদ্ধ ৬৮ টাকায়, ২৮ আতফ চাল ৬৮টাকায় বিক্রি করছেন। অথচ গেল সপ্তাহে একই চাল ব্যবসায়ীরা বিক্রি করেছেন মোটা ৫৮ টাকা। মিনিকেট ৬৮ টাকায়, নাজিরশাল ৭৫ টাকায়, ২৮ সিদ্ধ ৬০ টাকা ও ২৮ আতপ ৬০ টাকায় বিক্রি করছে।
খুলনার বড় বাজার এলাকার পাইকারী একজন চাল ক্রেতা বলেন, এখন ধান চালের ভরা মৌসুম ফলন ভালো হয়েছে সরবরাহ রয়েছে অহরহ পর্যাপ্ত । হাটে ধানের দাম বাড়েনি উত্তরবঙ্গ ও খুলনার কিছু মিল থেকে তিনি চাল ক্রয় করেন এমন একজন ব্যবসায়ী জানিয়েছেন কিছু কিছু এলাকায় ধানের ভাতও ফলন হলেও এলাকায় ধানের সংকট দেখা দিয়েছে তাছাড়া অধিকাংশ দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে নিত্য পণ্য সহ চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে ফলে কয়েকদিনের চালের দাম আরও বাড়তে পারে বলে তিনি মনে করেন। ওই বাজারের অপর ব্যবসায়ী ফারুখ আহমেদ চালের দাম কিছুটা বেড়েছে বলে স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ধানের সংকট না থাকালেও বৈশ্বিক চলমান বিভিন্ন কারণে চালের সরবরাহর ক্ষেত্রে কে বা কারা বিঘ্ন ঘটিয়ে মূল্যবৃদ্ধির পায়তারা করেছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে আসার সাথে সাথে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে তিনি মনে করেন।
দোলখোল ইসলামপুর মোড়ের বাজারের চাল বিক্রেতা জাকির হোসেন বলেন, গেল একসপ্তাহের ব্যবধানে মানভেদে প্রতিকেজি চালের দাম প্রতিকেজিতে বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা। পাইকারী বাজারে চালের দাম বেড়েছে তাই তিনি এ দরে বিক্রি করছেন।
সন্ধ্যা বাজারের ক্রেতা রহিম বলেন, দেশে কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ দেখা দিলে পরেরদিন বেড়ে যায় নিত্য পণ্যের দাম। দাম একবার বেড়ে গেলে আর তা কমতে চায়না। তিনি আরও বলেন, ব্যায় বাড়লেও বৃদ্ধি পায়না আয়ের পরিমান।
দোলখোলা ইসলামপুর মোড়ে চালের দোকানে কথা হয় বাবুর সাথে। তিনি বলেন, ৫ জনের সংসার তার। প্রতিমাসে ২০০০ থেকে ২১০০ টাকার চাল ক্রয় করেন তিনি। দাম বৃদ্ধির কারণে এখন প্রতিমাসে নতুন করে চালের ক্ষেত্রে ২৫০ টাকা যোগ করতে হবে। যা তার জন্য খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
ওই বাজারের চাল ক্রেতা নাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন নতুন করে নিত্য পণ্যের দাম বাড়ছে। কিন্তু সরকার কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। নিত্য পণ্যের দাম কমানোর জন্য সরকার আওয়াজ দিয়ে ঘোষণা করেও জনগণের জন্য কোন সুফল বয়ে আনতে পারছে না। তাই বাজার ব্যবস্থায় কঠোরতা অবলম্বন করলে নিত্য পণ্যের দাম কমতে পারে বলে তিনি মনে করেন।