মোঃ সুমন ভূঁইয়া,বরিশাল জেলা প্রতিনিধি-
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা রুবিনা পারভীনের বিরুদ্ধে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীদের দাবি, একটি মহলের ‘মন জয়ের’ জন্য মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় সুপরিকল্পিতভাবে আবেদনকারীদের কাগজপত্র গুম, সঠিক তথ্য থাকার পরও আবেদন বাতিল এবং পক্ষপাতদুষ্ট যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। জানা গেছে, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে মোট ৫১টি ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই প্রক্রিয়াতেই একাধিক আবেদনকারী অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন।
উপজেলার ৪নং দুধল ইউনিয়নের আবেদনকারী মোঃ মফিজুল ইসলাম বলেন, আমি ব্যাংক স্বচ্ছলতার প্রত্যায়ণ জমা দিয়েই ফুড গ্রেইন লাইসেন্স সংগ্রহ করেছি। এটি সরকারি প্রক্রিয়ার একটি বাধ্যতামূলক অংশ, যা ছাড়া ফুড গ্রেইন লাইসেন্স ইস্যু হওয়ার সুযোগ নেই। তাছাড়া ডিলারশীপ পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছি। অথচ লটারী ড্র অনুষ্ঠানের দিন খাদ্য অফিস দাবি করছে যে, আমি ব্যাংক স্বচ্ছলতার প্রত্যায়নপত্র জমা দেইনি। যে কাগজটি জমা দিয়েছি সেটি ব্যাংকের প্রত্যায়ন নয়। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর। পুরানো ডিলার আওয়ামীলীগ নেতা শিপন আত্নগোপনে থেকে খাদ্য অফিসে নগদ ১ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে জনৈক রিয়াজের নামে ডিলারশীপ নিতেই এরকমটা করেছে রুবিনা পারভীন।
তিনি বলেন, সবচেয়ে বিস্ময়কর বিষয় হলো উপজেলা খাদ্য অফিস আমাদের যে অঙ্গীকারনামা দিয়েছে, আমরা সেই অঙ্গীকারনামা অনুযায়ী কাগজপত্র জমা দিয়েছি। অথচ এখন তারা সেই তালিকাবদ্ধ শর্তই মানছে না।
তিনি আরও বলেন, এই অঙ্গীকারনামা আমাদের দেওয়া হয়েছিল একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে, যাতে আমরা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে আবেদন করি। অথচ এখন মনে হচ্ছে, আমাদের বিভ্রান্ত করার জন্যই ওই অঙ্গীকারনামা দিয়েছিল, যাতে পরবর্তীতে ইচ্ছামতো কাউকে বাদ দেওয়া যায়। প্রশ্ন হলো, তারা নিজেরা যে শর্ত তৈরি করেছে, সেই শর্ত নিজেরাই কেন মানছে না? এতে স্পষ্টভাবেই বোঝা যায়, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নেই এবং এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে। আমি নিয়োগ কমিটির সভাপতি উপজেলা অফিসারের কাছে এর সুষ্ঠু জবাব চাই এবং সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানাই।
উপজেলার ১৪ নং নিয়ামতি ইউনিয়নের আবেদনকারী নাছির আকন বলেন, পুরানো ডিলারশীপের অজুহাত আমার আবেদন বাতিল করা হয়েছে। আমি এ ব্যাপারে চ্যালেঞ্জও করেছি। তারা কোন কারন ছাড়াই বাতিল করেছে।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুবিনা পারভীন বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগের ২২১টি আবেদন জমা পড়েছে। ইউএনও রুমানা আফরোজকে সভাপতি করে ৫ সদস্য কমিটি গঠন করা হয়। তিনি বলেন, চূড়ান্ত যাচাই-বাছাই শেষে লটারী মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ৫১ জনকে মনোনীত করা হয়।
পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার তদারকি ও স্বচ্ছতার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ বলেন, শনিবার লটারির মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে খাদ্য বন্ধক কর্মসূচির ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র জমা দেয়ার পরেও কাউকে বাদ দেয়ার সুযোগ নেই। তারপরেও এরকম কোন অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।